ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

মিলু শামস

প্যারিস র্তু আর মার্সেই

প্রকাশিত: ০৩:৫২, ২৭ জুলাই ২০১৬

প্যারিস র্তু আর মার্সেই

শার্ল দ্য গল এয়ারপোর্ট থেকে আলিয়ঁস হোটেল ট্যাক্সিতে আধ ঘণ্টার পথ। তবে তা কাগজে কলমে। ট্রাফিক জ্যামে আটকে আধ ঘণ্টা যখন দেড় ঘণ্টা ছুঁই ছুঁই তখন অনিবার্যভাবে ঢাকার রাস্তার কথা মনে পড়ে। প্যারিসে এই এক বিরক্তিকর অনুভূতি। শহরে ঢোকা এবং বেরোনোর পথে ঢাকার রাস্তার মতো জ্যাম। গতবার জুরিখ থেকে প্যারিসে ঢুকেছিলাম। মাইক্রোবাসে ছয়শ’ কিলোমিটারের মতো পথ নির্বিঘেœ পেরিয়ে প্যারিসে ঢোকার মুখে থেমে থেমে জ্যাম। আর ফেরার পথে এয়ারপোর্টের পুরো রাস্তাই প্যাক্ড। ফ্লাইট মিস হয় হয় অবস্থা। সেনজেন ভিসায় কয়েকটি দেশ ঘুরেছিলাম। কোথাও এমন অভিজ্ঞতা হয়নি। এবার ট্রেনে প্যারিস ছাড়ার সময়ও এমন অভিজ্ঞতা হয়েছে। তবে এয়ারপোর্টের রাস্তার তুলনায় তা সামান্য। প্যারিস থেকে আমরা যাব তুরেন প্রদেশের র্তু নামে এক গ্রামে। সেখানে লোয়ার নদীর পাড়ে প্রাচীন অনেক দুর্গ ও প্রাসাদ আছে। সকালে গিয়ে সন্ধ্যায় ফেরা যায়। ট্রেন ছিল দশটা পনেরোয়। বেরোতে খানিক দেরি হয়েছিল তবু সময়মতো পৌঁছানো যেত, যদি রাস্তায় জ্যাম না থাকত। স্টেশনে যখন পৌঁছাই ঘড়িতে তখন দশটা ছাব্বিশ। সুতরাং যাত্রী আসিবার পূর্বেই...। ফ্রান্স এবং ইতালিতে আমাদের সব ট্রেন যাত্রা এবং সব শহরের হোটেল বুিকং ঢাকা থেকেই করে গিয়েছি। যাতে ওখানে পৌঁছে খোঁজাখুঁজির ঝামেলা করতে না হয়। তাতে সময় এবং বেড়ানোর আনন্দ দুই-ই নষ্ট। সব জায়গাতেই প্লেন বা ট্রেন থেকে নেমে টেক্সিতে সোজা হোটেল, তারপর সামান্য বিশ্রাম নিয়ে ফ্রেশ হয়ে শহর দেখতে বেরোনো, কোন টেনশন নেই। ঘুরতে ঘুরতে কোথাও খেয়ে নেয়া। আর শহরের সবখানে নির্দিষ্ট দূরত্বে আছে ডব্লিউ সি। অর্থাৎ ওয়াশ এ্যান্ড ক্লিন। মিউজিয়াম আর আর্ট গ্যালারিতে তো থাকবেই। কোথাও কোথাও অবশ্য ডব্লিউ সিতে ঢুকতে আশি সেন্ট বা এক ইউরো লাগে। তবে প্রকৃতির অমোঘ ডাকের কাছে এক ইউরো অনেক সময় তুচ্ছ। খাওয়ার পানির জন্যও টাকা খরচ করার দরকার নেই। ইউরোপের যতগুলো দেশ ঘুরেছি সবখানে সাপ্লাইয়ের পানি পানযোগ্য। সঙ্গে পানির খালি বোতল থাকলেই হলো। প্রয়োজনে যে কোন জায়গা থেকে ভরে নেয়া যায়। রোমে তো কিছু দূর পর পর