ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

ফাইনালে চট্টগ্রাম আবাহনী

প্রকাশিত: ০৬:৪০, ৫ মে ২০১৬

ফাইনালে চট্টগ্রাম আবাহনী

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ আক্ষেপে পুড়লো ‘বেঙ্গল ব্লুজ’ খ্যাত শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্র লিমিটেড। ম্যাচে আগে এগিয়ে গিয়ে টাইব্রেকার নামক ভাগ্য পরীক্ষায় হারতে হলো তাদের। বুধবার বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ‘কেএফসি স্বাধীনতা কাপ’ ফুটবলের দ্বিতীয় সেমিফাইনালে শ^াসরুদ্ধকর ম্যাচে তাদের ৪-২ গোলে হারিয়েছে ‘বন্দরনগরীর দল’ খ্যাত চট্টগ্রাম আবাহনী লিমিটেড। নির্ধারিত সময়ে (১২০ মিনিট) উভয় দল ড্র করে ১-১ গোলে। এ জয়ে আগামী শনিবার অনুষ্ঠিতব্য ফাইনালে নাম লেখালো চট্টলার দলটি। সেখানে তারা মুখোমুখি হবে আরেক আবাহনীর (ঢাকা আবাহনী লিমিটেড)। ম্যাচটি দেখতে গ্যালারিতে হাজির হয়েছিলেন হাজার তিনেক ফুটবলপ্রেমী। ম্যাচে উভয়দলই খেলেছে তাদের সাধ্যমতো। আক্রমণ আর প্রতি আক্রমণে দুই দলই ব্যতিব্যস্ত রেখেছে পরস্পরকে। তাতে উভয়দলই সফল সমানভাবে। নক-আউট স্টেজ। তাই ৯০ মিনিটেও যখন খেলার ফলের নিষ্পত্তি হলো না, তখন ম্যাচ গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে। ৩০ মিনিটের সেই লড়াইয়েও কেউ গোল করতে পারেনি। যদিও ওই সময়ে উভয় দলই একাধিক গোল প্রচেষ্টা কাজে লাগাতে পারেনি। ১২০ মিনিটের খেলা শেষ হলে রেফারি আজাদ রহমান উভয় দলকে টাইব্রেকারে অংশ নেয়ার আমন্ত্রণ জানান। শেষমেষ এই ভাগ্য পরীক্ষাতেই নিষ্পত্তি হয় ম্যাচের ফল, যাতে জয়ী হয় চট্টগ্রাম আবাহনীই। টাইব্রেকারে রাসেলের হয়ে গোল করেন ফিকরু ও ভ্যালেরি। মিস করেন মিঠুন (তার গড়ানো শট পোস্টের বাইরে দিয়ে চলে যায়, যদিও গোলরক্ষক বিপরীত দিকে ডাইভ দেন) এবং শাহেদ (শট আটকে দেন গোলরক্ষক রানা)। পক্ষান্তরে টাইব্রেকারে আবাহনীর হয়ে গোল করেন জানাবি, এ্যালিসন, প্রিয়ক্স এবং জাহিদ। অধিনায়ক-উইঙ্গার জাহিদ হোসেন গড়ানো শটে গোল করলে জয় নিশ্চিত হয় চট্টগ্রাম আবাহনীর। ফলে ফাইনালে যাবার আনন্দে মাতোয়ারা হয় জোসেফ প্যাভলিকের শিষ্যরা। এই জয় যেমন চট্টগ্রাম আবাহনীর জন্য মহাআনন্দের, তেমনি শেখ রাসেলের জন্য মহাযন্ত্রণার। আইনী জটিলতায় তাদের হয়ে এই আসরে খেলতে পারেনি মামুনুল, নাসিরসহ গুরুত্বপূর্ণ পাঁচ ফুটবলার। গ্রুপ ম্যাচে তারা মোহামেডানের কাছে ৫-১ গোলে হেরে খাবি খেয়েছে। ফলে গ্রুপসেরা হতে পারেনি। গ্রুপ রানার্সআপ হয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছে। পক্ষান্তরে আইনী জটিলতায় রাসেলও সার্ভিস পায়নি তাদের দুই ফুটবলারের। তারপরও তারা গ্রুপসেরা হয়ে সেমিতে ওঠে। কিন্তু সেমির ম্যাচে আগে গোল করেও সেই গোলের লিড ধরে রাখতে পারেনি। টাইব্রেকারে হেরে স্বপ্নভঙ্গ হয় এই আসরের ২০১২ সালের শিরোপাধারীদের। চট্টগ্রাম আবাহনী এই প্রথমবারের মতো এই আসরের ফাইনালে নাম লেখালো। গত বছরের অক্টোবরে চট্টগ্রামে আয়োজিত ‘শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্লাব কাপ ফুটবল’ আসরের শিরোপা জিতে চমক সৃষ্টি করে তারা। এবার স্বাধীনতা কাপের শিরোপা জিতে সাফল্যের ধারা অব্যাহত রাখতে চায় দলটি। মজার ব্যাপার হচ্ছে এই আসরের ফাইনালে উঠতে ব্যর্থ হয়েছে দুই গ্রুপসেরা শেখ জামাল ধানম-ি এবং শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্র! ৪ মিনিটে চট্টগ্রাম আবাহনীর অধিনায়ক জাহিদ হোসেন বল নিয়ে চলে এসেছিলেন শেখ রাসেলের বক্সের কাছে। কিন্তু তাকে ডিফেন্ডার ইকাঙ্গা বাধা দিতে গিয়ে ফেলে দেন। ফ্রি কিকের বাঁশি বাজান রেফারি। তারিক আল জানাবি শট নিলে রাসেলের রক্ষণ দেয়ালে লেগে ফেরত আসে বল। ১২ মিনিটে শাখাওয়াত রনি ডানপ্রান্ত থেকে ঢুকে শট নিলেও বল সহজেই গ্রিপে নেন চট্টগ্রাম আবাহনীর গোলরক্ষক আশরাফুল ইসলাম রানা। ৩৬ মিনিটে ফ্রি কিক পেয়েছিল রাসেল। বক্সের কাছে আতিকুর রহমান মিশু ফ্রি কিক নিলেও তা ব্যর্থ হয় আবাহনীর রক্ষণে। প্রথমার্ধের ইনজুরি টাইমে রনির শট গোলরক্ষক ডাইভ দিয়ে ফেরাতে যান, কিন্তু হাওয়ায় ভেসে থাকা বলে চমৎকারভাবে লাফিয়ে হেডে চট্টগ্রাম আবাহনীর জালে পাঠান ইথিওপিয়ান ফরোয়ার্ড ফিকরু তেফেরা (১-০)। ৬৯ মিনিটে ম্যাচে সমতা আনে আবাহনী। ডানপ্রান্ত থেকে হাইতিয়ান ফরোয়ার্ড লিওনেল সেইন্ট প্রিয়ক্সের শট ক্রস বারে লেগে ফেরত আসলে ফিরতি বলে প্লেসিং শটে বল জালে পাঠান ফরোয়ার্ড রুবেল মিয়া (১-১)। এরপর আর গোল আদায় করে নিতে পারেনি দু’দলের একটিও। ফলে নির্ধারিত ৯০ মিনিটে অমীমাংসিত ফলেই শেষ হয় ম্যাচটি।
×