ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

শাহজাহান মিয়া

ইহুদী রাষ্ট্রের মোসাদ দিয়ে ব্যর্থ হয়ে এবার জয়কে টার্গেট

প্রকাশিত: ০৩:৪০, ৮ জুন ২০১৬

ইহুদী রাষ্ট্রের মোসাদ দিয়ে ব্যর্থ হয়ে এবার জয়কে টার্গেট

আকাশচুম্বী উচ্চাভিলাষের মন্ত্রে মত্ত হওয়া একজন মানুষের হয়ত দ্রুত উত্থান হতে পারে। তবে একই গতিতে তার নিদারুণ পতনও ঘটতে পারে। কখনও কখনও তা একেবারেই অনিবার্য হয়ে ওঠে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশের সার্বিক উন্নয়নের শত সাফল্যের প্রতীক বর্তমান সরকারকে গদিচ্যুত করার লক্ষ্যে মুসলমানদের কাছে ঘৃণ্য ইহুদী রাষ্ট্র ইসরাইলের অতি ভয়ঙ্কর গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের সঙ্গে উন্মত্ত হয়ে ষড়যন্ত্রের খেলায় মেতে ওঠার অভিযোগে সম্প্রতি গ্রেফতার হওয়া বিএনপির এক ডাকসাইটের নেতা আসলাম চৌধুরী এদেশে তার এক জ্বলন্ত দৃষ্টান্ত। নবনিযুক্ত যুগ্ম-মহাসচিব আসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বে বাংলাদেশের অর্থনীতির লাইফলাইন বলে খ্যাত ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ২০১৩ সালে ব্যাপক নাশকতা চালানো হয়েছিল। ধনকুবের আসলাম চৌধুরী একই সঙ্গে নাশকতায় অর্থ যোগানদাতার ভূমিকাও পালন করেন। সেসময় বিএনপির এই নেতা চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ছিলেন। মহাসড়কের ত্রাস বলে খ্যাত আসলাম চৌধুরীর বিরুদ্ধে চট্টগ্রাম মহানগর ও জেলার সীতাকু- থানায় মোট একুশটি মামলা আছে। বিএনপি নেত্রী বেগম জিয়ার পুত্র তারেক রহমানের আশীর্বাদপুষ্ট আসলাম চৌধুরী এখন শুধু আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছেই নন দেশবাসীর কাছেও একজন বড় মাপের আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রকারী হিসেবে চিহ্নিত হয়েছেন। ইসরাইলের ক্ষমতাসীন লিকুদ পার্টির এক নেতার সঙ্গে বৈঠক এবং দেশটির গোয়েন্দা সংস্থা ‘মোসাদ’-এর সঙ্গে আঁতাত করে বাংলাদেশের বর্তমান সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্র করার অভিযোগে গত ১৫ মে ঢাকার খিলক্ষেত থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। এদেশের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্কহীন রাষ্ট্র ইসরাইলের গোয়েন্দা সংস্থা ‘মোসাদ’- এর এজেন্ট মেন্দি এন সাফাদির সঙ্গে গত ৫ থেকে ৯ মার্চ ভারতে অবস্থান করে আসলাম চৌধুরী বৈঠক করেন। তার সচিত্র প্রতিবেদনও বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। এদেশের মানুষ, বিশেষ করে শিক্ষিত শ্রেণীর লোকজন বিদেশী গোয়েন্দা সংস্থা বলতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ‘সিআইএ’ নামটির সঙ্গেই বেশি পরিচিত ছিল। বাংলাদেশের জন্য ভয়ঙ্কর পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা ‘আইএসআই’ নামটিও এদেশের মুক্তিকামী বাঙালী ভাল করেই