পথিকের তৃষ্ণা মেটাতে রাস্তার পাশে পানির কল বসানো। এ শহরে অনেক পর্যটক। হয়ত তাদের কথা ভেবেই এ ব্যবস্থা। ওসবদেশে যাওয়ার আগে থাকা এবং দূরপথে পরিবহনের ঝঞ্ঝাট মেটানো থাকলে আর কোন ভাবনা নেই। ঘোরো দেখো আর নিজেকে সমৃদ্ধ কর। যাহোক, আমাদের টিকেটে ইউরো রেল-পাস থাকায় পরের ট্রেনে রিজার্ভেশন পেয়েছি। আধ ঘণ্টা পর পর ট্রেন সুতরাং সময়ও বেশি নষ্ট হয়নি। অপূর্ব সুন্দর এক গ্রামের নাম র্তু। ট্রেন থেকে নেমে বিখ্যাত ‘শাতল দ্য শানন্সো’ প্রাসাদের দিকে পা বাড়াতেই সবুজ স্নিগ্ধতায় মন ভরে যায়। পরিচর্যিত নয় প্রাকৃতিকভাবে বেড়ে ওঠা বিশাল এক গাছ ডালপালা ছড়িয়ে মাথার ওপর ছায়া দিচ্ছে। সেদিন ছিল রবিবার। রোদ ঝলমলে চমৎকার আবহাওয়া। গাছপালার মধ্যেই পার্কিং। কমপক্ষে দু’শ’ গাড়ি পার্কিংয়ে। সবাই শানন্সো দেখতে এসেছে। সত্যি দেখার মতোই। লোয়ার নদীর এপাড় ওপাড় জুড়ে এর স্ট্রাকচার। অভিনব স্থাপত্যশৈলী। নদীর এপাড়ে সদর দরজা দিয়ে ঢুকে পেছনের দরজা দিয়ে বেরোলে দেখা যাবে ওপাড়ে পৌঁছে গেছি। এখন যদিও পেছনের দরজা বন্ধ। নিচে বয়ে যাওয়া নদীতে নৌকা, ছোট জাহাজ ইত্যাদি জলযান চলাচল করে। যেমন নদীর ওপর ব্রিজের নিচ দিয়ে চলে। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় প্রাসাদের দোতলার বিশাল লম্বা করিডর যুদ্ধাহতদের হাসপাতাল হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে। ওখানে তাই লেখা রয়েছে। তিন তলা ভবন। নিচ তলাটা আন্ডারগ্রাউন্ডের মতো। সিঁড়ি দিয়ে নিচে নামতে হয়। সেখানে বিশাল এক কিচেন। কিচেনের আকার এবং এক্সেসরিজ দেখে মনে হয় এখানে যারা বাস করত তারা খেতে খুব ভালবাসত। এ প্রাসাদের ইতিহাস নাকি পাঁচ সাত শ’ বছরের। কয়েকবার হাতবদল হয়েছে। শুরুতে এটা ছিল ছোটখাটো এক দুর্গ। তা বোঝা যায় প্রাসাদের সামনের পরিখা দেখে। সংস্কার ও পরিবর্ধিত হয়েছে কয়েকবার। তুরে এসে মনে হলো ফ্রান্সে শহর আর গ্রামের মধ্যে তেমন পার্থক্য নেই। গ্রামের বাড়িগুলোর গঠন একটু অন্যরকম। বিস্তৃত মাঠ। রেল লাইনের পাশে আঙুর, সব্জি বা ফসলের ক্ষেত। বেশি বেশি গাছ ইত্যাদি ছাড়া তেমন পার্থক্য করা যায় না। অবশ্য শহরের যা বৈশিষ্ট্য বড় বড় শপিংমল, বহুতল আবাসিক এ্যাপার্টমেন্ট, বড় ফুডশপ ইত্যাদি গ্রামে থাকবে নাÑ তা বলা বাহুল্য। গ্রামেও আছে ডব্লিউ সি। সাপ্লাই