ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

নিহত ৩, আহত শতাধিক

বিচ্ছিন্ন সহিংসতা

প্রকাশিত: ০৫:৩২, ৮ মে ২০১৬

বিচ্ছিন্ন সহিংসতা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ইউপি নির্বাচনের চতুর্থ দফায়ও দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষে ৩ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া, ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী ও নরসিংদীর রায়পুরে নির্বাচনী সহিংসতায় ৩ জন নিহত, গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হয়েছে দশজন। এর মধ্যে দুটি ঘটনা ঘটেছে সদস্য প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষকে কেন্দ্র করে। একটি চেয়ারম্যান প্রার্থীদের মধ্যে। কুমিল্লায় নিহত ব্যক্তির নাম তাপস চন্দ্র দাস (৩৫) ও ঠাকুর গাঁওয়ে মাহবুব আলম (১৬) ও নরসিংদীর রায়পুরে হোসেন আলী (৬০)। এছাড়া বিভিন্ন স্থানে সংঘর্ষে আহত হয়েছে শতাধিক। এছাড়াও নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, জামালপুর, কুমিল্লা, মুন্সীগঞ্জ, চট্টগ্রামসহ অনেক এলাকায় কেন্দ্রের বাইরে নির্বাচনী সহিংসতার খবর পাওয়া গেছে। এসব ঘটনায় ফেনী সদরে একজন এসআই গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। মুন্সীগঞ্জে মাথা ফেটেছে এক এএসআইয়ের। নির্বাচনের অনিয়মের অভিযোগ এনে ভোট বর্জন করেছেন বিএনপি ও স্বতন্ত্র অনেক প্রার্থী। এছাড়া কেন্দ্রে জাল ভোট ও অনিয়মের অভিযোগে ৫১টি কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ স্থগিত করতে হয়েছে নির্বাচন কমিশনকে। ভোট গ্রহণ শেষে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী রকিব উদ্দিন বলেছেন, চতুর্থ ধাপের নির্বাচনেও কয়েকটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটেছে। কিছু সংঘর্ষ, হতাহতের ঘটনা ছাড়া সুশৃঙ্খল নির্বাচন হয়েছে। এদিকে চতুর্থ দফায় নির্বাচনে কিছু সহিংসতার ঘটনা ঘটলেও এর বিপরীত চিত্রও পাওয়া গেছে। কমিশনের হিসাব অনুযায়ী ৭ হাজার ৬২ ভোট কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ করা হয়েছে। এর মধ্যে মুষ্টিমেয় কয়েকটি কেন্দ্রের সহিংসতার ঘটনা বাদ দিলে বাকি কেন্দ্রগুলোতে ভোট গ্রহণের তুলনামূলক চিত্র অনেক ভাল ছিল। ভোটাররা লম্ব লাইনে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থেকে ভোট প্রদান করেছেন। সকাল থেকে ভোটার উপস্থিতি ছিল ব্যাপক। অন্য দফার মতো এ দফায় নারী ভোটারের উপস্থিতি ছিল ব্যাপক। নির্বিঘেœ ভোট দিতে পেরেছেন বলে তারা জানিয়েছেন। সংশ্লিষ্ট প্রতিনিধিরা জানান, হাতে গোনা কয়েকটি কেন্দ্রে বাদ দিলে ৭হাজার ৬২ কেন্দ্রের বেশিরভাগ কেন্দ্রেই শান্তিপূর্ণভাবে ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। উৎসবমুখর পরিবেশে ভোটাররা তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পেরেছে। নারী ভোটারদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। শনিবার চতুর্থ দফায় সকাল ৮টা থেকে ভোট গ্রহণ করা হয়। একটানা ৪টা পর্যন্ত ভোট গ্রহণ শেষে গণনা করা হয়। এ উপলক্ষে প্রতিটি নির্বাচনী এলাকায় নেয়া হয় ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা। এর মধ্যে বিভিন্ন কেন্দ্রে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ও তাদেরে সমর্থকদের মধ্যে বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনার বেশিরভাগ ঘটেছে সদস্য প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে। ফেনীর দুটি উপজেলায় বিভিন্ন কেন্দ্রে সংঘর্ষে ১০ জন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও ১৫ জন চুয়াডাঙ্গায় অনিয়মের অভিযোগে আলমডাঙ্গার হারদি ইউনিয়নের একটি কেন্দ্রের প্রিসাইডিং অফিসারকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। চট্টগ্রামের হাটহাজারীর মির্জাপুর ইউনিয়নে ভোট চলাকালে অস্ত্রসহ গ্রেফতার করা হয়েছে মহানগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নুরুল আজিম রনিকে। আগেই সিলমারা ব্যালট পেপার নিয়ে কেন্দ্রে ঢোকার অভিযোগে জামালপুরের বকশীগঞ্জের একটি ইউনিয়নের দুটি ভোট কেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তাকে আটক করেছে পুলিশ। রাতেই ব্যালটে সিল মারা অভিযোগে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে একটি কেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তা ও সহকরী প্রিসাইডিং কর্মকর্তাসহ চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এছাড়া কুষ্টিয়া সদরে একটি ভোট কেন্দ্রে সিলমারা ১ হাজার ৩২৮টি ব্যালট পেপার পাওয়ায় রিটার্নিং কর্মকর্তা ও ওই কেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তাকেও প্রত্যাহার করে নেয়া হয়েছে। এদিকে ভোট গ্রহণের চারঘণ্টা পর পরিরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে ঢাকার শেরেবাংলা নগরে নির্বাচন কমিশন বৈঠকে বসে। বৈঠকে নির্বাচন কমিশনার আবু হাফিজ বলেন, চতুর্থ ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন তুলনামূলক ভাল হয়েছে। আমরা চেয়েছিলাম অনিয়মের কোন অভিযোগ যাতে না ওঠে। একটি কেন্দ্রেও যাতে ভোট বন্ধ করতে না হয়। অথচ তা ঘটছে কিছু এলাকায়। তিনি বলেন, যেখানে প্রভাব খাটানোর অভিযোগ আসছে সেখানেই ভোট বন্ধ করা হয়েছে। তবে নির্বাচনে অনিয়ম ও কেন্দ্র দখলের অভিযোগে কোন কোন কমিশনারকে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। একজন কমিশনার নাম না প্রকাশ করার শর্তে বলেন, ইতোমথ্যে বিভিন্ন অভিযোগে অনেক ভোট কেন্দ্র বন্ধ করে দিতে হয়েছে। এখনও অনেক অভিযোগ আসছে। খুব খারাপ অবস্থা। কেন্দ্র দখল করে নেয়ার অভিযোগ কোনভাবেই মেনে নেয়া হবে না উল্লেখ করেন। ইসির নির্বাচন পরিচালনা শাখার উপ সচিব ফরহাদ আহাম্মদ খান জানান, বরাবরই ইউপি নির্বাচনে প্রার্থী সমর্থকদের মধ্যে কিছুটা গোলযোগ হয়ে থাকে। এ ধাপে অপেক্ষাকৃত কম হচ্ছে। যেখানে প্রভাব খাটানোর অভিযোগ আসছে সেখানেই ভোট বন্ধ করা হয়েছে। কমিশনের প্রতিক্রিয়া ॥ এদিকে চতুর্থ দফায় ভোট গ্রহণ পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী রকিবউদ্দীন আহমেদ বলেন, চতুর্থ ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে বিরাট সংখ্যক ভোটারের ভোটদানের মধ্য দিয়ে ৭০৩টি ইউপিতে ভোটগ্রহণ হয়েছে। নির্বাচনে কালবৈশাখী ঝড়সহ বৃষ্টি হওয়ার কারণে ভোটারদের কষ্ট হয়েছে। তবে আমরা দেশব্যাপী নির্বাচন মনিটরিং করেছি। টিভির খবর মনিটরিং করেছি। এছাড়া বিভিন্ন মাধ্যম থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। এতে সংঘর্ষ-গোলযোগ কিছুটা কমেছে। সামনের দুই ধাপে কোন গোলযোগ ছাড়াই সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হবে। বিএনপির অভিযোগ ॥ বিএনপির পক্ষ থেকেও চতুর্থ দফায় নির্বাচনে ভোটকেন্দ্র দখল করে ক্ষমতাসীনদের বিরুদ্ধে ভোট জালিয়াতির অভিযোগ করা হয়েছে। শনিবার নির্বাচন শেষে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খানের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল প্রধান নির্বাচন কমিশনারের কাছে নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগ করেন। পরে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘নির্বাচন এখন এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে মানুষ এই নির্বাচন’ শব্দটাকে আর সম্মানের চোখে দেখবে না। তিনি বলেন, নির্বাচন গণতন্ত্রের বাহক। নির্বাচন নষ্ট হলে গণতন্ত্র নষ্ট হয়ে যায়। এখন যেভাবে নির্বাচন হচ্ছে তাতে নির্বাচন শব্দটা গালি হয়ে যাচ্ছে। তিনি বলেন, প্রতিবার নির্বাচনে যা যা ঘটেছে তা সিইসিকে জানানো হয়েছে। তাঁর আশ্বাসে বিএনপি পরিবর্তন আশা করেছিল। কিন্তু ঘটনার কোন পরিবর্তন হয়নি। জুলুম, নির্যাতন, হত্যা, কারচুপি, ব্যালট বাক্স ছিনতাই অব্যাহত আছে। প্রতিবারই সিইসি কথা দিয়েছিলেন এসব ঘটনার বিচার হবে। নির্বাচন এমন একটা পর্যায়ে পৌঁছেছে যে মানুষ এখন নির্বাচন শব্দটাকে সম্মানের চোখে দেখবে না। বিএনপি প্রতিরোধ করার চেষ্টা করবে। কেননা আগের চেয়ে নির্বাচনী পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। সারাদেশে চতুর্থ দফায় ভোটের চিত্র : কুমিল্লা ॥ ধাওয়া পাল্টাধাওয়া, ককটেল বিস্ফোরণ, জাল ভোট প্রদানসহ বিচ্ছিন্ন সহিংসতার মধ্য দিয়ে শনিবার কুমিল্লার ৪ উপজেলার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এসময় জেলার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলায় এক মেম্বার প্রার্থীর কর্মীকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। জাল ভোট প্রদানে সহায়তার অভিযোগে ৪ জন প্রিসাইডিং অফিসার আটকসহ ৮টি কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ স্থগিত করা হয়েছে। ভোটে নানা অনিয়মের অভিযোগে বিএনপি, আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী, ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলন বাংলাদেশ ও স্বতন্ত্র প্রার্থীসহ বিভিন্ন দলের ১৮ জন চেয়ারম্যান প্রার্থী নির্বাচন বর্জন করেছেন। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শনিবার সোয়া ১০টার দিকে জেলার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার মাধবপুর ইউনিয়নের উত্তর চান্দলা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের বাইরে আওয়ামী লীগ সমর্থিত ২ মেম্বার প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকদের মাঝে সংঘর্ষ ও ধাওয়া পাল্টাধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ সময় এক মেম্বার প্রার্থীর সমর্থক তাপস চন্দ্র দাসকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে গুরুতর আহত করা হয়। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে ব্রাহ্মণপাড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। নিহত তাপস চন্দ্র দাস (৩৫) চান্দলা গ্রামের কানু চন্দ্র দাসের পুত্র এবং সে পেশায় রাজমিস্ত্রি ছিল। নরসিংদী ॥ ব্যাপক কারচুপি, জাল ভোট প্রদান, প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে হোসেন আলী (৬০) নামে এক ব্যক্তি নিহত, ১০ বাড়ি ঘরে হামলা ভাংচুর ও লুটপাটের ঘটনার মধ্যে রায়পুরা উপজেলার ২৩ ইউনিয়নে শনিবার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। নির্বাচনে অনিয়মের কারণে অলিপুরা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র ও মির্জানগর ইউনিয়নের শান্তিনগর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ স্থগিত করা হয়েছে। ভোট চলাকালে রায়পুরা উপজেলার দুর্গম চর এলাকা পাড়াতলী মধ্যনগর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থক হোসেন আলী (৬০) ভোট প্রদান করতে যায়। এ সময় প্রতিপক্ষ নৌকা প্রতীকের সমর্থকরা তাকে নৌকায় ভোট দিতে বললে তিনি ক্ষিপ্ত হন। এ সময় কথাকাটাকাটির এক পর্যায়ে প্রতিপক্ষরা তাকে টেঁটাবিদ্ধ করে। পরে রায়পুরা উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। এ খবর গ্রামে ছড়িয়ে পড়লে হোসেন আলীর স্বজনরা প্রতিপক্ষের ১০ বাড়ি ঘরে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাংচুর ও লুটপাট করে । রায়পুরা থানার ওসি মোঃ আজহারুল ইসলাম ঘটনাটি নিশ্চিত করেছেন। এ ছাড়া মেঘনা বিধৌত নরসিংদী জেলার দুর্গম চরএলাকা রায়পুরা উপজেলার শ্রীনগর ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী রিয়াজ মোর্শেদ খান ও স্বতস্ত্র প্রার্থী আসাদুজ্জামান আযানের সমর্থকদের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ঠাকুরগাঁও ॥ জেলার বালিয়াডাঙ্গী পাড়িয়া ইউনিয়নের মাছখুড়িয়া কালডাঙা দাখিল মাদ্রাসা কেন্দ্রে ভোট কেন্দ্র দখল ও ব্যালট পেপার ছিনতাইয়ের চেষ্টা ও হামলার সময় পুলিশের গুলিতে মাহবুব আলম (১৬) নামে এক কিশোর গুলিবিদ্ধ হয়ে নিতহ হয়েছে। এ ঘটনায় দুইজন গুলিবিদ্ধ হয়ে ২ জন ও পৃথক ঘটনায় ১৪ জন আহত হয়। তাদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রিসাইডিং অফিসার মজিবর রহমান জানান, বেলা আড়াইটার পর সাধারণ আসনের মেম্বার প্রার্থী গিয়াস উদ্দিনের লোকজন প্রতিপক্ষ আলম মেম্বারের লোকজন জাল ভোটের অভিযোগ করেন। এক পর্যায়ে তারা দেশী অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে ভোটকেন্দ্রে হামলা চালায় এবং কেন্দ্র দখলের চেষ্টা করে। কেন্দ্রের নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত পুলিশ তিন রাউন্ড গুলিবর্ষণ করে। এতে মাহবুব আলম (১৬), আজিজুর রহমান (৩০)সহ তিনজন গুলিবিদ্ধ হয়। বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা হাসপাতালে নেয়ার পর মাহবুব আলম মারা যায়। এছাড়া এ উপজেলায় পৃথক কয়েকটি কেন্দ্রে সংঘর্ষের ঘটনায় ১৪জন আহত হয়। চাঁদপুর ॥ মতলব দক্ষিণ ও শাহরাস্তি উপজেলার ১০ ইউনিয়নের নির্বাচনে কয়েকটি স্থানে চেয়ারম্যান প্রার্থী ও মেম্বার প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে আহত হয়েছে কমপক্ষে ৩০জন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ ৪০ রাউন্ড শর্টগানের ফাঁকা গুলি নিক্ষেপ করেছে। ফেনী ॥ সদরের ৪টি ইউনিয়ন ও ছাগলনাইয়া উপজেলায় ৫টি ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে পুলিশের এসআই মোঃ ইয়াছিনসহ ২৫ জন আহত হয়েছে। এদের মধ্যে গুলিবিদ্ধ ৮জনকে ফেনী সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। পুলিশ বিভিন্ন স্থান থেকে ২০ জনকে আটক করেছে। নির্বাচনে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দুইজনকে একমাসের কারাদ- দিয়েছেন। ফেনী সদর উপজেলার তিনটি ইউনিয়নের বিএনপি সমর্থিত প্রার্থীরা সকাল ১১টার মধ্যে কেন্দ্রদখল ও জালভোটের অভিযোগে ভোটবর্জন করে পুনর্নির্বাচন দাবি করেছে। লক্ষ্মীপুর ॥ লক্ষ্মীপুরে পৃথক মেম্বার প্রার্থীদের সমর্থকদের মধ্যে ধাওয়া পাল্টাধাওয়া ও সংঘর্ষে আহত হয়েছে অন্তত ২৬ জন। শনিবার সকাল ১০টা থেকে দুুপুর পর্যন্ত জাল ভোট দেয়া ও ভোটারদের প্রভাবিত করাকে কেন্দ্র করে লক্ষ্মীপুর সদরের টুমচর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ও রায়পুরের বামনী ইউনিয়নের আল আমীন সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে পৃথকভাবে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। মুন্সীগঞ্জ ॥ ব্যালট পেপার ছিনতাইয়ের ঘটনায় তিনটি ভোট কেন্দ্র বাতিল করা হয়েছে। সংঘর্ষে পুলিশসহ আহত হয়েছে ৫ জন। বিভিন্ন মেয়াদে কারাদন্ড দেয়া হয়েছে ১০ জনকে। টঙ্গীবাড়ির উপজেলাটির যশলং ইউপির সেরাজাবাদ প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে বেলা ১২ টার এবং টুনিসার নয়াদিঘিরপাড় প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে বেলা ৩টায় সরকারী প্রিসাইডিং অফিসারকে মারধর করে ব্যালট পেপার ছিনতাই করে। বেলা ১১টার সদর উপজেলার রামপাল ইউপির কাজী কসবা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে সরকারী প্রিসাইডিং অফিসারকে মারধর করে ব্যালট পেপার ছিনতাই করে। পরে নির্বাচন কমিশনের পরামর্শ অনুযায়ী কেন্দ্র দুটি স্থগিত করা হয়। ব্রাহ্মণবাড়িয়া ॥ বিছিন্ন ঘটনার মধ্যদিয়ে আখাউড়া ও বিজয়নগরের ১৫ ইউনিয়নে ৪র্থ ধাপে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ভোটগ্রহণ চলছে। বিভিন্ন স্থানে পৃথক সংঘর্ষে ২৫ জন আহত হয়েছে। সকাল ১১টায় বিজয়নগর উপজেলার আদমপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে ২ দল মেম্বার সমর্থকদের মধ্যে ধাওয়া পাল্টাধাওয়া হয়। পরে পুরো এলাকায় সংঘর্ষ ছড়িয়ে পরে। চেয়ারম্যান ও মেম্বার প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে অন্তত ১০/১৫ জন আহত হয়েছে। ভোটকারচুপির অভিযোগ এনে আখাউড়ার ৩জন ও বিজয়নগরের ৩জন চেয়ারম্যান প্রার্থী নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেন।
×