ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

গাজীকে বিদায় করে শীর্ষে ভিক্টোরিয়া

প্রকাশিত: ০৪:১৫, ১০ জুন ২০১৬

গাজীকে বিদায় করে শীর্ষে ভিক্টোরিয়া

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লীগের (ডিপিএল) সুপার লীগের ছয় দল নিশ্চিত হয়ে গেছে। এমনিতেও যেহেতু বৃহস্পতিবার লীগপর্বের শেষদিন ছিল, ছয়টি দল মিলতই। ষষ্ঠ নম্বর দলটি শুধু বাকি ছিল। সে দলটি হলো প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাব। প্রাইম দোলেশ্বর, ভিক্টোরিয়া, লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ, আবাহনী ও মোহামেডানের পর প্রাইম ব্যাংক খেলবে সুপার লীগে। বৃহস্পতিবার লীগপর্বের শেষ ম্যাচে আব্দুল মজিদের ১০০ ও আল আমিনের (৫/২৭) দুর্দান্ত বোলিংয়ে গাজী গ্রুপকে ২৮ রানে হারিয়ে লীগপর্ব শেষে শীর্ষে উঠে গেছে ভিক্টোরিয়া। দলটি এককভাবে ১৫ পয়েন্ট পেয়েছে। গাজীর হারে প্রাইম ব্যাংক উঠে গেছে সুপার লীগে। সমান ১২ পয়েন্ট পেয়েও প্রাইম ব্যাংকের সঙ্গে ‘হেড টু হেড’ ও ‘রান রেটে’ পিছিয়ে থেকে কলাবাগান ক্রীড়া চক্রের সুপার লীগে খেলার স্বপ্ন ধূলিসাত হয়ে গেল। গুপার লীগে ছয়টি দল নিশ্চিত হয়ে যাওয়ার সঙ্গে প্রিমিয়ার লীগ থেকে প্রথম বিভাগে দুটি দলের অবনমনও নিশ্চিত হয়ে গেছে। দল দুটি হলোÑ ৪ পয়েন্ট করে পাওয়া ক্রিকেট কোচিং স্কুল (সিসিএস) ও কলাবাগান ক্রিকেট একাডেমি (সিএ)। ১২ দলের মধ্যে চারটি দল আগামী মৌসুমে লীগে খেলা নিশ্চিত করে রেখেছে। কলাবাগান ক্রীড়া চক্র, ১০ পয়েন্ট করে পাওয়া শেখ জামাল ও গাজী গ্রুপ এবং ৯ পয়েন্ট পাওয়া ব্রাদার্স ইউনিয়ন সুপার লীগে খেলতে পারেনি। রেলিগেশনও হয়নি। আগামী মৌসুমে লীগে খেলা নিশ্চিত হয়ে থেকেছে। লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ ও ব্রাদার্সের ম্যাচটি বৃহস্পতিবার রিজার্ভ ডেতেও মাঠে গড়ায়নি। মাঠের অবস্থা খেলার অনুপযোগী থাকায় ম্যাচটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়। তাতে দুই দলই ১ পয়েন্ট করে পায়। ভিক্টোরিয়া ও গাজী গ্রুপ ম্যাচটি হওয়ার কথা ছিল বুধবারই। কিন্তু মঙ্গলবার রাতে হঠাৎ করেই সিসিডিএম সিদ্ধান্ত নেয় ম্যাচটি হবে বৃহস্পতিবার। এতেই সবাই ষড়যন্ত্রের গন্ধ পেয়ে যায়। কী সেই