হারিয়ে যাচ্ছে ৭ হাজার ভাষা

বিশ্বের বিভিন্ন দেশে আদিবাসী ও সংখ্যালঘুদের ওপর গণহত্যা, জবরদখল এবং সংঘাতের কারণে তাদের অস্তিত্ব আজ বিপন্ন। ফলে হারিয়ে যাচ্ছে তাদের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যও। হারিয়ে যাচ্ছে ভাষা। এমনটাই বলছে মানবাধিকার সংস্থাগুলো। মাইনরিটি রাইটস গ্রুপ বা এমআরজি সম্প্রতি তাদের এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ইথিওপিয়া, চীন ও ইরাকে সংঘাত, উচ্ছেদের কারণে সংখ্যালঘু সম্প্রদায় ও আদিবাসীদের জীবন বিপন্ন হচ্ছে। একই সঙ্গে তাদের সংস্কৃতিও হারিয়ে যেতে বসেছে। সংস্থাটির নীতি ও যোগাযোগ পরিচালক কার্ল সোডারবার্গ বলেছেন, যদিও আদিবাসী বা ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর এ ধরনের নির্যাতনের ঘটনা নতুন নয়, তবে বর্তমানে তাদের ওপর হামলা ও নির্যাতনের ঘটনার মাত্রা ভয়াবহভাবে বাড়ছে। সিরিয়া ও ইরাকে যে যুদ্ধ চলছে তাতে বহু মানুষ গৃহহীন হচ্ছে, বিশেষ করে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী এবং ধর্মীয় সংখ্যালঘু, যেমন ইয়াজিদী এবং সার্বিয়ান মাদিয়ানরা সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে? স্টেট অব দ্য ওয়ার্ল্ডস মাইনরিটিস এ্যান্ড ইন্ডেজেনাস পিপলস ২০১৬-এর প্রতিবেদনে এ কথাই তুলে ধরেছেন কার্ল। তাই নিজেদের পূর্বপুরুষদের বসতি থেকে আদিবাসী সম্প্রদায় নির্মূলের সমূহ আশঙ্কা রয়েছে। আশঙ্কা রয়েছে তাদের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি হারিয়ে যাওয়ার, কেননা স্থানভেদে এসব সংস্কৃতি লালিত হয়। ইরাকে সাম্প্রতিক সহিংসতায় সংখ্যালঘু সম্প্রদায় যেমন ইয়াজিদী, তুর্কি, সাবাক, খ্রীস্টান এবং কাকাই সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং গৃহহীন হয়েছে সবচেয়ে বেশি। জাতিসংঘের হিসাব অনুযায়ী, জঙ্গী সংগঠন তথাকথিত ইসলামিক স্টেট বা আইএস নৃশংস অত্যাচার চালিয়েছে ইয়াজিদীদের ওপর। তাদের হত্যা করা হয়েছে, বন্দী করা হয়েছে এবং বানানো হয়েছে দাস। তাদের ওপর গণহত্যা চালানো হয়েছে বলে গত জুন মাসেও জানিয়েছে জাতিসংঘ। সবচেয়ে ভয়াবহ হলো, আইএস আদিবাসী এবং ঐতিহ্যবাহী স্থাপনা ধ্বংস করছে। এতে আদিবাসীদের সংস্কৃতির পাশাপাশি তাদের পরিচিতিও পড়েছে হুমকির মুখে। কেননা, যখন একটি সম্প্রদায় নিজ ভূমি থেকে উচ্ছেদ হয়, তখন তাদের সংস্কৃতি এবং এতিহ্য ধরে রাখাটা ভীষণ কষ্টকর হয়। এছাড়া পরবর্তী প্রজন্মে তাদের সংস্কৃতি ছড়িয়ে দেয়াটাও তখন সহজ হয় না। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশ্বের এ সংঘাত পরিস্থিতি চলতে থাকলে ২১১৫ সালের মধ্যে অন্তত ৭ হাজার আদিবাসী ভাষা পৃথিবী থেকে চিরতরে হারিয়ে যাবে। -ডয়েচে ভেলে