ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

পাঠ্যবইয়ে আরও ইতিহাস চর্চার ওপর গুরুত্ব আরোপ আনিসুজ্জামানের

প্রকাশিত: ০৪:২৭, ১ মে ২০১৬

পাঠ্যবইয়ে আরও ইতিহাস চর্চার ওপর গুরুত্ব আরোপ আনিসুজ্জামানের

বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার ॥ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এমেরিটাস অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামান বলেছেন, এটা ভাবতে দুঃখ লাগে যে, বাংলাদেশের স্কুল পর্যায়ে ইতিহাসের অংশ খুবই সামান্য। ইতিহাস শেখার যে গুরুত্ব তা মাধ্যমিক পর্যায়েই গড়ে তোলা প্রয়োজন। তা না হলে পরবর্তী পর্যায়ে ইতিহাস চর্চা দুর্বল হতে বাধ্য। মাধ্যমিক পর্যায়ে ইতিহাসের পঠন-পাঠনের যে অংশ তা বাড়ানো দরকার। শনিবার দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) মিলনায়তনে বাংলাদেশ ইতিহাস পরিষদের সুবর্ণ জয়ন্তী, দ্বিবার্ষিক জাতীয় ইতিহাস সম্মেলন এবং সাধারণ সভার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। অধ্যাপক আনিসুজ্জামান বলেন, বাংলাদেশের ইতিহাস চর্চার ক্ষেত্রে অপেক্ষাকৃত স্বল্পক্ষেত্র নিয়ে কাজ করতে দেখা যাচ্ছে। আমরা বৃহৎ পরিসরের ইতিহাস পর্যালোচনা না করে আঞ্চলিক ইতিহাসের দিকে মনোযোগ দিচ্ছি। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস আমাদের ইতিহাস চর্চার উল্লেখযোগ্য অংশ। সেখানেও আমরা আঞ্চলিক ইতিহাস বা প্রাতিষ্ঠানিক ইতিহাস এগুলো লেখার চেষ্টা করছি। এসবই আমাদের সামগ্রিক ইতিহাস চর্চাকে গুরুত্ব দিচ্ছে এবং সমৃদ্ধ করছে। আমাদের অতীত ভবিষ্যতে চলার প্রেরণা দেয়। আমরা সব সময় অতীতের পর বর্তমান এবং ভবিষ্যৎকে নির্মাণ করতে চাই। কাজেই সেই ভিত্তিটাকে আমাদের ভাল করে ধরে রাখতে হবে। এর বাইরে ইতিহাসবিদ ও গবেষকদেরও তাদের সাধ্যমত ইতিহাস চর্চায় এগিয়ে আসতে হবে। বাংলাদেশের পাঠ্যবইয়ে ইতিহাস চর্চা আরও গুরুত্ব পাবে বলেও তিনি আশা প্রকাশ করেন। অনুষ্ঠান সভাপতির বক্তব্যে সংগঠনের সভাপতি জাতীয় অধ্যাপক ড. সুফিয়া আহমেদ বলেন, নানা প্রতিকূল পরিস্থিতি মোকাবেলা করে ইতিহাস পরিষদ অব্যাহতভাবে বাংলা ভাষায় ইতিহাস চর্চা ও গবেষণা করে যাচ্ছে। এটি শুধু বাংলাদেশে নয় বরং বাংলা ভাষায় ইতিহাস চর্চার প্রথম সংগঠন। কেবল বাংলা ভাষায় ইতিহাস চর্চাকারী আর দ্বিতীয় কোন প্রতিষ্ঠান আছে কি না তা জানা নেই বলে মন্তব্য করেন অধ্যাপক সুফিয়া আহমেদ। স্বাগত বক্তব্যে সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. ছিদ্দিকুর রহমান খান বলেন, ইতিহাস পরিষদ কেবল মাতৃভাষায় ইতিহাস চর্চাকেই গুরুত্ব দেয়নি, মাতৃভাষায় ইতিহাস চর্চা ও গবেষণার মাধ্যমে বাংলা ভাষার উৎকর্ষ বিধানেরও চেষ্টা করেছে। আর এটি নিঃসন্দেহে এ ধরনের প্রতিষ্ঠানের ব্যতিক্রমী প্রয়াস হিসেবেই বিবেচনার দাবি রাখে। ইতিহাস গবেষণা পরিষদ বিগত ৫০ বছরে এ প্রতিষ্ঠানটি ইতিহাস বিষয়ক নানা কার্যক্রম ও প্রকল্প হাতে নিয়েছে বলে জানান তিনি।অনুষ্ঠানে প্রতিষ্ঠান হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে এবং ২২ বিশিষ্ট ব্যক্তিকে ইতিহাসে অসামান্য অবদান রাখার স্বীকৃতিস্বরূপ সম্মাননা দেয়া হয়। এছাড়া গত তিন বছরে প্রকাশিত ইতিহাস সংশ্লিষ্ট তিনটি বইকে পুরস্কৃত করা হয়।
×