ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

বেশিহারে ওয়ার্ড সভা আয়োজন করা উচিৎ

প্রকাশিত: ০২:৫১, ৩১ আগস্ট ২০১৬

বেশিহারে ওয়ার্ড সভা আয়োজন করা উচিৎ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ইউনিয়ন পর্যায়ে আরও বেশিহারে ওয়ার্ড সভা আয়োজন করা উচিৎ, এক্ষেত্রে তরুণদের সম্পৃক্ত করতে হবে। সভা থেকে উঠে আসা প্রস্তাবগুলো উপজেলা ও জাতীয় পর্যায়ে অবহেলিত হয়, প্রাধান্য দেওয়া হয় না গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাবকেও। এমনকি আয়োজনের ক্ষেত্রে নেই পর্যাপ্ত অর্থের নিশ্চয়তা। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সভা আয়োজনে মানা হয় না আইনি প্রক্রিয়া, লিপিবদ্ধ করা হয় না কার্যবিবরণী। ফলে ওয়ার্ড সভাকে আরও বেশি কার্যকর করতে আইনি প্রক্রিয়া মানাসহ জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে। মঙ্গলবার রাজধানীর লেকশোর হোটেলে ‘ওয়ার্ড সভা অপারেশনাল গাইডলাইন’ শীর্ষক সেমিনারে বক্তরা এসব কথা বলেন। ব্রাক বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যোগে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থা এসডিসি’র অর্থায়নে সেমিনারটি অনুষ্ঠিত হয়। সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ব্রাক ইন্সটিটিউট অফ্ গর্ভন্যান্স এন্ড ডেভেলপমেন্টের (বিআইজিডি) গবেষক ড. শাহনেওয়াজ হোসেন। বিআইজিডি’র নির্বাহী পরিচালক ড. সুলতান হাফিজ রহমানের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য রাখেন ইউনিভার্সিটি অফ্ লিবারেল আর্টস্-এর সাধারণ শিক্ষা বিভাগের অধ্যাপক ড. সলিমুল্লাহ খান, স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-সচিব এরশাদুল হক, জাপানের আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থা (জাইকা)’র পরামর্শক আজিজুর রহমান সিদ্দিকী ও সুইজারল্যান্ডের সহযোগিতা সংস্থা হেলভিটাস সুইস ইন্টারকোপারেশন’র কান্ট্রি ডিরেক্টর ক্যাসপার গ্রোসেনবেচার। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে ড. শাহনেওয়াজ বলেন, বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ওয়ার্ড সভা আয়োজনের ক্ষেত্রে আইনি প্রক্রিয়া ও পদ্ধতি অনুসরণ করা হয় না, এমনকি লেখা হয় না কার্যবিবরণী। দেশের ইউনিয়ন পরিষদগুলো ওয়ার্ড সভা আয়োজনে আগ্রহী নয় এবং এতে জনগণের অংশগ্রহণও অতি অল্প। ওয়ার্ড সভা আয়োজনের ক্ষেত্রে তরুণদের সম্পৃক্ত করার পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, সভা আয়োজনের খবর ব্যাপকভাবে প্রচার, প্রস্তুতি সভার আয়োজন, কার্যবিবরণী লিপিবদ্ধকরণের নিশ্চয়তা থাকতে হবে। আলোচনায় অংশ নিয়ে অধ্যাপক ড. সলিমুল্লাহ খান বলেন, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য স্থানীয় সরকারের বিকল্প নেই। সরকার ওয়ার্ড সভার মাধ্যমে সাধারণ জনগণকে সব সময় কথা বলার সুযোগ দিচ্ছে। তবে আয়, সমাজ, লিঙ্গ ও গোত্রসহ নানা বৈষম্যের কারণে বিকেন্দ্রীকরণের সুফল পাওয়া যাচ্ছে না। এক্ষেত্রে শুধু কাঠামো সংস্কার করলেই হবে না; অর্থ প্রদানের নিশ্চয়তাও থাকতে হবে। জাইকা’র পরামর্শক আজিজুর রহমান সিদ্দিকী বলেন, ২০০০ সালের আগে ওয়ার্ড সভা খুব বেশি পরিচিত ছিল না। জনগণের মতামত নিয়ে বা জবাবদিহিতার বিষয়টি তেমনভাবে প্রচলিত ছিল না। ২০০০ সালে সিরাজগঞ্জে প্রথম ওয়ার্ড সভা করা হয়, তবে এর তেমন ফলাফল আসে নি। তিনি বলেন, স্থানীয় সরকারের কথা বলতে গেলেই রাজনীতির কথা আসবে। স্থানীয় সরকার রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান। ড. সুলতান হাফিজ রহমান বলেন, ওয়ার্ড সভার মাধ্যমে প্রতিনিধিত্বমূলক মানুষের চাহিদার প্রতিফলন ঘটাতে হবে। সাধারণ জনগণের কাছ থেকে ওঠে আসা প্রস্তাবকে প্রাধান্য দিতে হবে। স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-সচিব এরশাদুল হক বলেন, ইউনিয়ন পরিষদই সবচেয়ে বেশি শক্তিশালী হওয়া দরকার। ইউনিয়ন পরিষদের সেবা কার্যক্রম অনেক এগিয়ে গেছে। ডিজিটাল প্রযুক্তির ছোঁয়ায় অল্প সময়ে বহুসেবা পাওয়া যাচ্ছে। উন্মুক্ত আলোচনায় অংশ নিয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জের এক ইউপি সদস্য বলেন, ওয়ার্ড সভায় সুশৃঙ্খলতা আছে। তবে সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা অনেক সময় এতে অংশগ্রহণ করতে চান না। তাদের অংশগ্রহণ বৃদ্ধি করার ব্যবস্থা করতে হবে। রাজশাহী জেলার ইউপি সদস্য সাজ্জাদ হোসেন মুকুল বলেন, ওয়ার্ড সভা থেকে যে সুপারিশগুলো আসে তা বাস্তবায়নে সুযোগ একদম নেই। ফলে সাধারণ জনগণ ওয়ার্ড সভার প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে।
×