ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

জিজ্ঞাসাবাদের জন্য শফিক রেহমান ফের রিমান্ডে

প্রকাশিত: ০৫:৩৭, ২৩ এপ্রিল ২০১৬

জিজ্ঞাসাবাদের জন্য শফিক রেহমান ফের রিমান্ডে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একমাত্র পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়কে অপহরণের পর হত্যাচেষ্টার ষড়যন্ত্রের সঙ্গে জড়িত থাকার মামলায় গ্রেফতারকৃত শফিক রেহমানকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আবার পাঁচ দিনের রিমান্ডে পাঠিয়েছে ঢাকার সিএমএম আদালত। ষড়যন্ত্রের সঙ্গে আরও কারা কারা জড়িত সে বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ এবং তথ্য পেতেই বিচারক তাকে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ হেফাজতে রিমান্ডে পাঠান। রিমান্ডে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। জিজ্ঞাসাবাদে বেরিয়ে আসতে পারে জয়কে অপহরণের পর হত্যার মূল পরিকল্পনাকারীদের নাম। শুক্রবার মামলাটির তদন্তকারী কর্মকর্তা গোয়েন্দা পুলিশের সহকারী কমিশনার হাসান আরাফাত প্রথম দফায় পাঁচ দিনের রিমান্ড শেষে শফিক রেহমানকে ঢাকার হাকিম আদালতে হাজির করে আরও সাত দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন। শুনানি শেষে মহানগর হাকিম মাহমুদুর হাসান পাঁচ দিনের হেফাজত মঞ্জুর করেন। আদালত সূত্রে জানা গেছে, রিমান্ড আবেদনে শফিক রেহমানের বাসা থেকে এফবিআইয়ের নথি উদ্ধারের কথা আদালতকে জানিয়ে রিমান্ড আবেদনে বলা হয়, শফিক রেহমান জয়কে অপহরণ করে হত্যার ষড়যন্ত্র করছিলেন। কোন কোন বিএনপি নেতা ওই ষড়যন্ত্রে জড়িত, তা জানতে শফিক রেহমানকে আরও জিজ্ঞাসাবাদ করা প্রয়োজন। প্রসঙ্গত, জয় সম্পর্কিত তথ্য পাওয়ার জন্য এক এফবিআই এজেন্টকে ঘুষ দেয়ার অপরাধে আমেরিকার আদালতে ২০১৫ সালে যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী বিএনপির অঙ্গ সংগঠন জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক সংস্থা নেতা মোহাম্মদ উল্লাহ মামুনের ছেলে রিজভী আহমেদ সিজারের ৩০ মাসের কারাদ- হয়। যুক্তরাষ্ট্রের আদালতে প্রসিকিউশনের নথিতে বলা হয়, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর ছেলেকে ‘অপহরণ, ভয় দেখানো ও ক্ষতি করাই’ ছিল তথ্য সংগ্রহের উদ্দেশ্য। সিজার কিছু তথ্য বাংলাদেশী একজন সাংবাদিককে সরবরাহ করেছিলেন এবং বিনিময়ে প্রায় ৩০ হাজার ডলারও পেয়েছিলেন। ওই ঘটনাটি নিয়ে ২০১৫ সালের ৩১ মে ঢাকার পল্টন থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করে পুলিশ, যা পরে মামলায় রূপান্তরিত হয়। ওই মামলাতেই গত ১৬ এপ্রিল শফিক রেহমানকে গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাঁচ দিনের রিমান্ডে নিয়েছিল ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। রিমান্ডকালেই গত ১৯ এপ্রিল ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার মনিরুল ইসলাম প্রকাশে সাংবাদিকদের জানান, সজীব ওয়াজেদ জয় সম্পর্কে যুক্তরাষ্ট্রের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে সংরক্ষিত তথ্য পেতে ঘুষ লেনদেনের ঘটনায় দ-িতদের সঙ্গে একাধিক বৈঠকের কথা শফিক রেহমান নিজেই স্বীকার করেছেন। ওইদিন শফিক রেহমানের স্বীকারোক্তি মোতাবেক তাকে সঙ্গে নিয়েই তার ১৫ নম্বর ইস্কাটন গার্ডেনের বাসায় অভিযান চালায় ডিবি পুলিশ। অভিযান শেষে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের উপ-কমিশনার মাশরুকুর রহমান খালেদ জানান, বাসা থেকে শফিক রেহমানের নিজের হেফাজতে রাখা সজীব ওয়াজেদ জয় সংক্রান্ত প্রাথমিক কিছু তথ্য, বাড়ি, গাড়ির নম্বর, কোথায় থাকেন, এসব এবং কিছু এফবিআইয়ের গোপন নথি উদ্ধার হয়েছে। ডিবি সূত্র বলছে, শফিক রেহমান রিমান্ডে জানিয়েছেন, এফবিআই এজেন্ট রবার্ট লাস্টিকের কাছ থেকে এ নথিপত্রগুলো যোগাড় করে তিনি নিজের সংরক্ষণে রেখেছিলেন। যুক্তরাষ্ট্রে দ-িত রিজভী আহমেদ সিজার, এফবিআই এজেন্ট রবার্ট লাস্টিক এবং এই দুজনের মধ্যস্থতাকারী লাস্টিকের বন্ধু জোহানেস থ্যালারের সঙ্গে বৈঠকের কথা শফিক রেহমান স্বীকার করেছেন। এ তিনজনই যুক্তরাষ্ট্রের আদালতে দ-িত হন।
×