ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

বাংলাদেশে বিনিয়োগ করে সমৃদ্ধি ও লভ্যাংশের অংশীদার হোন ॥ প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশিত: ০৫:৪৪, ৬ জুন ২০১৬

বাংলাদেশে বিনিয়োগ করে সমৃদ্ধি ও লভ্যাংশের অংশীদার হোন ॥ প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সৌদি আরবের ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগ, ব্যবসা-বাণিজ্য, সমৃদ্ধি এবং লভ্যাংশের অংশীদার হওয়ার মাধ্যমে কোটি মানুষের জীবনমানের পরিবর্তন আনার প্রচেষ্টায় শরিক হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আমরা ইতোমধ্যেই নিম্ন মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হয়েছি। ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সাল নাগাদ উন্নত সমৃদ্ধ দেশে উন্নীত হওয়ার লক্ষ্যপূরণে আমি সৌদি ব্যবসায়ী এবং উদ্যোক্তা নেতৃবৃন্দকে আমাদের দেশে বিনিয়োগ, ব্যবসা-বাণিজ্য, সমৃদ্ধি এবং লভ্যাংশের অংশীদার হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। সম্মিলিত উদ্যোগের মাধ্যমেই আমরা কোটি মানুষের জীবনমানের পরিবর্তন আনতে পারব।’ প্রধানমন্ত্রী সৌদি আরবে রবিবার সকালে জেদ্দা চেম্বার অব কমার্স এ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (জেসিসিআই) নেতৃবৃন্দের সঙ্গে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকের ভাষণে এ আহ্বান জানান। প্রধানমন্ত্রী বর্তমানে সৌদি বাদশাহ সালমান বিন আব্দুল আজিজ আল সৌদের আমন্ত্রণে পাঁচ দিনের সরকারী সফরে সৌদি আরবে অবস্থান করছেন। খবর বাসস’র। বৈঠকের পর প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন। প্রধানমন্ত্রী সৌদি উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশের শিল্প খাতগুলোর মধ্যে বস্ত্র, চামড়াশিল্প, পাট, সিরামিক, পেট্রো-কেমিক্যাল, ফার্মাসিউটিক্যালস, শিপ বিল্ডিং, কৃষি প্রক্রিয়াজাতকরণ, প্লাস্টিকপণ্য, হালকা প্রকৌশল ও ইলেক্ট্রনিকস, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি, বিদ্যুত, জ্বালানি, পানি এবং মেরিন ও অন্যান্য অবকাঠামো প্রকল্প, হাইটেক ম্যানুফ্যাকচারিং ও মাইক্রো প্রসেসরের মতো প্রকৌশল খাতে বিনিয়োগের আহ্বান জানান। বাংলাদেশের উদার বিনিয়োগ নীতির প্রসঙ্গ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বিদেশী ব্যবসায়ীদের জন্য সরকারের দেয়া সুবিধাদির প্রসঙ্গে বলেন, আইন করে বিদেশী বিনিয়োগকারীদের নিরাপত্তা প্রদান, ট্যাক্স হলিডে, যন্ত্রপাতি আমদানিতে কর রেয়াত, রয়্যালিটির রেমিটেন্স, শতভাগ বিদেশী বিনিয়োগ, অনিয়ন্ত্রিত প্রত্যাহার নীতি, লভ্যাংশ ও পুঁজি দেশে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার সুবিধাসহ অনেক সুযোগ-সুবিধা দেয়া হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী অন্যান্য প্রাপ্ত সুবিধা সম্পর্কে ব্যবসায়ীদের জানান, দেশে পরিশ্রমী এবং তুলনামূলক স্বল্প বেতনে প্রশিক্ষিত জনশক্তির প্রাপ্যতা, স্বল্প খরচে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা, ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ), অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, ভারত, জাপান ও নিউজিল্যান্ডের বাজারে পণ্যের শুল্কমুক্ত ও কোটামুক্ত প্রবেশ সুবিধাÑ প্রভৃতি। বৈঠকে শতভাগ রফতানিমুখী শিল্পের জন্য দেশে প্রায় এক শ’ বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠায় তাঁর সরকারের উদ্যোগের তথ্যও তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। আইটি শিল্পের জন্য সরকারের হাইটেক পার্ক গড়ে তোলার প্রসঙ্গ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁর সরকার তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পের জন্যও বাংলাদেশে একাধিক হাইটেক পার্ক স্থাপন করছে এবং এ অঞ্চলগুলোতে বিনিয়োগ করতে বিদেশী বিনিয়োগকারীদের জন্য বিশেষ প্যাকেজ সুবিধা ঘোষণা করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে তোলার মাধ্যমে দেশকে ক্ষুধা, দারিদ্র্যমুক্ত করার লক্ষ্যে বাংলাদেশ এখন ২০২১ সালের মধ্যে ডিজিটালাইজড জ্ঞানভিত্তিক মধ্যম আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সাল নাগাদ উন্নত সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে গড়ে তোলার পথে রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী তৈরি পোশাক খাতে দেশের ব্যাপক অগ্রগতির প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বলেন, বাংলাদেশ তৈরি পোশাক খাতে (আরএমজি) অভাবনীয় সাফল্য অর্জন করেছে এবং আমরা এখন বিশ্বে দ্বিতীয় বৃহত্তম তৈরি পোশাক রফতানিকারক দেশ। এ শিল্পে বর্তমানে প্রায় ৫০ লাখ শ্রমিক কর্মরত রয়েছেন, যার মধ্যে ৯০ শতাংশই নারী। প্রধানমন্ত্রী বলেন, তৈরি পোশাক খাতের মতোই ফার্মাসিউটিক্যালস, তথ্যপ্রযুক্তি এবং জাহাজ নির্মাণ শিল্পেও আমাদের প্রভূত উন্নয়ন সাধিত হয়েছে। তিনি বলেন, আমাদের ওষুধ শিল্প দেশের শতকরা ৯৭ ভাগ অভ্যন্তরীণ চাহিদা মিটিয়ে বিশ্বের ৯২টি দেশে রফতানি হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, গার্টেনারের মতে- সফটওয়্যার ও আইটি সার্ভিসের জন্য বিশ্বের ৩০টি শীর্ষস্থানীয় দেশের মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। বাংলাদেশের তৈরি হাজারও সফটওয়্যার এ্যাপ্লিকেশন এখন আইফোন, স্যামসাং গ্যালাক্সি এবং ব্ল্যাকবেরি ফোনে ব্যবহৃত হচ্ছে। শেখ হাসিনা বলেন, গত বছর আমাদের আইটি কোম্পানিগুলো এবং ফ্রিল্যান্স আইটি পেশাজীবীরা ৩৬০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার আয় করেছেন। প্রতি বছর প্রায় ২০ হাজার আইটি গ্রাজ্যুয়েট এ খাতে যোগ দিচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের নির্মাতারা বিশ্বমানের হাল্কা ও মাঝারি সামুদ্রিক জাহাজ নির্মাণ করে বিশ্বের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সক্ষম হয়েছেন। এ শিল্পের ২০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের আন্তর্জাতিক বাজারের ১ শতাংশ শেয়ার এখন বাংলাদেশের দখলে।’ প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ এবং সৌদি আরবের মধ্যকার চমৎকার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের কথা উল্লেখ করে বলেন, ‘বাংলাদেশ এবং সৌদি আরবের মধ্যে চমৎকার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক বিদ্যমান। এ সম্পর্ক গড়ে উঠেছে একই ধর্মীয় বিশ্বাস, সংস্কৃতি, মূল্যবোধ এবং পরস্পরের প্রতি আস্থার ওপর ভিত্তি করে। ৭ম শতকে আরব ব্যবসায়ীরা যখন প্রথম বাংলাদেশের বন্দরনগরী চট্টগ্রামে আগমন করেন তখন থেকেই এ বাণিজ্য সম্পর্কের সূচনা।’ তিনি বলেন, ‘সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দুই দেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক ব্যবসা-বাণিজ্যের পরিমাণ অনেকাংশে বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে দুই দেশের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্যের পরিমাণ ২০১৪-১৫ অর্থবছরে এক বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যেতে পারত। দ্বিপাক্ষিক ব্যবসা-বাণিজ্য বৃদ্ধির এখানে ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে।’ এ সময় জেসিসিআই ভাইস চেয়ারম্যান মাজেন এম ব্যাটারজি তাঁর বক্তৃতায় দ্বিপাক্ষিক ব্যবসা-বণিজ্য বৃদ্ধির ওপর গুরুত্বারোপ করেন। সৌদি আরবের ব্যবসায়ীদের জন্য বাংলাদেশ ‘সেকেন্ড হোম’ হতে পারে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘ব্যবসার সুযোগ-সুবিধা খতিয়ে দেখার জন্য জেসিসিআই বাংলাদেশে একটি ব্যবসায়ী দল প্রেরণ করবে।’ সৌদি আরবের ভিশন-২০৩০’র প্রসঙ্গ উল্লেখ করে তিনি বলেন, এ সময়ের মধ্যে আন্তর্জাতিক ব্যবসা-বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধির ওপর গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। দুই দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যের পরিমাণ পর্যাপ্ত নয় উল্লেখ করে জেসিসিআই সহ-সভাপতি বলেন, এর পরিমাণ বাড়ানো প্রয়োজন এবং দুই দেশের ব্যবসায়ীদের এ বিষয়ে একযোগে কাজ করার সুযোগ রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এ সফরের মধ্য দিয়ে দুই দেশের বোঝাপড়া আরও বৃদ্ধি পাবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। এ সময় অন্যান্যের মধ্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এএইচ মাহমুদ আলী, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মোঃ আবুল কালাম আজাদ, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী সালমান এফ রহমান, এফবিসিসিআই সভাপতি আবদুল মাতলুব আহমাদ উপস্থিত ছিলেন। নির্মাণ শিল্পে প্রকৌশলী এবং স্থাপত্যবিদসহ দক্ষ জনশক্তি সরবরাহে বৈঠকে সৌদি আরবের বাওয়ানি গ্রুপ এবং বাংলাদেশের সেনা কল্যাণ সংস্থার মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারকও স্বাক্ষরিত হয়। প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মোঃ আবুল কালাম আজাদ এবং বাওয়ানি গ্রুপের মহাব্যবস্থাপক ফখীর আল সাওয়াফ উভয়পক্ষের পক্ষে স্মারকে স্বাক্ষর করেন। রিয়াদে বাংলাদেশ চ্যান্সেরি ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন ॥ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রিয়াদে বাংলাদেশের চ্যান্সেরি ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনকালে বলেছেন, এ ধরনের একটি দূতাবাস ভবন একটি স্বাধীন দেশের প্রতীক। প্রধানমন্ত্রী এ সময় সমগ্র বিশ্বেই ধাপে ধাপে নিজস্ব দূতাবাস ভবন গড়ে তোলার জন্য তাঁর সরকারের পদক্ষেপের কথাও পুনর্ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, তাঁর সরকার সৌদি আরবে বসবাসকারী প্রবাসী বাংলাদেশীদের উন্নত সেবা প্রদানের লক্ষ্যে জেদ্দায় কনস্যুলেট ভবন নির্মাণ করবে। শনিবার রাতে রয়্যাল কনফারেন্স প্যালেসে এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী রিয়াদে বাংলাদেশের চ্যান্সেরি ভবন ও সৌদি আরবে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতের বাসভবন নির্মাণের ফলক উন্মোচন করেন। প্রবাসী বাংলাদেশীরা সৌদি আরবসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কাজ করে দেশের অর্থনীতি শক্তিশালীকরণে বিশাল ভূমিকা রাখছেন উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী অনুষ্ঠানে বলেন, ‘কাজেই এই প্রবাসীদের সুবিধা-অসুবিধা দেখা সরকারের দায়িত্ব।’ এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশ মিশনে কর্মরত রাষ্ট্রদূতদের ভালভাবে প্রবাসী বাংলাদেশীদের স্বার্থ দেখার নির্দেশ প্রদান করেন। যুক্তরাষ্ট্র, ভারত, পাকিস্তান এবং জাপানে নিজস্ব চ্যান্সেরি ভবন উদ্বোধনের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁর সরকার ’৯৬-২০০১ মেয়াদে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আসার পর অস্ট্রেলিয়াতেও এ ভবন নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছিল। অথচ পরবর্তী সরকার সেখানে ভবন নির্মাণে ব্যর্থ হওয়ায় বাংলাদেশ সেখানে ভবন নির্মাণের জমির প্রায় অর্ধেকটাই হারিয়ে ফেলেছে। প্রধানমন্ত্রী-ওআইসি মহাসচিব বৈঠক ॥ অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কোঅপারেশনের (ওআইসি) মহাসচিব আইয়াদ বিন আমিন মাদানী এনজিও, নারীর ক্ষমতায়ন এবং সামষ্টিক অর্থনীতিতে বাংলাদেশের অভূতপূর্ব সাফল্যের চিত্র বিশ্বের অন্যান্য মুসলিম দেশের কাছে তুলে ধরতে সহযোগিতা কামনা করেছেন। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ এনজিও, নারীর ক্ষমতায়ন এবং সামষ্টিক অর্থনীতিতে ব্যাপক সাফল্য অর্জন করে আন্তর্জাতিক বিশ্বে স্বীকৃতি অর্জন করেছে। এ সাফল্যকে বিশ্বের অন্যান্য মুসলিম দেশের কাছে তুলে ধরার জন্য আমরা বাংলাদেশের বিশেষ করে প্রধানন্ত্রীর কাছে সহযোগিতা চাই।’ ওআইসি মহাসচিব শনিবার সন্ধ্যায় রয়্যাল কনফারেন্স প্যালেসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাত করে এ অনুরোধ জানান। বৈঠকের পর পররাষ্ট্র সচিব মোঃ শহীদুল হক এবং প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন। ব্রিফিংয়ে বলা হয়, প্রধানমন্ত্রী ওআইসি মহাসচিবের অনুরোধের জবাবে বলেন, ওআইসি এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব পাঠালে বাংলাদেশ এ বিষয়ে সহযোগিতায় প্রস্তুত রয়েছে। বৈশ্বিক উন্নয়নে বাংলাদেশের অগ্রণী ভূমিকার ভূয়সী প্রশংসা করে ওআইসি মহাসচিব বলেন, বাংলাদেশের অগ্রগতিতে আশান্বিত হয়ে তাঁর সংস্থা এ বিষয়ে নতুন করে পদক্ষেপ গ্রহণ করছে। ওআইসি মহাসচিব প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশে নারীর ক্ষমতায়নেরও প্রশংসা করে বলেন, তিনি এ বিষয়টি ওআইসিতে আরও বড় আকারে তুলে ধরতে চান। প্রধানমন্ত্রী-আইডিবি প্রেসিডেন্ট ॥ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের তেল আমদানিতে দেয়া ইসলামী উন্নয়ন ব্যাংকের (আইডিবি) স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান ইন্টারন্যাশনাল ইসলামিক ট্রেড ফাইন্যান্স কর্পোরেশনের (আইটিএফসি) সুদের হার আরও হ্রাস করে তা ‘প্রতিযোগিতামূলক’ করার জন্য আইডিবির প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন। আইডিবির ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট ড. আহমেদ তিকতিক শনিবার সন্ধ্যায় রয়্যাল কনফারেন্স প্যালেসে তাঁর সঙ্গে সাক্ষাত করতে এলে প্রধানমন্ত্রী এ অনুরোধ জানান। বৈঠকের পরে পররাষ্ট্র সচিব শহীদুল হক এবং প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের এ কথা জানান। তিনি বলেন, আইডিবি জ্বালানি, গ্রামীণ গৃহায়ণ ও সড়ক প্রকল্পকে অগ্রাধিকার দিয়ে বাংলাদেশে এর কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে। আইডিবির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বলেন, সিডর ও আইলাদুর্গত দেশের দক্ষিণাঞ্চলের ১৩ জেলায় কিং আব্দুল্লাহ ইন্টারন্যাশনাল হিউম্যানেটারিয়ান চ্যারিটেবল ফাউন্ডেশন প্রদত্ত ১৩ কোটি ডলার ব্যয়ে ‘ফায়েল খায়ের’ কর্মসূচীর আওতায় নির্মাণাধীন ১৭৩টি স্কুল কাম সাইক্লোন শেল্টারের মধ্যে ৯০টির কাজ ইতোমধ্যেই শেষ হয়েছে। ড. আহমেদ তিকতিক প্রধানমন্ত্রীকে জানান, আইডিবি আগামী বছরের মধ্যে বাংলাদেশের প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে চিকিৎসাসেবা সহজতর করে তোলার লক্ষ্যে ১০টির মতো মোবাইল ক্লিনিক স্থাপন করবে। আইডিবির ভারপ্রাপ্ত সভাপতিকে বাংলাদেশকে উন্নয়নের মডেল হিসেবে তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ ৭ দশমিক ০৫ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জনের পাশাপাশি এর বাজেট আকার বেশ কয়েকগুণ বাড়িয়েছে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী এএইচ মাহমুদ আলী ও প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মোঃ আবুল কালাম আজাদ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
×