ওয়াটার। পাকা রাস্তা তো অবশ্যই। অর্থাৎ মৌলিক প্রয়োজনগুলো শহরের মতো গ্রামেও নিশ্চিত করা হয়েছে। গ্রামে গরিব মানুষ চোখে পড়েনি। অবশ্য অত অল্প সময়ে চোখে পড়ার কথাও না। প্যারিসে দেখেছি। হাত পেতে ভিক্ষা চাইছে এমন ভিখিরি যেমন আছে তেমনি ভদ্রস্থ ভিখিরিও আছে। তারা রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে কোন একটা মিউজিক্যাল ইন্সট্রুমেন্ট বাজায়, লোকে দয়া করে সেন্ট-ইউরো দেয়। কেউ জোকার ধরনের পোশাক পরে ফুটপাতে শুয়ে থেকে অনুচ্চারিত ভিক্ষা চায়। সরাসরি হাত পাতা ভিক্ষুক বেশি দেখা যায় নতর দেম এর আশপাশে। ধর্মশালার সঙ্গে ভিক্ষার সম্পর্ক সম্ভবত সবদেশেই আছে। আমরা যখন নতর দেম-এ ঢুকি ভেতরে তখন প্রার্থনা চলছে। সম্মিলিত গানের সঙ্গে প্রার্থনা সভা পরিচালনা করছেন ফাদার। মনে পড়ে, ভুটানে এক বৌদ্ধ মন্দিরের প্রার্থনা সভায়ও লম্বা এক বাদ্যযন্ত্রের সঙ্গে গম্ভীর কিন্তু সুরেলা স্বরের সম্মিলন আমাদের আচ্ছন্ন করেছিল। বৌদ্ধ ধর্ম সঙ্গীত স্নিগ্ধ, শান্ত। তুলনায় চার্চেরটা উচ্চকিত। নতর দেম শব্দের ইংরেজী অর্থ আওয়ার লেডি। অর্থাৎ ভার্জিন মেরি। এ কথা গতবার গাইড মার্গারিটা জানিয়েছিল। গতবার কনফারেন্স উপলক্ষে একটি টিমের সঙ্গে ছিলাম বলে সার্বক্ষণিক মাইক্রোবাস এবং একজন গাইড ছিল। চেক বংশোদ্ভূত মার্গারিটা সম্ভবত খুব ধর্মপরায়ন ছিল। সুযোগ পেলেই সে ক্যাথিড্রাল আর চার্চে ঢুকে পড়ত। চার্চ দেখতে দেখতে শেষে ক্লান্ত হয়ে পড়েছিল টিমের অনেকে। নত দেম এর সামনে আসতেই সবাই একযোগে বলে ওঠে ‘আর চার্চ নয় এবার মার্কেটে যাব।’ টিমে থাকলে দশের ইচ্ছা মানতেই হয়। তাই সেবার নতর দেম দেখা হয়নি। ভিড়ভাট্টা সামলে মার্গারিটা আমাদের আইফেল টাওয়ার আর ল্যুভঁ মিউজিয়াম দেখিয়েছিল। সম্ভবত কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আগে থেকে কথা বলে রেখেছিল। নইলে লম্বা লাইন পাড়ি না দিয়ে অত সহজে দুটোর কোনটাতেই ঢোকা যেত না। আঠারশ’ উননব্বই সালে ইঞ্জিনিয়ার আলেক্সান্দর গুস্তভ আইফেলের নামে নামকরণ করা এ টাওয়ার নির্মাণের শুরুতে প্যারিসের প্রতিনিধিত্বশীল শিল্পী ও বুদ্ধিজীবীদের একটি অংশ চরম বিরোধিতা করেছিল। এর ‘কিম্ভুত দর্শন’ ডিজাইনের জন্য। এখন এটা ফ্রান্সের গ্লোবাল কালচারাল আইকন। দর্শনীর বিনিময়ে পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি দর্শক সমাগম মনুমেন্ট। উচ্চতা তিনশ’ চব্বিশ মিটার। এক পাশের বেড় একশ’ পঁচিশ মিটার। টপে উঠলে হাত পা ঝিম ঝিম করে ভয়ে আর উত্তেজনায়। এত উঁচু! গোটা প্যারিস শহরই যেন এখান থেকে দেখা যায়। একাশি তলা ভবনের সমান। গ্রাউন্ড থেকে এক লিফটে টপে ওঠা যায় না। দু’বার লিফট বদলাতে হয়। মাঝে থেমে রেস্তোরাঁয় খেয়েও নেয়া যায়। প্রথম দুই লেভেলে খাবারের দোকান আর রেস্তোরাঁ। ল্যুভঁ তো এক সমুদ্র। পৃথিবীর বৃহত্তম জাদুঘরগুলোর একটি। ষাট হাজার ছয়শ’ স্কয়ার মিটার আয়তনের এ জাদুঘরে প্রাগৈতিহাসিক যুগ থেকে একুশ শতক পর্যন্ত পঁয়ত্রিশ হাজার জিনিস (ঙনলবপঃং) রয়েছে। একদিন দুদিনে এ মিউজিয়াম দেখা সম্ভব নয়। মিউজিয়াম দেখা তো ঢুকলাম, চক্কর দিলাম, বেরিয়ে এলাম নয়, পুরোটা ঘুরে দেখতে তাই কয়েক দিন লাগবে। আমরা লিওনার্দো দ্য ভিঞ্চির মোনালিসার মূল পেইন্টিংটা দেখেছি। এখানেই সবচেয়ে বেশি ভিড়। শিল্পী দেলাক্রয়িক্সের আঁকা ফরাসী বিপ্লবের প্রতীক পতাকা হাতে এগিয়ে চলা নারীর সেই বিখ্যাত পেইন্টিংয়ের মূলটাও দেখেছি। দ্য ভিঞ্চির আরেক বিখ্যাত ‘লাস্ট সাপারসহ’ আরও অনেক বিখ্যাত শিল্পীর আঁকা মূল ছবি দেখেছি। আর গ্রিক ও রোমান যুগের ভাস্কর্য। এর বেশি দেখা সম্ভব হয়নি। তবে যে ছবিগুলোর উল্লেখ করলাম এর কাগুজে প্রিন্টের সঙ্গে পরিচয় থাকলেও শিল্পীর নিজ হাতে আঁকা মূল ছবি দেখতে পারা নিঃসন্দেহে সৌভাগ্যের ব্যাপার। ফ্রান্সের আরেক প্রদেশ প্রোভঁসের বন্দর শহর মার্সেই। নিস্ এর মতো। ভূমধ্য সাগরের তীর ঘেঁষা এ শহর সাজানো হয়েছে অনেক যতেœ। সৈকতে যেদিন আমরা যাই সেদিনের আবহাওয়াও খুব ভাল ছিল। গোটা দিন রোদ ঝলমলে। সামারের আবহাওয়া প্যারিসে খুব গোলমেলে। দিনের শুরু হলো হয়ত উজ্জ্বল সূর্যের আলোয়- কিছুক্ষণ পর হঠাৎ বৃষ্টি, সেই সঙ্গে শীত। আবার রোদ আবার বৃষ্টি। সঙ্গে ছাতা বা রেইন কোট আর হাল্কা গরম কাপড় না থাকলে বিপদ। অপূর্ব টলটলে পানি ভূমধ্য সাগরের। নীলচে সবুজাভ। ঝাঁকে ঝাঁকে মাছ ভেসে বেড়াচ্ছে সৈকত ঘেঁষে। এ সমুদ্রে নাকি গর্জে ওঠা উত্তাল ঢেউ ওঠে না। হয়ত সে জন্য মা বাবা নিশ্চিন্তে সানবার্ণ করছে আর তিন চার বছরের শিশুরা পানিতে নেমে তাদের খেলনা নিয়ে খেলছে। ভূমধ্য সাগরের পাড়ে দাঁড়িয়ে অদ্ভুত অনুভূতি হয়। সত্যিই ভূমধ্য সাগরের