ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

মুক্তিকে হারিয়ে কো. ফাইনালে শেখ রাসেল

প্রকাশিত: ০৬:৫৭, ১৬ জুন ২০১৬

মুক্তিকে হারিয়ে কো. ফাইনালে শেখ রাসেল

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ফুটবল ফেবারিটরা সব সময় ভাগ্যের সহায়তা পায় না। ‘ওয়ালটন ফেডারেশন কাপে’ সবচেয়ে ফেবারিট ধরা হয়েছিল চট্টগ্রাম আবাহনী লিমিটেডকে। বন্দরনগরীর এই দলটি অঢেল অর্থ ব্যয়ে গড়েছে সবচেয়ে শক্তিশালী দল। সাম্প্রতিক সময়ে তারা জিতেছে দু’দুটি শিরোপা। একটি শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্লাব কাপ এবং অন্যটি স্বাধীনতা কাপ। অথচ তারাই কি না পয়েন্ট টেবিলের তলানিতে থেকে বিদায় নিল ফেডারেশন কাপের আসর থেকে! বুধবার বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে চট্টলার দলটির কোন খেলা ছিল না। তারপরও তারাই বেশি ছিল আলোচনায়। কেননা ‘বি’ গ্রুপে এদিন বিকেলের ম্যাচে বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ক্রীড়া চক্র ৩-০ গোলে হেরে যাওয়াতে শেষ আটে যাওয়ার স্বপ্নটা দুমড়ে মুচড়ে গেছে চট্টগ্রাম আবাহনীর। তাদের হারায় শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্র লিমিটেড। খেলার প্রথমার্ধেই সব গোল করে এই আসরের ২০১২ সালের শিরোপাধারী শেখ রাসেল। এই জয়ে ২ খেলায় ৪ পয়েন্ট নিয়ে রাসেল ‘বি’ গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন হিসেবে কোয়ার্টার ফাইনালে গেল। আর মুক্তিযোদ্ধা বুধবারের খেলায় হারলেও তাদের কোন ক্ষতি হয়নি। বরং বহালতবিয়তেই পৌঁছে গেছে শেষ আটে। ২ খেলায় তাদের পয়েন্ট ৩। আর সমান ম্যাচে ১ পয়েন্ট পাওয়ায় বিদায় নিতে হলো চট্টগ্রাম আবাহনীকে। ফেডারেশন কাপ ফুটবলে ‘ডেথ গ্রুপ’ হচ্ছে গ্রুপ ‘বি’। এই গ্রুপের সবচেয়ে শক্তিশালী দল ছিল চট্টগ্রাম আবাহনী লিমিটেড। তারাই টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে পড়লো। এর আগে তারা ১-০ গোলে হারে গত আসরের রানার্সআপ মুক্তিযোদ্ধার কাছে। তবে বুধবারের ম্যাচে যদি শেখ রাসেল ১-০ গোলে মুক্তিকে হারাত, তাহলে গোল তফাতে/লাল কার্ড ও হলুদ কার্ড প্রাপ্তির সমীকরণে ক্ষীণ হলেও শেষ আটে ওঠার একটা সম্ভাবনা ছিল চট্টলার দলটির। তারা যে দলটির ১-০ গোলে জয়ের জন্য প্রার্থনা করেছিল, সেই মুক্তিই উল্টো হেরে তাদের সেই সম্ভাবনাকে গলা টিপে হত্যা করে! আগের ম্যাচে চট্টগ্রাম আবাহনী ১-১ গোলে শেখ রাসেলের সঙ্গে ড্র করেছিল। বুধবারের খেলায় রাসেল খেলে সুন্দর, গোছানো, পরিকল্পিত ও পরিচ্ছন্ন ফুটবল। কোচ মারুফুল হকের নিদের্শমতো তারা খেলে পজেশনাল ফুটবল। পুরো খেলায় তাদের দখলেই বেশি ছিল বল। যদিও প্রথম গোলের জন্য তাদের প্রতীক্ষা করতে হয় ২৯ মিনিট পর্যন্ত। দলীয় অধিনায়ক-লেফট ব্যাক আতিকুর রহমান মিশুর পাস থেকে বল পেয়ে ‘অল রেড’দের বক্সে ঢুকে পড়েন ক্যামেরুনের ডিফেন্ডার জঁ জুলস ইকাঙ্গা। আগুয়ান গোলরক্ষক মোহাম্মদ নাঈমকে কোন সুযোগ না দিয়েই প্লেসিং শটে বল জলে পাঠান তিনি (১-০)। ৩২ মিনিটে বক্সের প্রায় ৩০ গজ দূর থেকে মিডফিল্ডার শাহেদুল আলম শাহেদের চমৎকার শট মুক্তির জালে আশ্রয় নিলে ব্যবধান দ্বিগুণ করে ‘বেঙ্গল ব্লুজ’রা (২-০)। ৪৩ মিনিটে শেখ রাসেলের ইকাঙ্গার ক্রস প্রতিপক্ষের ডিফেন্ডারদের গায়ে লেগে ফেরত আসলে ফিরতি বলে শটে বল জালে পাঠান আরেক ক্যামেরুন ফরোয়ার্ড পল এমিল (৩-০)। এগিয়ে থেকেই বিশ্রামে গেছে মারুফুল হকের শিষ্যরা। ৫০ মিনিটে বক্সের কাছেই বা প্রান্তে ফ্রি কিক পায় মুক্তিযোদ্ধা। নাইজেরিয়ান ফরোয়ার্ড আহমেদ কোলো মুসার বাঁক খাওয়ানো শট ছিল নিশ্চিত গোল। কিন্তু গোলরক্ষক রাসেল মাহমুদ লিটন দৌড়ে এসে ঝাঁপিয়ে পড়ে ফিস্ট করে কর্নারের বিনিময়ে দলকে রক্ষা করেন। ৫৫ মিনিটে আবারও কোলো মুসার তীব্র শট আটকে দেন এই গোলরক্ষক। বাকি সময়টায় রাসেল ও মুক্তি একাধিক আক্রমণ শানালেও তা সফলতার মুখ দেখেনি। রেফারি জালাল উদ্দিন খেলা শেষের বাঁশি বাজালে শেষ পর্যন্ত জয়ের তৃপ্তি নিয়ে রাসেল এবং হেরেও শেষ আটে যাবার স্বস্তি নিয়ে মুক্তিযোদ্ধা মাঠ ছাড়ে। আর মুক্তির হারে হতাশার সাগরে নিমজ্জিত হয় চট্টগ্রাম আবাহনী শিবির।
×