ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

তিন বিমানবন্দরে একযোগে তল্লাশি

প্রকাশিত: ০৫:৩০, ২৪ জুলাই ২০১৬

তিন বিমানবন্দরে একযোগে তল্লাশি

স্টাফ রিপোর্টার ॥ অপারেশন আইরিনের শেষ দিনে দেশের তিনটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে একযোগে তল্লাশি চালানো হয়েছে। আন্তর্জাতিক পরিম-লে নাশকতামূলক কর্মকা-ের জন্য অবৈধ অস্ত্র, গোলাবারুদ, বিস্ফোরক ও মাদক পাচার রোধে এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের ৩৩টি দেশে দুই সপ্তাহ ধরে চলে এ অভিযান। শনিবার ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, সিলেটের ওসমানি বিমানবন্দর ও চট্টগ্রামের শাহ আমানত বিমানবন্দরে এ অভিযান পরিচালনা করা হয়। এতে তেমন কিছু পাওয়া না গেলেও বিমানবন্দরের নিরাপত্তায় ব্যাপক পরিবর্তন চোখে পড়ে। শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতরের নেতৃত্বে র‌্যাব-বিজিবি ও পুলিশের যৌথ এ অভিযান চলার সময় সাধারণ যাত্রীদের লাগেজ ও ব্যাগেজ তল্লাশি করা হয়। দু’সপ্তাহব্যাপী এ অভিযানের শুরুতে কার্গো হাউস, গ্রীন চ্যানেল ও কাস্টমস পয়েন্টে চেক করা হলেও শনিবার যাত্রী লাউঞ্জে যাত্রীদের ব্যাগেজ অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে পরীক্ষার আওতায় আনা হয়। গত ৮ জুলাই থেকে রাইলো এপি-এর উদ্যোগে শুরু হওয়া এ অভিযানে অস্ত্র গোলাবারুদ ও বিস্ফোরক দ্রব্য ধরা না পড়লেও বেশ কিছু পরিমাণ আমদানি নিষিদ্ধ পণ্য জব্দ করা হয়। রাতে এ রিপোর্ট লেখার সময় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো হাউসে ডগ স্কোয়াড দিয়ে তল্লাশি চালানো হয়। এর আগে বিকেলে গ্রীন চ্যানেলে যাত্রীদের লাগেজ তল্লাশি চালানো হয় বলে জানান উপ-পরিচালক শরীফ। এ বিষয়ে মহাপরিচালক ডক্টর মইনুল খান বলেন, সন্ত্রাসবাদে ব্যবহৃত হাল্কা অস্ত্র, বিস্ফোরক ও মাদকের চোরাচালান ঠেকানোই এই অভিযানের মূল উদ্দেশ্য। এতে এসব দ্রব্য না পাওয়া গেলেও জঙ্গীদের বিমানবন্দর ভিত্তিক অপরাধ কাজে নিরুৎসাহিত করবে। এদিকে আমাদের সিলেট অফিস জানিয়েছে, ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ব্যবহারের মাধ্যমে জঙ্গী তৎপরতার প্রমাণ পাওয়া যায়নি। শনিবার দিনভর ওসমানী বিমানবন্দরে অভিযান চালিয়ে গোয়েন্দারা নিশ্চিত হন সিলেটের বিমানবন্দর ও কার্গো সেকশন ব্যবহার করে নাশকতামূলক কর্মকা- পরিচালনার উদ্দেশ্যে কোন অস্ত্র, গোলাবারুদ, বিস্ফোরক অথবা মাদকদ্রব্য আসছে না। গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতর, আঞ্চলিক কার্যালয় সিলেটের সহকারী পরিচালকের নেতৃত্বে একটি বিশেষ টিম শনিবার সকাল সোয়া ৬টা থেকে সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে দিনব্যাপী অভিযানে নামে। এ সময় গোয়েন্দা দলটি বিমানবন্দরের টার্মিনাল ভবন এবং কার্গো সেকশনে রক্ষিত পণ্যসমূহ স্ক্যানিং ও ডগ স্কোয়াডের সাহায্যে দৈবচয়ন ভিত্তিতে পরীক্ষা করে। অভিযান চলাকালে বিমানবন্দর কাস্টমস, ডিজিএফআই, এনএসআই, সিটিএসবি, বিজিবিসহ অন্যান্য সংস্থার সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। আমাদের চট্টগ্রাম অফিস জানিয়েছে, শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতরের তত্ত্বাবধানে শনিবার সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা অবধি বিদেশ থেকে আগত যাত্রীদের ওপর অপারেশন আইরিনের আওতায় তল্লাশি অভিযান পরিচালিত হয়। এতে মাদক এবং অবৈধ পণ্য আমদানির ওপর নজরদারি দেয়া হয়। আন্তর্জাতিক ফ্লাইটসমূহের যাত্রীদের ওপর এ ধরনের নজরদারি শুধু বাংলাদেশেই নয়, বিশ্বের প্রায় ৩৫টি দেশে এ ধরনের অভিযান পরিচালিত হচ্ছে সম্প্রতি। বিকেল ৫টা পর্যন্ত চারটি আন্তর্জাতিক বিমানে আসা যাত্রীদের ওপর এ ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালানো হয়। এক্ষেত্রে বিমানবন্দরের ভেতরে ও বাইরে বিজিবি ও র‌্যাব সদস্যরাও সন্দেহভাজনদের ওপর তল্লাশি অভিযান চালান। শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতরের চট্টগ্রাম কার্যালয়ের উপ-পরিচালক এসএম শামীমুর রহমান এ অভিযানে নেতৃত্ব দেন। এ অভিযানের অংশ হিসেবে এর আগে চট্টগ্রাম বন্দরেও ডগ স্কোয়াড দিয়ে অভিযান পরিচালনা করা হয়।
×