ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

বগুড়ায় জেএমবি সদস্য অত্যাধুনিক অস্ত্রসহ গ্রেফতার

প্রকাশিত: ০৬:০৬, ২৮ এপ্রিল ২০১৬

বগুড়ায় জেএমবি সদস্য অত্যাধুনিক অস্ত্রসহ গ্রেফতার

স্টাফ রিপোর্টার, বগুড়া অফিস ॥ শাজাহানপুরে একটি বাড়ি থেকে ডিবি পুলিশ অত্যাধুনিক স্বয়ংক্রিয় একে-২২ বোরের একটি রাইফেল, একটি বিদেশী পিস্তল ও ৫২ রাউন্ড গুলিসহ আব্দুল মোমিন (২৫) নামে জেএমবির এক সক্রিয় সদস্যকে গ্রেফতার করেছে। সে জেএমবির ইসাবা বা কতল গ্রুপের সদস্য। মঙ্গলবার গভীর রাতে মধ্য কামারপাড়া এলাকায় ওই জেএমবি সদস্যের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে পুলিশ অস্ত্র ও গুলিসহ তাকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকৃত জেএমবি সদস্য বগুড়া সরকারী আজিজুল হক কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। উদ্ধারকৃত অস্ত্র গত বছরের নবেম্বরে শিবগঞ্জে শিয়া মসজিদে হত্যাকা-ে ব্যবহার করা হয়েছিল বলে পুলিশ জানিয়েছে। এই জঙ্গী সদস্যকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ বুধবার ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করলে আদালত ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে। পুলিশ জানায়, শাজাহানপুরের মধ্য কামারপাড়ার মৃত মোজাহার আলীর ছেলে জেএমবি সদস্য মোমিন আরও কয়েক জঙ্গীকে নিয়ে বাড়িতে অবস্থান করছেÑ গোপন সূত্রে এমন খবর পেয়ে ডিবি পুলিশের একটি বিশেষ টিম সেখানে অভিযান চালায়। এ সময় সেখান থেকে একটি অত্যাধুনিক একে-২২ বোরের বিদেশী রাইফেল ও রাইফেলের ৩টি ম্যাগাজিনসহ ২৮ রাউন্ড গুলি এবং ২৪ রাউন্ড গুলিসহ একটি বিদেশী পিস্তল উদ্ধার করে টিমের সদস্যরা। এ ব্যাপারে অস্ত্র আইনে মামলা দায়ের হয়েছে। পুলিশের ধারণা সেখানে জেএমবি সদস্যরা সমবেত হয়ে কোন নাশকতার পরিকল্পনা করছিল। পুলিশের অভিযানের আগেই অন্য জঙ্গীরা পালিয়ে যায়। অস্ত্র উদ্ধার এবং জেএমবি সদস্য আটকের ঘটনায় বগুড়া পুলিশ সুপার কার্যালয়ে বুুধবার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে অভিযান ও অস্ত্র উদ্ধারের বিষয়টি তুলে ধরা হয়। পুলিশ সুপার মোঃ আসাদুজ্জামান জানান, গ্রেফতারকৃত মোমিনের কাছ থেকে উদ্ধার হওয়া একে-২২ বোরের স্বয়ংক্রিয় রাইফেলটি বগুড়ার শিবগঞ্জের শিয়া মসজিদে হামলায় ব্যবহার হয়েছিল বলে প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে। গত বছরের নবেম্বরে শিয়া মসজিদে জঙ্গীদের গুলিতে একজন নিহত ও চারজন আহত হয়েছিল। পুলিশ সুপার জানান, উদ্ধারকৃত অস্ত্রের উৎস জানার চেষ্টা চালানো হচ্ছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া যাবে। এজন্য পুলিশ আদালতে ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করে। আদালত ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে। পুলিশ সূত্র জানায়, জেএমবির ইসাবা গ্রুপের সদস্য মোমিন ২-৩ বছর আগে জেএমবিতে যোগ দেয়। শাজাহানপুর এলাকার একটি মসজিদে নামাজ পড়ার সময় প্রথম তার সঙ্গে জেএমবির দুইজন কথা বলে। তার সঙ্গে ১৫-২০ দিন পর পর জেএমবি কথা বলত এবং একপর্যাযে কিছু জিহাদী বই দিয়ে জেএমবিতে যোগ দিতে বলে। জেএমবিতে যোগ দেয়ার পর মোমিন দ্রুত বিশ্বস্ততা অর্জন করে এবং একপর্যায়ে ইসাবা বা কতল গ্রুপের সদস্য হয়ে ওঠে। শিবগঞ্জে শিয়া মসজিদে গুলিবর্ষণের ঘটনাতেও সক্রিয় ছিল বলে পুলিশ সূত্র জানায়। উল্লেখ্য, শিয়া মসজিদে গুলিবর্ষণের মামলায় গ্রেফতারকৃত ও পরে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দেয়া ইয়াছিনের সঙ্গেও শাজাহানপুর থেকে গ্রেফতার হওয়া জঙ্গী মোমিনের সক্রিয় যোগাযোগ ছিল।
×