ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

সংসদে তালা

পার্বতীপুরে বঙ্গবন্ধুকে কটাক্ষ করায় বিক্ষুব্ধরা মারমুখী

প্রকাশিত: ০৬:৩৩, ২২ আগস্ট ২০১৬

পার্বতীপুরে বঙ্গবন্ধুকে কটাক্ষ করায় বিক্ষুব্ধরা মারমুখী

শ.আ.ম হায়দার, পার্বতীপুর ॥ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ডারের বঙ্গবন্ধুকে কটাক্ষ এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমানের বিরুদ্ধে বিষোদ্গার করার ঘটনায় পার্বতীপুরের পরিস্থিতি এখন উত্তপ্ত। ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবসের আলোচনা অনুষ্ঠানে তার উস্কানিমূলক বক্তব্যে সাধারণ মুক্তিযোদ্ধারা পর্যন্ত মারমুখী হয়ে উঠেছে। সংসদের অর্থ আত্মসাত ও ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা বানানোর ঘটনা যোগ হয়ে আন্দোলনের মাত্রা আরও বিস্তৃত হয়েছে। মুক্তিযোদ্ধা সংসদের অর্থ কমান্ডার সেলিমউদ্দিনের নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধারা ইতোমধ্যে সংসদ কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছে। জংশন স্টেশনের পেছনে মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ পরিষদ কার্যালয়ও দখলে নিয়েছে বিক্ষুব্ধ মুক্তিযোদ্ধারা। হাইয়ের অপসারণ ও বিচারের দাবিতে শনিবার রাতে শহরে বিক্ষোভ হয়েছে। হাই অপসারণ না হওয়া পর্যন্ত বিক্ষোভ অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছে তারা। গণরোষ থেকে রেহাই পেতে ঘটনার পর কমান্ডার আঃ হাই ও ডেপুটি কমান্ডার সিদ্দিক হোসেন গাঢাকা দিয়েছেন। তদন্তে গোয়েন্দা টিম মাঠে নেমেছে। এনএসআই তদন্ত টিমের কর্মকর্তা জানান, বিষয়টি স্পর্শকাতর। সে কারণে গোপনীয়তা রক্ষা করে তদন্ত করা হচ্ছে। সাবেক কমান্ডার রিয়াজ মাহমুদ, মুক্তিযোদ্ধা শহীদুল ইসলাম, জহুরুল হক, আমিনুল ইসলাম, শাহাজাহানসহ অর্ধশত মুক্তিযোদ্ধা জানান, আঃ হাই প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা কি-না এ ব্যাপারে তাদের সন্দেহ। প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা স্বাধীনতার স্থপতিকে অস্বীকার করতে পারেন না। হয়ত তিনি মুক্তিযুদ্ধে গেছেন ভুল করে। তার দুর্নীতির ফিরিস্তি তুলে ধরে বলা হয়, ডেপুটি কমান্ডার সিদ্দিক হোসেনকে সঙ্গে নিয়ে তিনি সংসদের লক্ষাধিক টাকা আত্মসাত করেছেন। সংসদের ব্যাংক এ্যাকাউন্টে একটি টাকাও নেই। মুক্তিযোদ্ধা সংসদ অকার্যকর। বানানো হয়েছে মুক্তিযোদ্ধা তৈরির কারখানা। পার্বতীপুরে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার ছড়াছড়ি। এখানে বর্তমানে গেজেটভুক্ত ৬৭০ মুক্তিযোদ্ধার মধ্যে ২৭০ জনই ভুয়া। পলাশবাড়ী ইউনিয়নের হলদিবাড়ী গ্রামের একরামুল হক, (মু.বা.নং ০৩০৮০৮০১৬০, গেজেট ২৮৭২) ২৩ রাজাকার, চ-ীপুর ইউনিয়নের কালিকাবাড়ী গ্রামের মোঃ মিজানুর রহমান (এসএসসি সার্টিফিকেটে জন্ম তারিখ ৩০ মার্চ, ১৯৬৭, গেজেট ৩৫৩৫)-সহ ১০ শিশু-কিশোর ও ভারতে না গিয়েও ১৯ অমুক্তিযোদ্ধা মুক্তিযোদ্ধার তালিকাভুক্ত হয়েছে। ডেপুটি কমান্ডার মোঃ সিদ্দিক হোসেনসহ সাত যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধার ব্যাপারেও অনেক বিতর্ক। অভিযোগ রয়েছে, কমান্ডার ও ডেপুটি কমান্ডার লাখ লাখ টাকার বিনিময়ে তাদের তালিকাভুক্ত করেছেন। এমনিভাবে মুক্তিযোদ্ধার মর্যাদা ও ভাবমূর্তি ধুলোয় মিশিয়ে দেয়া হয়েছে। তাদের প্রশ্ন, দায়িত্বে থেকে তারা যেসব দুর্নীতি ও কার্যকলাপ করেছেন তার দায় কি তারা এড়াতে পারবেন? এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে। রবিবার দুপুরে কমান্ডার আঃ হাই ও ডেপুটি কমান্ডার সিদ্দিক হোসেন অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
×