ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

১৬ বছর পর অনশন ভাঙলেন ইরম শর্মিলা চিনু

প্রকাশিত: ০৫:২৯, ১০ আগস্ট ২০১৬

১৬ বছর পর অনশন ভাঙলেন ইরম শর্মিলা চিনু

জনকণ্ঠ ডেস্ক ॥ পৃথিবীর দীর্ঘতম অনশনের অবসান ঘটল। টানা ১৬ বছর পর মঙ্গলবার ভারতের মনিপুরের ইরম শর্মিলা চিনু তার অনশন ভেঙ্গেছেন। ৫ হাজার ৭শ’ ৫৭ দিন পর একফোটা মধু খেয়ে অনশন ভাঙেন ৪৪ বছর বয়সী মনিপুরের এই লৌহমানবী। এরপর আবেগজড়িত কণ্ঠে বলেন, আমি এই দিনগুলো ভুলব না। খবর এনডিটিভি, টাইমস অব ইন্ডিয়া ও আসাম ট্রিবিউন অবলম্বনে। মনিপুর রাজ্যে সেনাবাহিনীর বর্বরতার প্রতিবাদে এতদিন অনশনে ছিলেন চিনু। এরপর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে রাজনীতিতে নামার কথা বলেন তিনি। চিনু বলেন, আমার লড়াই থামেনি। রাজনীতির মাধ্যমে নিজের লক্ষ্যে পৌঁছাতে চাই। তিনি আরও বলেন, আজ আমি অনশন ভাঙলাম। আমাকে বলা হয়, মনিপুরের লৌহমানবী, আমি সেই নাম নিয়েই বাঁচতে চাই। মনিপুরে আগামী বছরের বিধানসভা নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে অংশ নিতে চান তিনি। হতে চান মনিপুরের মুখ্যমন্ত্রী। পাশাপাশি দীর্ঘদিনের কলমী বন্ধু ব্রিটিশ নাগরিক ডেসমন্ড কুটিনহোকে বিয়ে করে স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে চান। এই ব্রিটিশ নাগরিক বর্তমানে গোয়ায় বাস করছেন। বিয়ের সিদ্ধান্ত বিষয়ে উপস্থিত এক মহিলা সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে ইরম শর্মিলা বলেন, এটা স্বাভাবিক ঘটনা। রাজনীতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সবাই বলে রাজনীতি নোংরা। তবে আমি বলব সমাজের জন্য এটা দরকার। তার রাজনীতিতে নামার সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে ভারতের বর্তমান ক্ষমতাসীন দল বিজেপি ও বিরোধী কংগ্রেস। অবশ্য এর আগে আম আদমি পার্টির নেতা অরবিন্দ কেজরিওয়াল ইরম শর্মিলার সঙ্গে দেখা করে তার দলে যোগ দেয়ার অনুরোধ জানালে তিনি তা প্রত্যাখ্যান করেন। ২০০০ সালে ১ নবেম্বর শুরু হয় এই অনশন। এর দুদিনের মাথায় তাকে গ্রেফতার করা হয়। কিছুদিন পরে শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে সরকারের নির্দেশে নাকে নল ঢুকিয়ে শর্মিলাকে তরল খাবার দেয়া শুরু হয়। ১৪ বছর একটি সরকারী হাসপাতালে আটকে রেখে ওইভাবে তাকে খাবার নিতে বাধ্য করা হয়। ২০১৪ সালে আদালত তার নাকের নল খুলে ফেলার নির্দেশ দেয়। অনশনরত অবস্থায় ১৫ দিন পর পর আদালতে হাজিরা দিতে হয়েছে তাকে। গত মাসের শেষ দিকে আদালতে হাজির হয়ে ৯ আগস্ট অনশন ভাঙার ইচ্ছার কথা জানান তিনি। সেই সঙ্গে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে বিয়ে করার এবং রাজনীতিতে যোগ দেয়ার ইচ্ছার কথাী বলেন চিনু। গত ১৬ বছরে শর্মিলার অনশনকে ঘিরে মনিপুরে মানবাধিকার আন্দোলন জোরালো হয়েছে। কিন্তু এর মধ্যে বহুবার সরকার বদল হলেও সেনাবাহিনীর ওই বিশেষ ক্ষমতা আইন তুলে নেয়া হয়নি।
×