জানে। সোভিয়েত ইউনিয়নের ‘কেজিবি’ এবং ভারতের ‘র’-এর কথাও অনেকেই কমবেশি অবগত। রাজনীতিতে নতুন কিন্তু কর্মকা-ে দুর্ধর্ষ প্রকৃতির আসলাম চৌধুরীর সৌজন্যে বাংলাদেশের মানুষের কাছে বিশ্বের একমাত্র ইহুদী রাষ্ট্র ইসরাইলের গোয়েন্দা সংস্থা ‘মোসাদ’ নামটি সম্প্রতি বেশ পরিচিতি লাভ করেছে। মোসাদের এই এজেন্টের সঙ্গে বিএনপি নেতা আসলাম চৌধুরীর বৈঠকের খবর প্রকাশ হওয়ার পর সারাদেশে সর্বস্তরের মানুষের মধ্যে কেবল ব্যাপক জল্পনা-কল্পনাই নয়, তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। লজ্জা ঢাকতে মুখে যাই বলুক না কেন, দলটির নেতা-কর্মী-সমর্থকদের মধ্যেও অস্বস্তিকর ভাবও লক্ষ্য করা যাচ্ছে। কর্মী-সমর্থকরাও নেতাদের কাছে জিজ্ঞেস করে দেশব্যাপী নিন্দার ঝড় তোলা বিষয়টি সম্পর্কে তেমন কিছুই জানতে পারছে না। এই অভাবনীয় পরিস্থিতি সামাল দিতে দলটির উচ্চ পর্যায় থেকেও নানামুখী তৎপরতা চালানো হচ্ছে। সঙ্গত কারণেই সরকার ও আওয়ামী লীগের তরফ থেকে রাজনৈতিকভাবে এই সুবর্ণ সুযোগের সদ্ব্যবহারের কোনরূপ ত্রুটি করা হচ্ছে না। আর এটাই স্বাভাবিক। তাই বিএনপির সঙ্গে ইসরাইলের সম্পর্ক রয়েছে এবং দলটির যুগ্ম-মহাসচিব আসলাম চৌধুরী ঐ দেশটির গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের এজেন্ট মেন্দি এন সাফাদির সঙ্গে রাষ্ট্র ও সরকারবিরোধী চক্রান্তের অংশ হিসেবেই বৈঠক করেছে এ কথা জোর দিয়ে বলা হলেও বিএনপি ও দলটির নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের শরিক দলের পক্ষ থেকে ইসরাইলের সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়টি অস্বীকার করা হচ্ছে। সমগ্র জাতির দৃষ্টি যখন তুমুল তোলপাড় সৃষ্টি করা বিস্ময়কর বিষয়টির ওপর নিবদ্ধ এবং দেশবাসীর ধিক্কার, ঘৃণা ও ক্ষোভে-বিক্ষোভে দলটির নেতৃত্ব হাবুডুবু খাচ্ছে ঠিক তখনই একটি চরম জালিয়াতির আশ্রয় নিয়ে এদেশের মানুষকে বিভ্রান্ত করার ন্যক্কারজনক মিথ্যাচার চালানো হয়। ষড়যন্ত্রের রাজনীতিতে বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া ও তার বড় ছেলে তারেক রহমানের নেতৃত্বে দলটির আরও অনেকে এতটাই পরিপক্ব ও পারদর্শী যে, তাদের জুরি মেলা ভার। সেটি আরও একবার প্রমাণ করল দলটি। ইসরাইলী গোয়েন্দা সংস্থার এজেন্ট মেন্দি এন সাফাদির সঙ্গে তাদের এক নেতার বৈঠক অনুষ্ঠানের কলঙ্কময় অধ্যায়ের কিছুটা গ্লানিমুক্ত করতে এবার বঙ্গবন্ধুর দৌহিত্র এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পুত্র এবং আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন তথ্য ও প্রযুক্তিবিদ সজীব ওয়াজেদ জয়কে নিয়ে নকল ভিডিও করে জালিয়াতির আশ্রয় নেয়ার স্পর্ধাও প্রদর্শন করা হলো। তবে এ কাজটি করতে গিয়ে ফেঁসে গেছে বিএনপি। মোসাদের এজেন্ট মেন্দি এন সাফাদির সঙ্গে বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব আসলাম চৌধুরীর বৈঠকটি ধামাচাপা