ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

যশোরে জলাবদ্ধ ভবদহ অঞ্চলে নিরাপদ পানির সঙ্কট

প্রকাশিত: ০৪:৩৬, ১ সেপ্টেম্বর ২০১৬

যশোরে জলাবদ্ধ ভবদহ অঞ্চলে নিরাপদ পানির সঙ্কট

স্টাফ রিপোর্টার, যশোর অফিস ॥ যশোরের জলাবদ্ধ ভবদহ অঞ্চলে নিরাপদ পানির মারাত্মক সঙ্কট দেখা দিয়েছে। মনিরামপুর, কেশবপুর ও অভয়নগরের দুই শতাধিক গ্রামের অধিকাংশ বাড়ি তিন সপ্তাহ ধরে পানির নিচে। কারও কারও ঘরের মধ্যে কোমর পানি। প্রায় সব নলকূপ পানিতে তলিয়ে গেছে। বাধ্য হয়ে তারা তলিয়ে যাওয়া নলকূপের পানিই পান করছেন। এদিকে ঘরে-বাইরে জমে থাকা পানি বর্তমানে কালচে রং ধারণ করেছে। যা গায়ে লাগলে চুলকাচ্ছে। দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা না নিলে ডায়রিয়া, চর্ম রোগসহ বিভিন্ন পানিবাহিত রোগ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা করছে দুর্গত এলাকার মানুষ। জেলা স্যানেটারি ইন্সপেক্ট শিশির কুমার বলেন, বর্তমানে পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট মজুদ নেই। জলাবদ্ধ হওয়ার আগে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের কাছে যে ট্যাবলেট মজুদ ছিল তা দিয়ে এখন পরিস্থিতি মোকাবেলা করা হচ্ছে। আমরা ঢাকায় চাহিদাপত্র পাঠিয়েছি। সরেজমিন মনিরামপুরের বাজুকুলটিয়া গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, চারদিকে শুধু পানি আর পানি। ওই গ্রামের কোথাও কোন মাটি দেখা যাচ্ছে না। সবার ঘরের মধ্যে পানি। গরু, ছাগল, হাস, মুরগি নিয়ে এই গ্রামের মানুষ আশ্রয় নিয়েছে নওয়াপাড়া-কালিবাড়ি সড়কের ওপর। অভয়নগর সিদ্ধিপাশা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও কুলটিয়া গ্রামের বাসিন্দা তাপস মল্লিক বলেন, দ্রুত এলাকায় পর্যাপ্ত পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট সরবরাহ করা দরকার। না হলে পানিবাহিত রোগ ছড়িয়ে পড়তে পারে। একই গ্রামের দুলালী বিশ্বাস ও প্রদ্যুৎ বিশ্বাস জানান, তিন সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। ইতোমধ্যে পানি পচা শুরু হয়েছে। পচা পানি গায়ে লাগলেই চুলকাচ্ছে। মনিরামপুরে বিকল্প ব্যবস্থায় পাঠদান প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা আসন্ন। তাই পরীক্ষার্থীদের কথা মাথায় নিয়ে যশোরের মনিরামপুরের বন্যাকবলিত এলাকায় বিকল্পভাবে চলছে পাঠদান। পার্শ¦বর্তী অভিভাবকের ভবনের খোলা ছাদে, প্রধান শিক্ষক, বিদ্যালয়ের সভাপতির বাড়িতে চলছে পাঠদান কার্যক্রম। সেখানে শিক্ষকরা উপস্থিত হয়ে সকল শিক্ষার্থীর জায়গা সংকুলান না হলেও শুধু প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষার্থীদের পাঠদান করে চলেছেন। শিক্ষার্থীদের বাড়ি-ঘর পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় উপজেলার বিভিন্ন আশ্রয় কেন্দ্র ও আত্মীয়দের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছে শিক্ষার্থীদের পরিবার। উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুল জব্বার বলেন, উপজেলার ২৬৬টি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ কিন্ডার গার্টেন, ব্র্যাক ও এনজিও থেকে ৬ হাজার ৮৫০ শিক্ষার্থী আগামী ২১ নবেম্বর থেকে পিএসসি পরীক্ষায় অংশ নিতে যাচ্ছে। এর মধ্যে ৫৭টি স্কুলে বন্যার পানি উঠায় পিএসসি পরীক্ষার্থীদের বিষয়টি মাথায় নিয়ে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে যতদূর সম্ভব বিকল্পভাবে ক্লাস চালিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
×