পানিতে দাঁড়িয়ে আছি। ছোট বেলা ভূগোল বইয়ে পড়া সেই ভূমধ্য সাগর! উত্তর গোলার্ধের ক্ষুদ্র এক মানুষ আমি। ভূগোল বইয়ের বাইরে ভূমধ্য সাগর আমার চোখের সামনে! কত ইতিহাস রচিত হয়েছে এই সাগর ঘিরে। এশিয়া আফ্রিকা আর ইউরোপের মাঝ দিয়ে বয়ে যাওয়া এ সমুদ্র মানব সভ্যতার অনেক ওঠানামার সাক্ষী। এই ভূমধ্য সাগর পাড়ি দিয়ে যুদ্ধ বিধ্বস্ত ইরাক লিবিয়া সিরিয়া থেকে কি অমানবিকভাবে মানুষ পাড়ি জমাচ্ছে গ্রীস স্পেন ইতালিসহ ইউরোপের নানা দেশে। এ নিয়ে কত কা-! সাম্প্রতিক অভিবাসী স্রোতে এশিয়া থেকে যে দশ লাখ মানুষ ইউরোপে পৌঁছেছে তাদের মধ্যে আট লাখকে আশ্রয় দিয়েছে জার্মানি। ইংল্যান্ড পঁচিশ হাজার আর ফ্রান্স বিশ হাজার। এটা মনে করার কারণ নেই যে তারা ভালবেসে আদর করে এদের জায়গা দিয়েছে। যেটুকু করেছে তা নিজেদের প্রয়োজনে। ওসব দেশে শ্রমের মূল্য অনেক। নিজ দেশের মানুষদের কাছ থেকে সস্তায় শ্রম পাওয়া অসম্ভব। যা সহজে সম্ভব অভিবাসীদের কাছ থেকে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রথম সারির দেশগুলোও এক সময় অভিবাসী হয়ে এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় ঘুরে বেড়িয়েছে আশ্রয়ের খোঁজে। রোমান সাম্রাজ্যের পতনের পর অন্ধকারাচ্ছন্ন পাঁচ শ’ বছরে ইউরোপের যেসব উপজাতি অভিবাসী হিসেবে আশ্রয় খুঁজেছে তাদের একটি ফ্রাঙ্ক উপজাতি। নানা জায়গা ঘুড়ে তারা ফ্রান্সে এসে থিতু হয়েছিল। তাদের নামেই হয়তো দেশের নাম হয়েছে ফ্রান্স। ইংল্যান্ডে থিতু হয়েছিল এ্যাংলো স্যাক্সনরা। চৌদ্দ ও পনেরো শতক থেকে ইউরোপে যে আধুনিক সভ্যতার শুরু তার ধারাও রয়েছে ভূমধ্য সাগরের ওপর দিয়ে। এশিয়া মহাদেশের ভারত, চীন ও আরব দেশগুলো থেকে ব্যবসার নানা উপকরণ এসেছে এই ভূমধ্য সাগর হয়েই। এগারো বারো শতকে ইউরোপে ব্যবসা-বাণিজ্যের অগ্রগতির সূচনা এশিয়া থেকে যাওয়া উপকরণের ওপর ভিত্তি করে। ভূমধ্য সাগরে সূর্যাস্ত দেখার সুযোগ হয়নি। তা হয়েছিল মার্সেই এর হারবারে। যেন শহরের মধ্যেই বিশাল জলাশয়। এক দিকে সার বাঁধা স্পিডবোট অন্যদিকে বাড়ি ঘর স্থাপনার সারি। হারবারের পাড় দিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা হাঁটা যায় ক্লান্তিহীন মুগ্ধতায়। আমাদের ফ্রান্স ভ্রমণ শেষ হয় এখানেই। মার্সেই এয়ার পোর্ট থেকে এরপর রোমে উড়ান।
×