ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখতে গুরুত্বারোপ

প্রকাশিত: ০৬:২০, ১৯ জুন ২০১৬

প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখতে গুরুত্বারোপ

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দক্ষিণ এশীয় দেশগুলোর উন্নয়ন প্রক্রিয়া জোরদার করার জন্য প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখা এবং যোগাযোগ উন্নয়নের ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন। তিনি বলেন, ‘দক্ষিণ এশীয় দেশগুলো তাদের মধ্যকার বিদ্যমান সুসম্পর্কের উত্তরণ ঘটিয়ে পারস্পরিক উন্নয়ন সাধন করতে পারে। একই সঙ্গে কানেকটিভিটির উন্নয়ন তাদের ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রকে আরও সম্প্রসারিত করবে।’ খবর বাসস’র বাংলাদেশ সফররত ভারতীয় লোকসভার সদস্য এবং সে দেশের রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জীর ছেলে অভিজিৎ মুখার্জী শনিবার সকালে প্রধানমন্ত্রীর জাতীয় সংসদ ভবনস্থ কার্যালয়ে তাঁর সঙ্গে সাক্ষাত করতে এলে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন। পরে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের বৈঠকের বিষয়ে অবহিত করেন। বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দারিদ্র্যের অভিশাপ থেকে মুক্তির জন্য এই অঞ্চলের প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধির ও প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করেন। বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে ট্রানজিট বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এই ধরনের সিস্টেম সারা পৃথিবীতেই চালু রয়েছে। ইউরোপজুড়ে এক দেশের সীমান্ত অতিক্রম করে অন্য দেশে পণ্য সরবরাহ করা হয়, তাই বলে কারোর সার্বভৌমত্বই কিন্তু ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে না।’ বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে ‘সীমান্ত হাট’ স্থাপনের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই সীমান্ত হাট প্রতিষ্ঠার উদ্যোগের ফলে দুই দেশের চোরাচালান অনেকাংশে হ্রাস পেয়েছে। প্রধানমন্ত্রী এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে আরও অধিক ‘সীমান্ত হাট’ স্থাপনের ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, এতে করে দুই দেশের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্যের পরিমাণ বহুলাংশে বৃদ্ধি পাবে। বাংলাদেশ-ভুটান-ইন্ডিয়া-নেপাল (বিবিআইএন) মোটরযান চলাচল চুক্তির প্রসঙ্গ উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, এই চুক্তির ফলে চুক্তির অন্তর্গত এই অঞ্চলের পারস্পরিকভাবে নির্ভরশীল চারটি দেশই বিভিন্নভাবে লাভবান হবে। সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদের বিরুদ্ধে তাঁর সরকারের ‘জিরো টলারেন্স নীতির পুনরুল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কোন দেশের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী তৎপরতার জন্য কাউকেই বাংলাদেশের ভূখ-কে ব্যবহারের সুযোগ দেয়া হবে না।’ পঁচাত্তরের ১৫ আগস্টের বিয়োগান্তক অধ্যায়ের স্মৃতিচারণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সেই কালরাত্রিতে জাতির পিতাকে তাঁর পরিবার-পরিজন এমনকি পরিবারের নারী ও শিশুসহ নির্মম নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়। নিজেকে একজন ভুক্তভোগী উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের কেউ কেউ এখনও বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পলাতক রয়েছে। তিনি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলো এ বিষয়ে কথা বলে না। পক্ষান্তরে, তাদের খুনীদের পক্ষ নিতেও দেখা যায়। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে ভারত সরকার এবং জনগণের মহান সহযোগিতার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ কখনও তাদের এই সহযোগিতার কথা ভুলে যাবে না। ভারতের জনতা বাংলাদেশের জনগণ বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ভালবাসে উল্লেখ করে অভিজিৎ মুখার্জী বলেন, বাংলাদেশের জনগণের অবস্থান ভারতীয়দের হৃদয়ে। তিনি বাংলাদেশের সমৃদ্ধির জন্য শুভ কামনাও জানান। তিনি বাংলাদেশ সফরকালীর তাঁর প্রতি প্রদর্শিত আন্তরিকতায় মুগ্ধতা প্রকাশ করেন। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক মুহম্মদ ফারুক খান, জাতীয় সংসদের হুইপ ইকবালুর রহিম এবং মেহজাবিন খালেদ এমপি এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
×