দেয়ার লক্ষ্যেই জয়ের সঙ্গে সাফাদির ভিডিওটি জালিয়াতি করা হয়। আর এই ন্যক্কারজনক কাজটির নেপথ্য নায়ক হচ্ছে বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার সাবেক উপদেষ্টা জাহিদ এফ সর্দার সাদি। যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী এই ব্যক্তি নকল ভিডিও জালিয়াতি, প্রতারণা, শঠতায় এতটাই পাকা যে, এই ধরনের অপরাধের দায়ে গত নয় বছরে সে ২৭ বার গ্রেফতার হয়েছে। ২০১৫ সালের ৭ মে একটি বেসরকারী অনলাইন সংবাদ মাধ্যমে ‘সেনা প্রশিক্ষণের ভিডিও হলো নির্যাতন দৃশ্য’ ভিডিওটি ফেসবুকে পোস্ট করা হয়। সেনাবাহিনীর কমান্ডো প্রশিক্ষণের ভিডিওটিকে নির্যাতনের ভিডিও বলে ফেসবুকে চালানোর মাধ্যমে দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনী ও জনগণকে সরকারের বিরুদ্ধে উস্কে দেয়ার অপচেষ্টা চালানো হয়। পত্রিকান্তরে প্রকাশিত রিপোর্ট অনুযায়ী এই ভিডিওটি পোস্ট করার পর জানা যায়, এটা বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কমান্ডো ট্রেনিংয়ের একটি দৃশ্য। এই ড্রিল ভিডিওটিকেই সেনাবাহিনীর ওপর নির্যাতনের ভিডিও বলে চালানো হয়, যেটা সর্বৈব মিথ্যা ও অত্যন্ত দুঃখজনক। এই বিষয়ে বিভ্রান্ত না হওয়ার জন্য ও মিথ্যার ফাঁদে পা না দিতে সতর্ক করে দেয়া হয় এবং জাহিদ সর্দার সাদির প্রতারণামূলক ভিডিওটি ফাঁস হয়। ঘটনার অব্যবহিত পরই জয় এবং আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে এই অপকর্মের কড়া প্রতিবাদ জানিয়ে ঘটনা প্রমাণের চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেয়া হয়। কিন্তু বিএনপির কেউ এই চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করে এগিয়ে আসেনি। সম্প্রতি বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে বলা হয়েছে মোসাদের এজেন্টের সঙ্গে বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব আসলাম চৌধুরী ভারতে গিয়ে একাধিক বৈঠক করেছেন। ইসরাইলের সাফাদি সেন্টার ফর ইন্টারন্যাশনাল ডিপ্লোমেসি এ্যান্ড পাবলিক রিলেশনস নামে একটি প্রতিষ্ঠানের প্রধান মেন্দি এন সাফাদির সঙ্গে আসলাম চৌধুরীর একাধিক ছবিও ছাপা হয়েছে। এ বিষয়ে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেছেন, বিএনপি যে ষড়যন্ত্রের সঙ্গে জড়িত এর যথেষ্ট প্রমাণ সরকারের হাতে রয়েছে। উল্লেখ্য, সংবিধান অনুযায়ী বাংলাদেশের কোন নাগরিকের ইসরাইলের সঙ্গে কূটনৈতিক, রাজনৈতিক বা বাণিজ্যিক সম্পর্ক রাখা দ-নীয় অপরাধ। হঠাৎ কূটনৈতিক অঙ্গনে এমন একটি অচিন্তনীয় পরিস্থিতির উদ্ভব হওয়ায় বেগম জিয়ার বিএনপি নতুন করে আবারও রাজনৈতিকভাবে বেশ বেকায়দায়ই পড়েছে বলে পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন। বিষয়টি নিয়ে দলের কিছু সিনিয়র নেতা বিব্রতবোধ করছেন বলে তাদের কথাবার্তায় মনে হচ্ছে। এ কথাটি জোর দিয়েই বলা যায়, চরম বিব্রতকর