ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

শুক্রবার ফ্রান্সে পর্দা উঠছে ১৫তম ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপের

ইউরোর আগে লজ্জার হার স্পেনের

প্রকাশিত: ০৭:০৬, ৯ জুন ২০১৬

ইউরোর আগে লজ্জার হার স্পেনের

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ শুক্রবার ফ্রান্সে পর্দা উঠছে ইউরোপিয়ান ফুটবলের শ্রেষ্ঠত্বের আসর ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপের। ১৫তম এই আসর ঘিরে আয়োজক ফ্রান্সে এখন উৎসব-আনন্দ বিরাজ করছে। সন্ত্রাসী হামলার আশঙ্কা থাকা সত্ত্বেও সফলভাবে টুর্নামেন্ট আয়োজন করার ঘোষণা দিয়েছে ফরাসীরা। এবার ইউরোতে হ্যাটট্রিক শিরোপার মিশনে এসেছে স্পেন। ২০০৮ ও ২০১২ সালে টানা দুই আসরে চ্যাম্পিয়ন হয় স্প্যানিশরা। এর মাঝখানে ২০১০ সালে বিশ্বকাপও জিতে নেয় লা রোজারা। এবারও অভিন্ন লক্ষ্য ভিসেন্টে ডেল বস্কের দলের। তবে মূল আসরে অংশ নেয়ার আগে প্রস্তুতিটা মোটেও ভাল হয়নি তাদের। মঙ্গলবার শেষ প্রস্তুতি ম্যাচে কখনও ইউরো ও বিশ্বকাপে খেলার সুযোগ না পাওয়া জর্জিয়ার কাছে ১-০ গোলে হেরেছে স্পেন। পরশুর অন্যান্য ম্যাচে ডেনমার্ক ৪-০ গোলে বুলগেরিয়াকে, গ্রীস ২-১ গোলে অস্ট্রেলিয়াকে, বসনিয়া ২-১ গোলে জাপানকে, কাজাখস্তান ১-০ গোলে চীনকে ও কানাডা ২-১ গোলে পরাজিত করে উজবেকিস্তানকে। প্রস্তুতি পর্বে আগের দুটি ম্যাচে সহজেই জিতেছিল ২০১০ সালের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা। বসনিয়া-হার্জেগোভিনাকে ৩-১ ব্যবধানে হারানোর পর দক্ষিণ কোরিয়াকে ৬-১ গোলে উড়িয়ে দিয়েছিল স্পেন। কিন্তু জর্জিয়ার কাছে মাথা নত করেই মাঠ ছাড়তে হয়েছে ইউরোর বর্তমান চ্যাম্পিয়নদের। ম্যাচে প্রাধান্য বিস্তার করে খেলেও গোল মিসের মহড়ার কারণে লজ্জায় ডুবতে হয়েছে তাদের। ম্যাচে এগিয়ে যাওয়ার প্রথম সুযোগ পেয়েছিল স্পেনই। কিন্তু ২২তম মিনিটে জেরার্ড পিকের হেড পোস্ট ঘেঁষে বাইরে যায়। কিছুক্ষণ পর থিয়াগো আলকান্টারার শট দুর্ভাগ্যবশত পোস্টে লেগে ফিরে আসে। এরপর চেস ফেব্রিগাসের প্রচেষ্টা জর্জিয়া গোলরক্ষক অসাধারণ দক্ষতায় প্রতিহত করেন। ম্যাচের ৪০ মিনিটে পাল্টা আক্রমণ থেকে গোল করে স্বাগতিক সমর্থকদের থমকে দেন জর্জিয়ার মিডফিল্ডার টরনিকে অকরিয়াশভিলি। দ্বিতীয়ার্ধে গোল পরিশোধে চেষ্টা করে গেলেও সাফল্য পায়নি গত দুবারের ইউরো চ্যাম্পিয়নরা। ফলে ফিফা র‌্যাঙ্কিংয়ের ১৩৭ নম্বর দলের কাছে হারের লজ্জা নিয়েই মাঠ ছাড়তে হয় পিকে, ফেব্রিগাসদের। আগামী ১৩ জুন চেক প্রজাতন্ত্রের বিরুদ্ধে ম্যাচ দিয়ে ইউরো অভিযান শুরু করবে স্পেন। ‘ডি’ গ্রুপে তাদের অপর দুই প্রতিপক্ষ তুরস্ক ও ক্রোয়েশিয়া। দলগুলোর দিকে দৃষ্টি দিলেই স্পষ্ট, গ্রুপ পর্ব পেরুনো খুব একটা সহজ হবেনা ডেল বস্কের দলের! একটা সময় ধারাবাহিক দুর্দান্ত সাফল্য পেয়েছে স্পেন। যে কারণে তাদের সমর্থনও বাড়তে থাকে হু হু করে। একটা সময় ছিল ফুটবলে সমর্থন মানেই ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা। ইতালি, জার্মানিসহ অন্যান্য দেশের সমর্থক থাকলেও তা যেন হাতেগোনা! শুধু বাংলাদেশ নয়, গোটা ফুটবল বিশ্বেই এ চিত্র দেখা গেছে। কিন্তু স্পেন ২০০৮ ইউরো, ২০১০ বিশ্বকাপ ও ২০১২ ইউরো জয়ের পর এ চিত্র পাল্টাতে থাকে। আর্জেন্টিনা-ব্রাজিলের ধারাবাহিক ব্যর্থতা ও স্পেনের অনিন্দ সুন্দর ফুটবলের কারণে নতুন প্রজন্ম স্পেনকে সমর্থন করতে থাকে। ২০১২ ইউরো ফুটবলের ফাইনালে ইতালিকে নিয়ে রীতিমতো ছেলেখেলায় মেতে উঠেছিলেন স্পেনের ফুটবলাররা। ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভের অলিম্পিক স্টেডিয়ামে ইউরোপিয়ান ফুটবলের শ্রেষ্ঠত্বের আসরের ফাইনালে স্পেনের কাছে হার মানে ইতালি। স্পেনের শৈল্পিক, ছন্দময় পাসিং ফুটবলের কাছে রীতিমতো অসহায় আত্মসমর্পণ করে আজ্জুরিরা। একপেশে ফাইনালে ইতালিকে ৪-০ গোলে উড়িয়ে দিয়ে ইউরো শিরোপা ধরে রাখতে সক্ষম হয় স্পেন। এবার মুকুট ধরে রাখার মিশনে নামছে স্প্যানিশরা। তবে আগের সেই দম যে নেই তা স্পষ্ট। ২০১৪ ব্রাজিল বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্ব থেকেই বিদায় নেযা এর বড় দৃষ্টান্ত। এখন ময়দানী লড়াইয়ে কি হয় সেটাই দেখার।
×