ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

বাড্ডায় ৪ খুনের মূল কিলারসহ গ্রেফতার ৬

প্রকাশিত: ০৬:৫৭, ২৯ আগস্ট ২০১৬

বাড্ডায় ৪ খুনের মূল কিলারসহ গ্রেফতার ৬

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ঝুট ব্যবসায় আধিপত্য বিস্তারের বিরোধের জের ধরেই রাজধানীর বাড্ডায় আদর্শনগর পানির পাম্পের কাছে শামসুদ্দিন মোল্লাসহ আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের চার নেতাকর্মীকে হত্যা করা হয়েছিল। আর এ চাঞ্চল্যকর চার হত্যার মূল কিলারসহ ৬ জনকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। রবিবার দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার ও কাউন্টার টেররিজম এ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটি) ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম এ তথ্য জানান। অতিরিক্ত কমিশনার মনিরুল ইসলাম জানান, গ্রেফতারকৃতরা হচ্ছেÑ মূল কিলার হারুনুর রশিদ জুয়েল (২৮) ও তার সহযোগী মোজাহিদুল ইসলাম (২১), সাফায়েত উল্লাহ ওরফে সোহাগ (২৬), রাহাত হোসেন কাব্য (১৮), ইকবাল আহম্মেদ রানা (২৩) এবং শাহ পরান হোসেন রাজু (২১)। উল্লেখ্য, গত বছরের ১৩ আগস্ট রাতে বাড্ডার লিংক রোডের আদর্শনগরের ওয়াসার পানির পাম্পের পাশে দুর্বৃত্তরা এলোপাতাড়ি গুলি ছুড়লে ক্ষমতাসীন দলের চার নেতাকর্মী গুলিবিদ্ধ হন। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় চারজনকে ইউনাইটেড হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে ৬ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সহসভাপতি শামসুদ্দিন মোল্লা (৫৩), উত্তর বাড্ডার একটি ক্লিনিকের ম্যানেজার ফিরোজ আহমেদ ওরফে মানিক (৪০) মারা যান। পরদিন সকালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঢাকা মহানগর উত্তর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহসাংস্কৃতিক সম্পাদক মাহবুবুর রহমান ওরফে গামা ও রিক্সা গ্যারেজের মালিক ওয়ার্ড যুবলীগ নেতা আব্দুস সালাম (৫৫) মারা যান। সর্বশেষ ওই ঘটনার তিন দিন পর ১৬ আগস্ট ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আবদুস সালাম মারা যান। ওই ঘটনার তিন দিন পর রাজধানীর ভাটারা ও বাড্ডা এলাকা থেকে ফারুক মিলন ও নূর মোহাম্মদ নামে দু’জনকে গ্রেফতার করে ডিবি। এ ঘটনায় মাহবুবের বাবা মতিউর রহমান ১৪ আগস্ট বাড্ডা থানায় ১০-১২ জন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন। চাঞ্চল্যকর চার হত্যা মামলার প্রধান কিলার জুয়েলসহ ছয় আসামিকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা (উত্তর) বিভাগ। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার ও কাউন্টার টেররিজম এ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটি) ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম সংবাদ সম্মেলনে জানান, শনিবার রাতভর বাড্ডা থানা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে বাড্ডা থানার আদর্শনগর এলাকায় চাঞ্চল্যকর চার হত্যা মামলার প্রধান কিলার জুয়েলসহ ছয় আসামিকে গ্রেফতার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত দুটি পিস্তল ও ৪ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়। হারুনুর রশিদ জুয়েল ফোর মার্ডারের নেপথ্যে পরিকল্পনাকারী। হত্যার নেপথ্য কারণ, হত্যাকাণ্ডে অংশগ্রহণকারীদের নাম ও হত্যাকাণ্ডের ঘটনার বর্ণনা দিয়েছে জুয়েল। হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত অস্ত্রসহ সার্বিক বিষয়ে তথ্য প্রদান ও তার সংশ্লিষ্টতা স্বীকার করে। জুয়েলের দেয়া তথ্যমতে, গুলশান ও বাড্ডা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে অংশগ্রহণকারী অন্য পাঁচ সহযোগীকে গ্রেফতার করা হয়। অতিরিক্ত কমিশনার মনিরুল জানান, মধ্যবাড্ডা আদর্শনগর এলাকার জলিলের মালিকানাধীন স্টার গার্মেন্টসের ঝুট ব্যবসার আধিপত্য বিস্তার নিয়ে এলাকার দুটি গ্রুপের মধ্যে বিরোধ বিদ্যমান ছিল। একপক্ষের নেতা বাউল সুমন মারা যাওয়ার পর অন্যপক্ষ গার্মেন্টসের ঝুট ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ নিতে গেলে বিরোধ পাকাপোক্ত হয়। পরে এই চার হত্যার ঘটনা ঘটে। অস্ত্র-গুলি উদ্ধারের ঘটনায় গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে বাড্ডা থানায় হত্যা মামলার পাশাপাশি অস্ত্র আইনে নিয়মিত মামলা রুজু করা হয়েছে বলেও জানান মনিরুল ইসলাম।
×