ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

মোবাইল মেসেজে শপিংমলে বড় ধরনের হামলার হুমকি!

প্রকাশিত: ০৫:৩৮, ১৭ জুলাই ২০১৬

মোবাইল মেসেজে শপিংমলে বড় ধরনের হামলার হুমকি!

স্টাফ রিপোর্টার ॥ স্বল্প সময়ের মধ্যে দেশের কয়েকটি শপিংমলে বড় ধরনের হামলা চালানোর হুমকির বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। শপিংমলগুলোতে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। এসব শপিংমলের মধ্যে বেশিরভাগই ঢাকায়। ঢাকার বাইরে চট্টগ্রামসহ বিভাগীয় শহরেও বেশকিছু বড় বড় শপিংমল রয়েছে। শপিংমলগুলোর নিজস্ব নিরাপত্তা জোরদারের পাশাপাশি পর্যাপ্ত সিসি ক্যামেরা বসানো হয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর তরফ থেকে। বাড়ানো হয়েছে গোয়েন্দা নজরদারি। শপিংমলে হামলার বার্তা ছড়িয়ে যাতে অন্য কোন জায়গায় হামলা চালাতে না পারে, এজন্য সব গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় নিরাপত্তা জোরদারের পাশাপাশি গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সূত্রে জানা গেছে, আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে দেশের কয়েকটি শপিংমলে বড় ধরনের হামলা চালানো হবে বলে মোবাইল ফোনে ম্যাসেজ ছড়িয়ে পড়ে। ম্যাসেজটি কোথা থেকে কারা কেন পাঠিয়েছে, সে বিষয়ে তদন্ত চলছে। গোয়েন্দা কর্মকর্তারা বলছেন, গুলশানের হলি আর্টিজান রেস্তরাঁয় হামলার পর আতঙ্ক সৃষ্টি করতেই এমন ম্যাসেজ পাঠানো হতে পারে। কারণ কোন জঙ্গী বা সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর এখন পর্যন্ত আগাম বার্তা দিয়ে নাশকতা চালানোর কোন নজির নেই। ধারণা করা হচ্ছে, কোন গোষ্ঠী সারাদেশের মানুষের মধ্যে, বিশেষ করে বিদেশীদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করতেই পরিকল্পিতভাবে ম্যাসেজটি পাঠিয়েছে। যাতে মানুষের মধ্যে বাড়তি ভীতি কাজ করে। বিদেশীদের মধ্যে বাড়তি ভীতি কাজ করলে স্বাভাবিক কারণেই বাংলাদেশে থাকা দূতাবাসগুলো তাদের নাগরিকদের চলাফেরার ওপর বাড়তি সর্তকর্তা জারি করবে। এতে করে বাংলাদেশকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে হেয় হবে। বাংলাদেশকে পরিকল্পিতভাবে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে হেয় করতেই একেবারেই পরিকল্পিতভাবে এমন ম্যাসেজ পাঠানো হতে পারে। গুলশানেও গত ১ জুলাই রাতে হলি আর্টিজান রেস্তরাঁ ও বেকারিতে হামলা চালিয়ে ১৭ জন বিদেশীসহ সর্বমোট ২২ জনকে হত্যার ঘটনা ঘটে। হত্যার পর দায় স্বীকার করে বিবৃতি দেয় সাইট ইন্টেলিজেন্স। এছাড়া ফ্রান্সের নিস শহরে ট্রাকবোমা হামলার অনুকরণে বাংলাদেশের বিভিন্ন জনের কাছে এমন ক্ষুদে বার্তা পাঠানো হয়ে থাকতে পারে। কারণ ফ্রান্সে ট্রাকবোমা হামলার আগাম আভাস দিয়েছিল আন্তর্জাতিক জঙ্গী গোষ্ঠী। হামলার পর আইএস (ইসলামিক স্টেট) দায় স্বীকার করে বিবৃতি দেয়। ঢাকা মহানগর পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, রাজধানীতে তালিকাভুক্ত ২৩৩টি শপিংমল রয়েছে। শপিংমলগুলোর নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। শপিংমলের নিজস্ব সিকিউরিটি সিস্টেম বাড়াতে বলা হয়েছে। চেকিংয়ের পাশাপাশি বসাতে বলা হয়েছে বাড়তি সিসি ক্যামেরা। বিশেষ নিরাপত্তা বলয়ের মধ্যে গুলশানেই রয়েছে ২৪টি, উত্তরায় ১৮টি ছাড়াও বসুন্ধরা সিটি, যমুনা ফিউচার পার্ক, ইষ্টার্ন প্লাজা, মোতাবিল প্লাজা, সীমান্ত স্কয়ার (রাইফেলস স্কয়ার), নিউমার্কেট, চাঁদনী চক, উত্তরার পলওয়েল কারনেশনস, পল্টনের পলওয়েল মার্কেট, বায়তুল ভিউ, এ্যালিফ্যান্ট রোড, রাপা প্লাজা, বিশাল সেন্টার, উত্তরার রাজলক্ষী কমপ্লেক্স, নিউমার্কেটের ঢাকা কলেজের সামনে অবস্থিত গ্লোব শপিং সেন্টার ছাড়াও চট্টগ্রামসহ দেশের খ্যাতিমান শপিংমলগুলো। গোয়েন্দা সূত্রগুলো বলছে, হামলাকারীরা পরিকল্পিতভাবে শপিংমলে হামলার ম্যাসেজ দিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ অন্যান্য গোয়েন্দা দৃষ্টি শপিংমলের দিকে রেখে অন্যদিকে হামলা করতে পারে। এজন্য দেশের ধর্মীয় উপাসনালয়, সুপ্রীমকোর্ট, হাইকোর্ট, বিভিন্ন আদালত, গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা, রেলস্টেশন, বাস টার্মিনাল, হাসপাতালসহ সব গুরুত্বপূর্ণ জায়গাগুলোতেও নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। ইতোমধ্যেই স্থান বিবেচনা করে ঢাকার অসংখ্য জায়গায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার তরফ থেকে প্রচুর সিসি ক্যামেরা বসানো হয়েছে। গুলশান, বনানী, ধানম-ি, উত্তরা, বারিধারাসহ যেসব জায়গায় জনসমাগম বেশি হয়, সেসব জায়গায় নিরাপত্তা জোরদার করেছে। গোপন ক্যামেরাও বসেছে এসব জায়গায়। কেন্দ্রীয় ব্যাংকসহ সকল ব্যাংকের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। এ ব্যাপারে ঢাকা মহানগর পুলিশের মিডিয়া বিভাগের উপকমিশনার মাসুদুর রহমান জানান, ম্যাসেজটি সম্পর্কে তারা অবগত। সে মোতাবেক প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
×