ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

সংসদে বাজেটের ওপর আলোচনা

দেশের অগ্রযাত্রা ব্যাহত করতে গুপ্তহত্যা চালানো হচ্ছে

প্রকাশিত: ০৫:৩৪, ১৩ জুন ২০১৬

দেশের অগ্রযাত্রা ব্যাহত করতে গুপ্তহত্যা চালানো হচ্ছে

সংসদ রিপোর্টার ॥ প্রস্তাবিত বাজেটের সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে সংসদ সদস্যরা বিএনপি-জামায়াতের কঠোর সমালোচনা করে বলেছেন, বর্তমান সরকারের উন্নয়ন, সফলতা ও অগ্রযাত্রা সহ্য করতে পারছেন না বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়াসহ তাঁর দোসররা। দেশের অগ্রযাত্রার চাকাকে স্তব্ধ করে দিতে তারা দেশে এখন টার্গেট কিলিং চালাচ্ছে। কিন্তু তাদের কোন ষড়যন্ত্রই দেশবাসীর অগ্রযাত্রা থামাতে পারবে না। আগামী দিনেও দেশের এই অগ্রযাত্রা অব্যাহত থাকবে, ষড়যন্ত্রকারীরা আবারও পরাজিত হবে। ডেপুটি স্পীকার এ্যাডভোকেট ফজলে রাব্বি মিয়া ও অধ্যাপক আলী আশরাফের সভাপতিত্বে রবিবার সংসদ অধিবেশনে প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নেন সাবেক চীফ হুইপ উপাধ্যক্ষ আবদুস শহীদ, সরকারী দলের সেক্টর কমান্ডার মেজর (অব) রফিকুল ইসলাম বীরউত্তম, আবদুর রহমান, কামাল আহমেদ মজুমদার, কবি কাজী রোজী, শফিকুল ইসলাম শিমুল, মোসলেম উদ্দিন, এ কে এম ফজলুল হক, সফুরা বেগম ও জাতীয় পার্টির কাজী ফিরোজ রশীদ। আলোচনা শেষে সংসদ অধিবেশন আজ সোমবার বেলা ১১টা পর্যন্ত মূলতবি করা হয়। আলোচনায় অংশ নিয়ে সাবেক চীফ হুইপ উপাধ্যক্ষ আবদুস শহীদ প্রস্তাবিত বাজেটকে ‘দিনবদলের সনদ’ উল্লেখ করে বলেন, গত সাত বছরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নেতৃত্বাধীন সরকার কখনও পিছু হটেনি, দ্রুতগতিতে দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। এ কারণে খালেদা জিয়া ও তাদের দোসররা শেখ হাসিনা ও বর্তমান সরকারকে সহ্য করতে পারছেন না। সরকারের উন্নয়ন, সফলতা ও অগ্রযাত্রাকে ব্যাহত করতে তারা এখন দেশে গুপ্তহত্যা চালাচ্ছে। পুলিশের পরিবারের ওপর হামলা পর্যন্ত করছে। আসলে বিএনপি-জামায়াত হচ্ছে সন্ত্রাসের ধারক-বাহক। এ কারণে দেশের জনগণ বিএনপি-জামায়াতকে প্রত্যাখ্যান করেছে। শুধু দেশের জনগণই নয়, সারাবিশ্বের বাঘা বাঘা নেতারাও এখন শেখ হাসিনার পক্ষে। তাই আগামী নির্বাচনে দেশের জনগণ আবারও শেখ হাসিনাকেই পুনর্বার নির্বাচিত করবে। জাতীয় পার্টির কাজী ফিরোজ রশীদ বলেন, প্রস্তাবিত বাজেটের সুফল জনগণের কাছে পৌঁছে দিতে হলে সর্বাগ্রে আর্থিক খাতের বিশৃঙ্খলা-লুণ্ঠন বন্ধ এবং পুঁজিবাজারকে রক্ষা করতে হবে। ব্যাংকিং খাতে পুকুরচুরি নয়, সাগরচুরি হয়েছে। জাতি জানতে চায় এই সাগরচুরির সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে? বাংলাদেশ ব্যাংকের চুরি হওয়া রিজার্ভ উদ্ধারের সম্ভাবনা ক্ষীণ। এতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে চার কর্মকর্তা জড়িত। ৭ বছরে ৩০ হাজার কোটি টাকা আত্মসাত করা হয়েছে। শেয়ারবাজারে লুটপাট হয়েছে ১৮ হাজার কোটি টাকা। বেসিক ব্যাংক সাড়ে ৪ হাজার কোটি টাকা লুটপাট করলেও কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। এক বছরে ৭২ হাজার কোটি টাকা পাচার হয়েছে। যা দিয়ে তিনটি পদ্মা সেতু নির্মাণ করা যেত। এভাবে জনগণের হাজার হাজার কোটি টাকা লুণ্ঠন হবে, আর আমরা বসে বসে তামাশা দেখব এটা হতে পারে না। সেক্টর কমান্ডার মেজর (অব) রফিকুল ইসলাম বীরউত্তম বলেন, অনেকেই প্রস্তাবিত বাজেটকে উচ্চাভিলাষী বলেছেন। আমাদের অবশ্যই উচ্চাভিলাষী হতে হবে, এর কোন বিকল্প নেই। প্রয়োজনীয়তার নিরিখে এ ধরনের বাজেটের অত্যন্ত প্রয়োজন। মেগা প্রকল্প সম্পর্কে তিনি বলেন, এটা সম্ভব হয়েছে প্রধানমন্ত্রী দূরদর্শী ও সাহসী নেতৃত্বের ফলে। ২০২১ সালে বিদ্যুত উৎপাদন চার গুণে পৌঁছাবে। যা কেউ কল্পনাও করতে পারেনি। তিনি বলেন, বিএনপি-জামায়াতের নেতৃত্বে একাত্তরের পরাজিত শত্রুরা দেশের এই অগ্রযাত্রা থামাতে পেছন থেকে ষড়যন্ত্র করবে। কিন্তু কোন কিছুই আমাদের থামাতে পারবে না। আগামী দিনেও দেশের এই অগ্রযাত্রা অব্যাহত থাকবে, ইনশাল্লাহ আমরাই বিজয়ী হবো। আবদুর রহমান বলেন, বাংলাদেশ যখন উন্নয়নের মহাসড়কে, অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছাচ্ছে ঠিক তখনই একটি অপশক্তি তা নস্যাতের অপচেষ্টা করছে। দুই শতাধিক মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করেও ব্যর্থ হয়ে এখন পরিকল্পিতভাবে টার্গেট কিলিং করছে। এসব নিরীহ মানুষকে হত্যা করে খালেদা জিয়ার কোন রাজনৈতিক স্বপ্ন চরিতার্থ হবে না। গুপ্তহত্যাকারী ও তাদের মদদদাতাদের কেউ-ই রেহাই পাবে না। কঠোর শাস্তির মুখোমুখি তাদের হতেই হবে। তিনি বলেন, বিশাল এই বাজেট বাস্তবায়ন করতে হলে অবশ্যই আমলাতান্ত্রিক জটিলতা দূর করতে হবে। পুঁজিবাজারে যে আস্থার সঙ্কটের সৃষ্টি হয়েছে তা দূর করতে হবে। কামাল আহমেদ মজুমদার বলেন, অতীতে যারা দেশের কোন উন্নয়ন না করে বিদেশে বিপুল অঙ্কের টাকা পাচার করেছে, সেই বিএনপি-জামায়াত ও তাদের সমর্থকরা প্রস্তাবিত বাজেটের সমালোচনা করছে। কারণ তারা বুঝতে পেরেছে এই বাজেট বাস্তবায়িত হলে দেশ আরও উন্নয়ন, অগ্রগতি ও সামনের দিকে এগিয়ে যাবে। এ কারণে তারা দেশে একের পর এক গুপ্তহত্যা চালাচ্ছে, দেশকে অস্থিতিশীল করার ষড়যন্ত্র করছে। কিন্তু তাদের কোন ষড়যন্ত্রই দেশের জনগণ সফল হতে দেবে না।
×