ষড়যন্ত্র? গাজী গ্রুপ দেখেশুনে খেলবে। সিসিডিএম চেয়ারম্যান গাজী গোলাম মতুর্জা পাপ্পার দল হচ্ছে গাজী গ্রুপ। সব ম্যাচ হয়ে যাওয়ার পর যেহেতু গাজী গ্রুপের ম্যাচটি হবে, সেহেতু স্বাভাবিকভাবেই তারা বুঝে যাবে, কী করলে সুপার লীগে ওঠা যাবে। তাই হলো। জিতলেই সুপার লীগে উঠে যাবে গাজী গ্রুপ, এমন সমীকরণ দাঁড়িয়ে গেল। এমন সুবিধা পেয়েও জিততে পারল না গাজী গ্রুপ! ফতুল্লায় টস জিতে ভিক্টোরিয়া আগে ব্যাট করার সিদ্ধান্তও নেয়। ম্যাচটি জিতলে পয়েন্ট তালিকার শীর্ষে থেকেই লীগপর্ব শেষ করবে ভিক্টোরিয়া। তাই করল। বৃষ্টিবিঘিœত ৩৩ ওভারের ম্যাচে আগে ব্যাট করে ৭ উইকেট হারিয়ে ২১৯ রান করল। টানা দ্বিতীয় শতক করা আব্দুল মজিদের ১০০ রানের সঙ্গে মুমিনুল হকের ৭৩ রানে স্কোরবোর্ড মজবুত করা সম্ভব হয়। দ্বিতীয় উইকেটে মজিদ ও মুমিনুলের ১২২ ও তৃতীয় উইকেটে মজিদ-আল আমিনের (২৪) ৬৬ রানের জুটিতে ২২০ রানের কাছাকাছি চলে যায় ভিক্টোরিয়া। আর কোন ব্যাটসম্যানই দুই অঙ্কের ঘরে পৌঁছতে পারেননি। মোহাম্মদ শরীফ ১৯ রান দিয়ে ৩ উইকেট নেন। দেলোয়ার হোসেনও (২/৩৬) দুর্দান্ত বোলিং করেন। জবাব দিতে নেমে আল আমিনের বোলিং তোপে ৩০.১ ওভারে ১৯১ রান করতেই গুটিয়ে যায় গাজী গ্রুপ। শুরুতে ১১ রানেই ২ উইকেট হারিয়ে বিপাকে পড়লেও শামসুর রহমান শুভ (৪২) ও ভারতের দিল্লীর ব্যাটসম্যান পুনিত বিসত মিলে যে তৃতীয় উইকেটে ৯৫ রানের জুটি গড়েন, সেখানে গাজী গ্রুপ এগিয়ে যায়। ১০৬ রানে শুভ আউট হওয়ার পর মুহূর্তেই ১১৫ রানের মধ্যে আরও ২ উইকেটের পতন ঘটে। ৫ উইকেট হারিয়ে বিপদেই পড়ে গাজী গ্রুপ। তবে পুনিত একাই দলকে জয়ের আশা দেখান। ২৬ ওভারে গিয়ে ১৫০ রানও করে ফেলে গাজী গ্রুপ। ততক্ষণে পুনিতের স্কোরবোর্ডেও ৮৫ রান জমা হয়ে যায়। আর ১ রান যোগ হতেই আউট হয়ে যান পুনিত। তখনই মনে হয়, গাজী গ্রুপ শেষ পর্যন্ত হেরেও যেতে পারে। শেষ পর্যন্ত ১৯১ রানেই অলআউট হয়ে যায় গাজী গ্রুপ। হেরে বিদায়ও নেয়। স্কোর ॥ ভিক্টোরিয়া ইনিংস : ২১৯/৭; ৩৩ ওভার (মজিদ ১০০, মুমিনুল ৭৩, আল আমিন ২৪; শরীফ ৩/১৯, দেলোয়ার ২/৩৬)। গাজী গ্রুপ ইনিংস : ১৯১/১০; ৩০.১ ওভার (পুনিত ৮৬, শুভ ৪২, ইলিয়াস ১৯, মুস্তাকিম ১০; আল আমিন ৫/২৭)। ফল ॥ ভিক্টোরিয়া ২৮ রানে জয়ী। ম্যাচসেরা আল আমিন (ভিক্টোরিয়া)।
×