ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

চাপে পড়েই অবসরে যাচ্ছেন দিলশান!

প্রকাশিত: ০৬:৪২, ২৬ আগস্ট ২০১৬

চাপে পড়েই অবসরে যাচ্ছেন দিলশান!

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ তিন বছর আগেই টেস্ট ক্রিকেটকে বিদায় জানিয়েছেন। কিন্তু এরপরও দাপটের সঙ্গে ওয়ানডে ও টি২০ ফরমেটে রঙ্গিন পোশাকে খেলে যাচ্ছিলেন তিলকারতেœ দিলশান। শ্রীলঙ্কার এ ওপেনার দেশের পক্ষে চতুর্থ ক্রিকেটার হিসেবে ওয়ানডেতে ১০ হাজার রান করেছেন। কিন্তু সমসাময়িক সতীর্থদের সবাই (রঙ্গনা হেরাথ ব্যতীত) অবসরে চলে গেছেন বেশ আগেই। এখন লঙ্কান ক্রিকেট বোর্ড (এসএলসি) এবং খোদ অধিনায়ক এ্যাঞ্জেলো ম্যাথুসও চাইছেন দলে তরুণরা সুযোগ লাভ করুক। ইতোমধ্যে ৩৯ বছর বয়সী দিলশানের বিকল্পও তৈরি হয়ে গেছে। নির্বাচকরাও চাপে আছেন তরুণ উদীয়মানদের পারফর্মেন্স বিবেচনা করে দলে সুযোগ দিতে না পারার কারণে। তাই অবসরের সিদ্ধান্তটা নিয়েই নিলেন দিলশান। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে চলমান সিরিজের তৃতীয় ওয়ানডে খেলে ওয়ানডেকে এবং দুই ম্যাচ টি২০ সিরিজের প্রথম ম্যাচ পাল্লেকেলেতে খেলে ওই ফরমেটকেও বিদায় জানাবেন তিনি। ২০০৯ সাল থেকে ধারাবাহিকভাবে উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান হয়েছেন দিলশান। আর নিজেকে মেলে ধরে অন্যতম আস্থার প্রতীক হয়ে ওঠেন লঙ্কান দলের। ১৯৯৯ সালে অভিষেক হওয়া দিলশান ওপেনার হিসেবে যাত্রা শুরুর পর ৪ বার এক বছরে ১ হাজার রানের বেশি করেছেন। এমনকি ২০০৯ থেকে ২০১৫ পর্যন্ত কোন বছরেই তার ব্যাট থেকে ৮০০ রানের কম আসেনি। সনাথ জয়াসুরিয়া, কুমার সাঙ্গাকারা ও মাহেলা জয়াবর্ধনের পর তিনি চতুর্থ লঙ্কান ক্রিকেটার যার ওয়ানডেতে ১০ হাজার রান আছে। ২০১৩ সালের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত দিলশান ওয়ানডেতে ৪৯.১৮ গড়ে রান করেছেন। গত বছরটা তার ক্যারিয়ারের সবচেয়ে সফলতম বছর ছিল। ৫২.৪৭ গড়ে ১২০৭ রান করেছেন। গত ৬ বছর ধরে তিনি শ্রীলঙ্কার অন্যতম সেরা টি২০ খেলোয়াড়। তিন ফরমেটে সেঞ্চুরি করা গুটিকয়েক ব্যাটসম্যানদের মধ্যে দিলশান একজন। ২০০৯ টি২০ বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক দিলশান সেবার ছাড়াও শ্রীলঙ্কাকে ফাইনালে তুলেছেন আরও দু’বার। এর মধ্যে ২০১৪ টি২০ বিশ্বকাপ জয় করে লঙ্কানরা। বয়স ৩৯ হয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত শ্রীলঙ্কার সেরা ফিল্ডার দিলশান। তার অফস্পিনটাও দারুণ কার্যকরী হয়েছে দলের জন্য। ২০১৩ সালের শেষদিকে ৮৭ টেস্টে ৫৪৯২ রান করা দিলশান টেস্টকে বিদায় জানান। টেস্টে ৩৯ উইকেটও আছে তার। এখন পর্যন্ত ৩২৯ ওয়ানডে খেলে ১০ হাজার ২৪৮ রান করেছেন ৩৯.২৬ গড়ে। আছে ২২ সেঞ্চুরি ও ৪৭ ফিফটি। বোলিং করে নিয়েছেন ১০৬ উইকেট। ৭৮ টি২০ খেলে ২৮.৯৮ গড়ে ১ সেঞ্চুরি ও ১৩ হাফসেঞ্চুরিসহ করেছেন ১৮৮৪ রান। ধারাবাহিকভাবে দুর্দান্ত নৈপুণ্যের জন্য ২০১০ সালের মে মাসে তিন ফরমেটেই দলের নেতৃত্ব ভার পেয়েছিলেন। কিন্তু তার অধীনে লঙ্কানদের পারফর্মেন্স ছিল খুবই হতাশাজনক। সে কারণে ২০১২ সালের জানুয়ারিতে অধিনায়কত্ব হারান। এমন দুর্দান্ত ক্যারিয়ার, এরপরও তাকে অবসরে যেতে বাধ্য হতে হচ্ছে। কারণ এসএলসি নির্বাচকরা ও অধিনায়ক ম্যাথুস চাইছেন ২০১৯ বিশ্বকাপের জন্য এখন থেকেই সেভাবে দল গড়তে। আর দিলশানের জায়গা নেয়ার জন্য পুরোপুরিই নিজেদের সামর্থ্য ও যোগ্যতা প্রমাণ করেছেন কুসাল পেরেরা ও দানুস্কা গুনাতিলকা। আর আরেক তরুণ ধনঞ্জয়া ডি সিলভা ক্লাব ক্রিকেটে ওপেনিং করলেও জায়গায় অভাবে জাতীয় দলে খেলছেন ব্যাটিং অর্ডারে নিচের দিকে। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে চলমান সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচে ২২ ও ১০ করেছেন। সে সময় তাকে প্রধান নির্বাচক জয়সুরিয়ার সঙ্গে আলোচনা করতে দেখা গেছে। শেষ পর্যন্ত রবিবার ডাম্বুলায় অসিদের বিরুদ্ধে তৃতীয় ওয়ানডে খেলেই বিদায়ের সিদ্ধান্ত জানিয়েছেন দিলশান। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অবশ্য শেষ ম্যাচটি খেলবেন ৬ সেপ্টেম্বর। সেদিন অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে দুই ম্যাচের টি২০ সিরিজের প্রথম ম্যাচ।
×