ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

কলাপাড়ায় বাঁধ ধসে জলাবদ্ধতা

দুই হাজার পরিবার পানিবন্দী

প্রকাশিত: ০৩:৫৩, ৮ আগস্ট ২০১৬

দুই হাজার পরিবার পানিবন্দী

নিজস্ব সংবাদদাতা, কলাপাড়া, ৭ আগস্ট ॥ সাগর মোহনা ঘেঁষা আন্ধারমানিক নদীর তা-বে বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে জোয়ারের পানিতে মহিপুর ইউনিয়নের চারটি গ্রামের অন্তত দুই হাজার পরিবারের এখন মরণদশা। নিজামপুর, ইউসুফপুর, পুরান মহিপুর ও সুধিরপুর গ্রামের এসব মানুষের দুর্দশা চোখে দেখা যায় না। তিন মাস আগে নিজামপুর গ্রাম সংলগ্ন বেড়িবাঁধ নদীতে বিলীন হয়ে যায়। এ বাঁধটি গত বছর মেরামত করা হয়েছিল। যেনতেনভাবে মেরামত করায় বাঁধটি ভেঙ্গে গেছে বলে এলাকার মানুষের অভিযোগ। এরপর থেকে মাসের ১৫ দিন জোয়ারের দুই দফা প্লাবনে ভাসছে চারটি গ্রাম। বর্তমানে মাসাধিককাল পানি আর নামছে না। অস্বাভাবিক জোয়ারে হুহু করে পানি জনপদে প্রবেশ করছে। মানুষের বাড়িঘর, পুকুর, রাস্তা থেকে শুরু করে ল্যাট্রিন পর্যন্ত ডুবে গেছে। পানির তোড়ে গ্রামের মাঝখান দিয়ে চলাচলের পাকা রাস্তাটি ভেঙ্গে একাকার হয়ে গেছে। স্থানীয়রা মাটি বোঝাই করে প্লাস্টিক বস্তা রাস্তার পাশে দিয়ে পানির প্লাবন ঠেকানোর চেষ্টা করে যাচ্ছে। অবস্থা এমন হয়েছে যে রান্নার চাল-চুলা পর্যন্ত ভেসে গেছে। চৌকির উপরে ইট দিয়ে রান্না করতে হয়। পায়খানা-প্রস্রাব করতে পারছে না। মানবিক বিপর্যয় শুরু হয়েছে। খাবার-রান্না ও গোসলের পানির তীব্র সঙ্কট দেখা দিয়েছে। গবাদিপশু, হাঁস-মুরগি পালন করতে পারছে না। একটি মাত্র ফসল নির্ভর এসব কৃষক পরিবার আমন আবাদ তো দূরের কথা বীজতলা পর্যন্ত করতে পারছেন না। একদফা বীজতলা করার পর তা পচে গেছে। নিজামপুর গ্রামের মানুষকে এখন চলাচল করতে হচ্ছে নৌকায় চেপে। সরেজমিনে দেখা গেছে, সর্বত্র পানি আর পানি। অভ্যন্তরীণ রাস্তাঘাট সব ভেঙ্গে একাকার হয়ে গেছে। কোনমতে এক বেলা রান্না করে তিন বেলা খেতে হচ্ছে স্থানীয়দের। অন্তত দুই হাজার পরিবার এমন দুর্দশায় পড়েছে। স্কুলে যাওয়া বন্ধ হয়ে গেছে অন্তত তিনশ’ শিশুর। স্কুলে যাওয়ার রাস্তাসহ সব পানিতে ডুবে আছে।
×