ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

কক্সবাজারে সাবেক ক্রিকেটারদের মিলনমেলা

প্রকাশিত: ০৬:৫৫, ১ সেপ্টেম্বর ২০১৬

কক্সবাজারে সাবেক ক্রিকেটারদের মিলনমেলা

মিথুন আশরাফ, কক্সবাজার থেকে ॥ সাবেক ক্রিকেটারদের নিয়ে আজ শুরু হচ্ছে ‘মাস্টার্স ক্রিকেট কার্নিভ্যাল’। কার্নিভ্যালের ম্যাচগুলো হবে কক্সবাজারের শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে। স্টেডিয়ামের দুই মাঠেই খেলা হবে। কার্নিভ্যালের প্রথমদিনে দুটি, দ্বিতীয় দিনে চারটি ও তৃতীয় দিনে দুটি সেমিফাইনাল অনুষ্ঠিত হবে। এরপর ৬ সেপ্টেম্বর মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে হবে ফাইনাল খেলা। আজ উদ্বোধনী দিনে রাজশাহী-ঢাকা মেট্রো ও ঢাকা বিভাগ-চিটাগং মুখোমুখি হবে। এ কার্নিভ্যালে সাবেক ক্রিকেটারদের মিলনমেলাও ঘটবে। রকিবুল হাসান, মিনহাজুল আবেদীন নান্নু, নাঈমুর রহমান দুর্জয়, আকরাম খান, খালেদ মাহমুদ সুজন, খালেদ মাসুদ পাইলট, হাবিবুল বাশার সুমন, মোহাম্মদ রফিকরাও কার্নিভ্যালের জন্য রোমাঞ্চিত। এ কার্নিভ্যাল থেকে উদ্বৃত অর্থ দিয়ে দুস্থ ক্রিকেটারদের সহযোগিতা করা হবে। একটি তহবিলও গঠন করা হবে। যে তহবিল থেকে বাংলাদেশের ক্রিকেটে অবদান রাখা সংগঠন, আম্পায়ার ও সংবাদকর্মীদের সংবর্ধনাও দেয়া হবে। এমনকি দুস্থ মানুষের পাশেও দাঁড়ানোর চেষ্টা করা হবে। তবে এ কার্নিভ্যালে বৃষ্টির হানা পড়তে পারে। বুধবার সারাদিন কক্সবাজারে টানা বৃষ্টি হয়েছে। যদি বৃষ্টিতে একেবারেই ক্রিকেট খেলা না যায়, তাহলে শেষপর্যন্ত ফুটবল খেলে মিলনমেলা ঘটাবে সাবেক ক্রিকেটাররা। কার্নিভ্যালটির আয়োজনে থাকছে সাবেক ও বর্তমান ক্রিকেটারদের এক সুতোয় গাঁথাতে সম্প্রতি গড়ে তোলা ‘মাস্টার্স ক্রিকেটার্স অব বাংলাদেশ (এমসিবি)’। এ কার্নিভ্যালের স্পন্সর করছে ওয়ালটন। সহযোগী স্পন্সর হচ্ছে স্ক্যান সিমেন্ট। আর তাই কার্নিভ্যালের নাম দেয়া হয়েছে ‘ওয়ালটন মাস্টার্স ক্রিকেট কার্নিভ্যাল পাওয়ার্ড বাই স্ক্যান সিমেন্ট।’ কার্নিভ্যালে ৬ দল অংশ নেবে। থাকছে দুটি গ্রুপ। একেক গ্রুপে তিন করে দল থাকছে। দলগুলোর আবার আলাদা করে স্পন্সর আছে। সেই স্পন্সর প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে মিলিয়েই দলগুলোর নামকরণ করা হয়েছে। লঙ্কা বাংলা ‘অল স্টার্স মাস্টার্স’, ইস্পাহানি ‘চিটাগং মাস্টার্স’, জেবি গ্রুপ ‘ঢাকা বিভাগ মাস্টার্স’, কনফিডেন্স গ্রুপ ‘ঢাকা মেট্রো মাস্টার্স’, জেমকন গ্রুপ ‘খুলনা মাস্টার্স’ ও রেনেসাঁ ‘রাজশাহী মাস্টার্স’। প্রতি দলেই একজন করে মেন্টর (পরামর্শক) থাকছেন। ‘অল স্টার্স মাস্টার্স’ দলের নেতৃত্ব দেবেন সেলিম শাহেদ। তার সঙ্গে থাকছেন