ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

বাংলাদেশ মিয়ানমার ও ভারতে ৯ মাত্রার ভূমিকম্পের আশঙ্কা

প্রকাশিত: ০৫:৫৯, ২৫ আগস্ট ২০১৬

বাংলাদেশ মিয়ানমার ও ভারতে ৯ মাত্রার ভূমিকম্পের আশঙ্কা

জনকণ্ঠ ডেস্ক ॥ মাত্র ৩৩ ঘণ্টার ব্যবধানে ফের কেঁপে উঠল মিয়ানমার। একই সঙ্গে তীব্র ঝাঁকুনি খেল সংলগ্ন বাংলাদেশ এবং ভারতের পূর্ব অংশের কিছু অঞ্চলও। বাংলাদেশ সময় মঙ্গলবার সকাল ৮টা ১১ মিনিটে এবং বুধবার বিকেল ৪টা ৩৪ মিনিটে মিয়ানমারের প্রায় একই উৎপত্তিস্থল থেকে ভূমিকম্প দু’বার আঘাত হানে। মিয়ানমারে বুধবারের কাঁপুনি, যার ব্যাপক প্রভাব পড়েছে ঢাকা এবং কলকাতাসহ পূর্ব ভারতের বিভিন্ন অংশে। রিখ্টার স্কেলে এর মাত্রা ছিল ৬.৮। কলকাতা ২৪ জানায়, বিজ্ঞানীরা বিশ্বাস করেন, পৃথিবীর বৃহত্তম ব-দ্বীপটির নিচে যে দুটি টেকটোনিক প্লেট আছে এবং টেকটোনিক প্লেট দুটির মাঝে যে ফল্ট লাইন আছে তা থেকে তৈরি হওয়া ভূমিকম্পের ফলে ব্যাপক বন্যা ও নদীর গতিপথও পরিবর্তিত হয়ে যেতে পারে। এ অঞ্চলের বিপুলসংখ্যক মানুষকে এসব নদীর উপর নির্ভর করতে হয়। তাই গবেষকরা আশঙ্কা করছেন, যেহেতু বাংলাদেশ, মিয়ানমার ও ভারতের এই অঞ্চলে গত ৪০০ বছর ধরে শক্তি সঞ্চয় হচ্ছে ফলে তা যে কোন সময় রিখ্টার স্কেলে ৯ মাত্রার মতো শক্তিশালী একটি ভূমিকম্প তৈরি করতে পারে। সূত্র মতে, আসলে ভূতাত্ত্বিকভাবে ভারত যে অবস্থানে দাঁড়িয়ে আছে, সেখানে বড় ধরনের ভূমিকম্পের ঝুঁকি তৈরি হচ্ছে বলে গবেষকরা আগে থেকেই সতর্ক করে আসছেন। পাশাপাশি বাংলাদেশের ক্ষেত্রেও অনেক বেশি ভূমিকম্প ঝুঁকি থাকতে পারে বলে কিছুদিন আগেই আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে এক রিপোর্টে। গবেষকরা জানিয়েছেন, গতিশীল ভূতাত্ত্বিক প্লেট পরস্পরের ওপর চেপে বসতে থাকায় সেখানে শক্তিশালী ভূমিকম্পের শক্তি জমা হচ্ছে। গবেষক দলের প্রধান নিউইয়র্কের কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ববিদ মাইকেল স্টেকলার টমসন বলেন, ওই ধরনের ভূমিকম্প কবে ঘটতে পারে, সে পূর্বাভাস আরও গবেষণা না করে দেয়া সম্ভব নয়। ভারতের পূর্ব অংশ ও বাংলাদেশের যে অঞ্চল সম্ভাব্য সেই ভূমিকম্পের উপকেন্দ্র হতে পারে বলে বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, তার ১০০ কিলোমিটার ব্যাসের মধ্যে প্রায় ১৪ কোটি মানুষের বসবাস। ফলে এতে মারাত্মক ক্ষয়ক্ষতি হতে পারে। এর আওতায় পড়েছে কলকাতাও। ২০০৪ সালের সুনামি, ২০১১ সালে জাপানের ভূমিকম্প, ২০১১ সালে জাপানের ভূমিকম্পে একই রকম ভৌগোলিক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। কবে আসবে সে ব্যাপারে নিশ্চিত করে কিছু বলা না গেলেও ভূমিকম্প যে আসছে সেটা নিশ্চিত। ২০০৪ সালে যে ফল্ট লাইন তৈরি হয়েছিল, তার ফলে সৃষ্ট সুনামিতে ২ লাখ ৩০ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়। সেই একই ফল্ট লাইনে নতুন এই ভূমিকম্পের আশঙ্কা দখছেন বিজ্ঞানীরা। দশ বছরের তথ্য বিশ্লেষণ করে একটি কম্পিউটার মডেল তৈরির মাধ্যমে দেখা গিয়েছে, বাংলাদেশ ও ভারতের পূর্ব অংশের ভূ-তাত্ত্বিক প্লেট উত্তর-পূর্ব দিকে সরে গিয়ে মিয়ানমারের পশ্চিম অঞ্চলের ভূ-গাঠনিক প্লেটে চাপ সৃষ্টি করছে, যাতে সৃষ্টি হচ্ছে অস্থিরতা। সেই তথ্য বলছে, বাংলাদেশ ও ভারতের পূর্ব অংশের প্লেট মিয়ানমারের পশ্চিম অঞ্চলের প্লেটকে বছরে ৪৬ মিলিমিটার করে ঠেলছে।
×