বিষয়টিতে খালেদা জিয়ারও সায় থাকতে পারে। কারণ, খালেদা জিয়াকে না জানিয়ে আসলাম চৌধুরী এমন দুঃসাহসিক একটি কাজ করবেন এটা বোকায়ও বিশ্বাস করবে না। বিষয়টির সঙ্গে মায়ের চেয়ে লন্ডন প্রবাসী ছেলে আরও বেশি জড়িত থাকতে পারে বলেও অনেকের ধারণা। মেন্দি এন সাফাদি লন্ডনে মি. রহমান নামে যার সঙ্গে কথা বলেছেন তিনিই যে আসলে বেগম জিয়ার বড় ছেলে তারেক রহমান এ বিষয়ে কারও তেমন কোন সন্দেহ আছে বলে মনে হয় না। সঙ্গে সঙ্গে তারা এ কথাটিও স্পষ্ট করে বলছেন যে, বেগম জিয়া তার প্রাণপ্রিয় পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআইকে দিয়ে বর্তমান সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে ব্যর্থ হয়ে তিনি এখন তার ছেলেকে নিয়ে ইহুদী রাষ্ট্র ইসরাইলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের সঙ্গে সখ্যতা গড়ে সরকারকে উৎখাতের অপচেষ্টায় মেতে উঠেছেন। নিজের অপকর্ম ঢাকতে আসলাম চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেছেন, এ বছর ৫ মার্চ ব্যবসায়ী কাজে ভারতে গিয়ে ৯ মার্চ পর্যন্ত অবস্থান করার সময় মেন্দি এন সাফাদির সঙ্গে তার দেখা হয়েছে। ভারতে অন্য একজনের মাধ্যমে সাফাদির সঙ্গে তার পরিচয় হয় বলে তিনি জানিয়েছেন। তারা বিভিন্ন পর্যটন এলাকায় একসঙ্গে কাটান এবং খাওয়া-দাওয়া করেন। কিন্তু কোন বৈঠক করেননি বলে তিনি দাবি করেন। তাই বলতেই হচ্ছে যে, এত কিছু করার পরও আনুষ্ঠানিক বৈঠক করার কি আর প্রয়োজন থাকে? কারণ, প্রয়োজনীয় বিশেষ বিশেষ কথাগুলো বলে ফেলার ও অন্যান্য আনুষঙ্গিক কাজ সম্পন্ন করার জন্য আর কি সময়ের দরকার হয়? আসলাম চৌধুরী নিজেই বলেছেন আগ্রার মেয়র তাকে এবং তার সঙ্গী সাফাদিকে সংবর্ধনা দিয়েছেন। তিনি দাবি করেন যে, মেন্দি এন সাফাদি যে লিকুদ পার্টির নেতা তিনি তা জানতেন না। কথাটি কোন বোকায়ও বিশ্বাস করবে না। সাফাদির সঙ্গে ছবি তোলার বিষয়টি তিনি স্বীকার করেছেন। কিন্তু গণমাধ্যমে ছবি প্রকাশিত হওয়ার ব্যাপারে চরম বিস্ময় প্রকাশ করে তিনি বলেন তাকে ট্র্যাপে ফেলে এটি করা হয়েছে কিনা তাও তিনি জানেন না। তার মতো এত বড় ধুরন্ধর ও ধূর্ত ব্যক্তি এবং আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রকারীকে ট্র্যাপে ফেলে কেউ এ কাজটি করেছে কি-না সে বিষয়েও তিনি সুবোধ বালকের মতো মন্তব্য করেছেন। কারও খেয়ে-দেয়ে আর কাজ নেই যে, ট্র্যাপে ফেলে অহেতুক তাদের ছবি গণমাধ্যমে প্রকাশ করবে! এদিকে ১৪ মে ফিলিস্তিনের চার্জ দ্য এ্যাফেয়ার্স ইউসুফ এসওয়াই রামাদান গুলশানে তাদের দূতাবাসে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বলেছেন, ‘বাংলাদেশের কোন দল ইসরাইলের সঙ্গে বৈঠক করলে তা হবে ঐ দলের রাজনৈতিক আত্মহত্যা।’ ইহুদী রাষ্ট্র ইসরাইলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের একজন এজেন্টের সঙ্গে বিএনপি দলটির একজন বড় নেতার বৈঠকের খবর ও ছবি প্রকাশের পর ঢাকার ফিলিস্তিনী দূতাবাস থেকে বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাওয়া হয়। বিষয়টি সামাল দিতে দলটির একটি প্রতিনিধি দল অত্যন্ত চুপিসারে দূতাবাসে গিয়ে তাদের অবস্থান ব্যাখ্যা করে বলে পত্রিকায় খবর বেরিয়েছে। লায়ন আসলাম চৌধুরীর সঙ্গে আগ্রা ও দিল্লী এলাকায় ইসরাইলের সেন্টার ফর ইন্টারন্যাশনাল ডিপ্লোমেসি এ্যান্ড এ্যাডভোকেসির প্রধান ও ইসরাইলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের এজেন্ট মেন্দি এন সাফাদির বিভিন্ন অনুষ্ঠানে দেখা-সাক্ষাতের বেশ কিছু ছবি প্রথমে ফেসবুকে প্রকাশিত হয়। ছবিতে আসলাম চৌধুরীর সঙ্গে খোশমেজাজে দেখা গেছে মেন্দি এন সাফাদিকে। এক অনুষ্ঠানে তারা দু’জন ফুলের মালাও গ্রহণ করেন। আরেক ছবিতে মেন্দি এন সাফাদি ও এক নারীকেও ফুলের মালা পরে হাসি-খুশি অবস্থায় দেখা গেছে। ঐ জায়গায়ও হাসিমুখে আসলাম চৌধুরীকে দেখা গেছে। গোপন বৈঠকের খবর ফাঁস হওয়ার আগেই সাফাদির মাধ্যমে ইসরাইলের সংবাদ মাধ্যমে বাংলাদেশের কাল্পনিক সংখ্যালঘু নির্যাতনের সচিত্র প্রতিবেদন ছাপানোর ব্যবস্থা করেন আসলাম চৌধুরী। বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার ২০০১ সালে ক্ষমতায় আরোহণ করার পরপরই এদেশে যে নির্মমভাবে নির্বিচারে সংখ্যালঘু নির্যাতন করা হয়েছে এবং তার যে ছবি ছাপা হয়েছে সেটাই আসলাম চৌধুরী আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ঘটেছে বলে সচিত্র প্রতিবেদন তাদের হাতে তুলে দিয়েছেন। দিল্লীতে বাংলাদেশ সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্র করা হয়েছে এবং লন্ডন প্রবাসী মি. রহমানই সেই ষড়যন্ত্রের নেপথ্যের প্রধান নায়ক। ইসরাইলের একটি অনলাইন সংবাদ মাধ্যম জেরুজালেম অনলাইন ডটকমে বাংলাদেশ সম্পর্কে একটি রিপোর্ট প্রকাশিত হয়। বিস্ময়করভাবে সেখানে মেন্দি এন সাফাদি বলেছেন, ‘শীঘ্রই সব ক্ষেত্রে বাংলাদেশের দরজা ইসরাইলীদের জন্য খুলে দেয়া হবে।’ নির্যাতিত মানুষের স্বাধীনতার জন্য কাজ করা একটি নৈতিক দায়িত্ব। সেজন্য আমি এসব লোকের সহায়তার জন্য রয়েছি। বাংলাদেশের নির্যাতনের কাহিনীগুলো সত্যিকারের, ফিলিস্তিনীর মতো বানানো নয়। এখানে মানুষ নিপীড়িত হচ্ছে। কারণ, তারা ভিন্নমতের। আমি গর্বিত যে, অনেক বাংলাদেশী ইসরাইলের প্রতি সহানুভূতিশীল। যদিও বাংলাদেশের নাগরিকদের পাসপোর্টেও লেখা থাকে ইসরাইল ছাড়া সারাবিশ্বে তারা ভ্রমণ করতে পারবে। সেটাও অমি শীঘ্রই পরিবর্তন করতে যাচ্ছি। ইহুদীরা মনমানসিকতায় যে কত খারাপ তা এই ব্যক্তির কথাই আবার প্রমাণিত হলো। ধিক, এই ঘৃণ্য মানসিকতার। ধিক, এই মুখরোচক মানবিক বুলির। কথাটি দৃঢ়কণ্ঠেই বলতে চাই- বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এদেশের মানুষ ঐক্যবদ্ধ হয়ে যে কোন ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করবে। লেখক : সাংবাদিক ও কলামিস্ট
×