ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

খালেদা ইহুদীদের সঙ্গে মিলে ষড়যন্ত্র করছেন ॥ নাসিম

প্রকাশিত: ০৫:৫৫, ২ জুন ২০১৬

খালেদা ইহুদীদের সঙ্গে মিলে ষড়যন্ত্র করছেন ॥ নাসিম

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে ইহুদীদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে সরকার ও মুসলিম জাহানের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করার অভিযোগ করেছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম। তিনি বলেন, খালেদা জিয়া কোথায় নেমেছেন নিজেও তা বুঝতে পারছেন না। সরকার উৎখাতের জন্য তিনি মুসলিম জাহানের শত্রু ইহুদীদের সঙ্গে হাত মিলিয়েছেন। তাদের ষড়যন্ত্রের থলের বিড়াল বেরিয়ে এসেছে। বুধবার রাজধানীর উত্তরায় কুয়েত মৈত্রী সরকারী হাসপাতালের বহির্বিভাগ চিকিৎসা কার্যক্রম উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্বাস্থ্যমন্ত্রী একথা বলেন। স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডাঃ দীন মোঃ নূরুল হকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য সাহারা খাতুন, স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী জাহিদ মালেক এমপি, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের (স্বাচিপ) সভাপতি অধ্যাপক ডাঃ এম ইকবাল আর্সলান ও মহাসচিব অধ্যাপক ডাঃ এম এ আজিজ, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব বিমান কুমার সাহা প্রমুখ। বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়াকে আগামী ২০১৯ সালের নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নেয়ার পরামর্শ দিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, আরও প্রায় তিন বছর আছে। অপেক্ষা করেন। জ্বালাও-পোড়াও ও হত্যার রাজনীতি ত্যাগ করে গণতান্ত্রিক রাজনীতির পথে আসেন। মোহাম্মদ নাসিম বলেন, বিএনপির রাজনীতি জ্বালাও-পোড়াও ও মানুষ হত্যার রাজনীতি। আর আওয়ামী লীগের রাজনীতি হচ্ছে হাসপাতাল গড়ে তোলার, উন্নয়ন এবং মানুষকে সেবা করার রাজনীতি। স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০০১ সালে কুয়েত মৈত্রী হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করে জনগণের জন্য চিকিৎসার দরজা খুলে দেন। বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতায় এসে এই হাসপাতালে লুটপাট শুরু করেন। একের পর এক মালিকানা বদলের খেলায় মেতে উঠে। সাধারণ মানুষের জন্য এই হাসপাতালের দরজা বন্ধ করে দেয়া হয়। আওয়ামী লীগ এইবার ক্ষমতায় আসার পর এই হাসপাতালকে জনগণের হাতে ফিরিয়ে দিতে আইনী লড়াই শুরু করে। অবশেষে আদালতের নির্দেশে কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালের জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হলো। স্বাস্থ্যমন্ত্রী আরও বলেন, বিএনপি জামায়াতের রাজনীতি থেকে গ্রামের কমিউনিটি ক্লিনিকও রেহাই পায়নি। ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় আসার পর স্বাস্থ্যসেবা সাধারণ মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে কমিউনিটি ক্লিনিক প্রকল্প চালু করে আওয়ামী লীগ সরকার। কিন্তু জনকল্যাণমূলক এই প্রকল্পটিকে ২০০১ সালে বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোট সরকার ক্ষমতায় এসে বন্ধ করে দেয়। প্রকল্পের টাকা অন্য খাতে ব্যয় করে ফেলে। প্রকল্পটি বন্ধ করে দিয়ে দেশে নির্মিত প্রায় ১১ হাজার কমিউনিটি ক্লিনিক ভবনকে গরু-ছাগলের ঘর বানিয়েছিল বিএনপি নেতৃত্বাধীন সরকার। গত মেয়াদে ২০০৯ সালে দায়িত্ব নেয়ার পর আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার আবার সেই বন্ধ প্রকল্প চালু করে। বর্তমানে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবায় বিশ্বের মডেল হয়ে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশের কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রকল্প। ক্লিনিকের সুফল ভোগ করছে দেশের সাধারণ মানুষ। বাড়ির পাশেই বিনামূল্যে মিলছে স্বাস্থ্যসেবা। বর্তমানে প্রতি মাসে ৮০ থেকে ৯০ লাখ মানুষ কমিউনিটি ক্লিনিক থেকে সেবা নেন। বর্তমানে ৮৯৪টি কমিউনিটি ক্লিনিকে স্বাভাবিক প্রসবের ব্যবস্থা চালু হয়েছে। কমিউনিটি ক্লিনিক আজ জনগণের নিকট একটি নির্ভরযোগ্য প্রতিষ্ঠান বলে জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম। বাড়ল প্রায় ২শ’ ৫০ জন সরকারী চিকিৎসক ॥ জনগণ ও রোগীদের অবহেলা না করতে চিকিৎসকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম। চিকিৎসকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, চিকিৎসা একটি মহান ও মানবিক পেশা। নিজেদের মাতা-পিতার সঙ্গে আপনারা যে ধরনের হৃদ্যতাপূর্ণ আচরণ করেন, রোগীদের সঙ্গেও তা করা উচিত। মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়েই দায়িত্ব পালন করতে হবে। বুধবার রাজধানীর বাংলাদেশ মেডিক্যাল এ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) ভবনে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় আয়োজিত ৩৪তম বিসিএস (স্বাস্থ্য) ও বিসিএস (পরিবার পরিকল্পনা) ক্যাডারে কর্মকর্তাদের যোগদান উপলক্ষে ওরিয়েন্টেশন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্বাস্থ্যমন্ত্রী এ আহ্বান জানান। স্বাস্থ্য সচিব সৈয়দ মনজুরুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বিএমএ সভাপতি অধ্যাপক ডাঃ মাহমুদ হাসান ও মহাসচিব অধ্যাপক ডাঃ এম ইকবাল আর্সলান, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের (স্বাচিপ) মহাসচিব অধ্যাপক ডাঃ এম এ আজিজ, স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডাঃ দীন মোঃ নূরুল হক, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব বাসুদেব গাঙ্গুলী প্রমুখ। নতুন নিয়োগপ্রাপ্ত দুই শতাধিক চিকিৎসকদের অভিনন্দন জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, আপনারা গর্বিত মাতা-পিতার সন্তান এবং মানবিক দায়িত্ব পালন করেন। রোগীর জীবন মরণের সঙ্গে আপনাদের দায়িত্বের সম্পৃক্ততা রয়েছে। সাধারণ মানুষ রোগমুক্ত হতে, জীবন বাঁচাতে আপনাদের কাছে যায়। আপনাদের কাছে যারা যায় তাদের অনেকেই চিকিৎসা ও স্বাস্থ্যসেবা গ্রহণের নিয়ম কানুন জানেন না। তাদের কেউ কেউ লিখতে ও পড়তে পারেন না। এমন অবস্থায় আপনারাই তাদের পথপ্রদর্শক হিসেবে সহায়ক ভূমিকা রাখতে পারেন। আপনাদের সদয় আচরণ এ ধরনের রোগীদের অনেক উপকারে আসে। রোগীরাও আত্মতৃপ্তি নিয়ে চিকিৎসা গ্রহণ করতে পারে। আর বিনামূল্যের সরকারী চিকিৎসা ও স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রমও সফল হয়ে উঠতে পারে।
×