হাসিবুল হোসেন শান্ত, এহসানুল হক সেজান, জাভেদ ওমর বেলিম, মাহবুব আনাম, তালহা জুবায়েরদের মতো খেলোয়াড়রা। এই দলের মেন্টর হচ্ছেন রকিবুল হাসান। ‘চিটাগং মাস্টার্স’ এর অধিনায়ক হচ্ছেন আকরাম খান। দলটিতে আছেন মিনহাজুল আবেদীন নান্নু, এনামুল হক মনি, আফতাব আহমেদ, তারেক আজিজরা। এই দলের মেন্টর হচ্ছেন শফিকুল হক হীরা। ‘ঢাকা বিভাগ মাস্টার্স’ এর অধিনায়ক নাঈমুর রহমান দুর্জয়ের সঙ্গে সানোয়ার হোসেন, শাহরিয়ার হোসেন বিদ্যুৎ, মেহরাব হোসেন অপি, জালাল ইউনুসরা আছেন। এই দলটির মেন্টর আজহার হোসেন শান্টু। ‘ঢাকা মেট্রো মাস্টার্স’ এর নেতৃত্বে আছেন খালেদ মাহমুদ সুজন। সঙ্গে আছেন মোহাম্মদ রফিক, নাসির আহমেদ নাসুরা। মেন্টর হচ্ছেন এএসএম ফারুক। ‘খুলনা মাস্টার্স’ এর অধিনায়ক হাবিবুল বাশার সুমন। তার সঙ্গে মঞ্জুরুল ইসলাম, হাসানুজ্জামান ঝড়ু, মোহাম্মদ সেলিম, জামালউদ্দিন বাবুরা রয়েছেন। এই দলের মেন্টর ওমর খালিদ রুমি। আর ‘রাজশাহী মাস্টার্স’ এর নেতৃত্বে খালেদ মাসুদ পাইলটের সঙ্গে আলমগীর কবির, রফিকুল ইসলাম, হান্নান সরকার, জাহাঙ্গীর আলমরা আছেন। গ্রুপ পর্বে প্রতি ম্যাচ হবে ১৬ ওভারের। দুই গ্রুপের পয়েন্ট তালিকায় উপরে থাকা দুটি করে দল উঠবে সেমিফাইনাল। সেমিফাইনালের বিজয়ীরা খেলবে ফাইনাল। গত সপ্তাহে মঙ্গলবার ক্রিকেটারদের নিলামও হয়েছে। প্রতি দলের অধিনায়ক ও ওই অঞ্চলের চারজন করে ক্রিকেটারের দল নির্ধারণ করা হয় আগেই। বাকি ক্রিকেটারদের নিলামে বেছে নেয় দলগুলো। টুর্নামেন্টের আহ্বায়ক বাংলাদেশের সাবেক তিন অধিনায়ক আকরাম খান, খালেদ মাহমুদ সুজন ও খালেদ মাসুদ পাইলট। মাহমুদ জানালেন, ‘টুর্নামেন্টকে সত্যিকার অর্থেই একটি ক্রিকেট উৎসবে রূপ দিতে চাই।’ সঙ্গে যোগ করেন, ‘এমন অনেক সাবেক ক্রিকেটার আছে, যাদের সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ ছিল না। এমনকি ফোন নম্বরও ছিল না। এই টুর্নামেন্ট তাই একরকম একটি মিলন মেলা। সঙ্গে বর্তমান-সাবেক সংগঠক, আম্পায়ার, মিডিয়া মিলিয়ে কার্নিভ্যালের রূপ দিতে চাই আমরা। ইচ্ছে আছে প্রতিবছরই এই আয়োজন করার।’ আয়োজকরা জানালেন, টুর্নামেন্ট আয়োজন করে একটি তহবিল গঠন করা হবে, যেটি থেকে পরবর্তীতে সহায়তা করা হবে দুস্থ ক্রিকেটারদের। এছাড়া বাংলাদেশের ক্রিকেটে অবদান রাখা সংগঠন, আম্পায়ার ও সংবাদকর্মীদের সংবর্ধনা দেয়া হবে এই আয়োজনে। কিন্তু বৃষ্টিই কানির্ভালে বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে। আকরাম খান বললেন, ‘যদি বৃষ্টি হয়, চেষ্টা করব ৬ ওভার করেও যেন হয়। তা না হলেও যেন সুপার ওভার হয়। তাও যদি না হয়, তাহলে ফুটবল খেলব আমরা। তাও ক্রিকেটারদের মিলনমেলা ঘটাব।’
×