ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

নির্বাচক হাবিবুল বাশার সুমন

‘জাতীয় দলে খেলতে বাড়তি গুণাবলী প্রয়োজন’

প্রকাশিত: ০৬:৩৯, ১৭ এপ্রিল ২০১৬

‘জাতীয় দলে খেলতে বাড়তি গুণাবলী প্রয়োজন’

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ আর মাত্র ৫ দিন বাকি। এরপর ২২ এপ্রিল থেকে শুরু হয়ে যাবে ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লীগ (ডিপিএল)। সেই সঙ্গে শুরু হয়ে যাবে ক্রিকেটারদের নিজেকে প্রমাণের চেষ্টাও। ভাল কিছু করলে জাতীয় দলে ঢোকার পথ পরিষ্কার হবে। সত্যিই কি তাই হবে? আসলে শুধু ভাল কিছু করলেই হবে না, এক্সট্রা অর্ডিনারি কিছু করতে হবে। এখন দলে ক্রিকেটারের ছড়াছড়ি। আর তাই দলে ঢুকতে হলে অসাধারণ কিছু করা ছাড়া হুট করে জাতীয় দলের জার্সি গায়ে জড়ানোর কোন সুযোগই নেই। এমনটিই জানালেন বিসিবির নির্বাচক কমিটির সদস্য হাবিবুল বাশার সুমন। তিনি বললেন, ‘সবার জন্যই জাতীয় দলের দরজা খোলা। ভাল পারফর্ম করে আসতে হবে। তবে আমরাতো একটি মাত্র লীগ হিসেব করেই দলে কোন ক্রিকেটারকে নিয়ে নেই না। অনেক কিছু ভেবেই নিতে হয়।’ সঙ্গে যোগ করলেন, ‘দলে ঢোকা অবশ্যই সম্ভব। তবে এজন্য এক্সট্রা অর্ডিনারি কিছু করতে হবে। কেউ যদি ৩-৪টি সেঞ্চুরি করে ফেলে, তাহলে তো তাকে নিয়ে ভাবতেই হবে।’ সর্বশেষ দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টেস্ট খেলেছে বাংলাদেশ। গতবছর জুলাইয়ে হয়েছে সিরিজটি। এরপর আর বাংলাদেশ দল টেস্ট খেলেনি। সামনে আগস্টে ভারতের বিপক্ষে একটি টেস্ট ম্যাচ হওয়ার কথা রয়েছে। সেই ম্যাচটি ইতিহাস রচনা করবে। প্রথমবারের মতো ভারতে গিয়ে টেস্ট খেলবে বাংলাদেশ। এমন ম্যাচে সবাই চাইবে দলের সঙ্গী হতে। কিন্তু ক’জন সেটা পারবে? দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজে যে দলটি ছিল, সেই দল থেকে বাদ পড়া ক্রিকেটারদের সংখ্যাও নজরে কারোরই পড়ছে না। দলটিতে টেস্ট অধিনায়ক মুশফিকুর রহীম, সহ-অধিনায়ক তামিম ইকবাল, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, ইমরুল কায়েস, জুবায়ের হোসেন লিখন, লিটন কুমার দাস, মোহাম্মদ শহীদ, নাসির হোসেন, মুস্তাফিজুর রহমান, মুমিনুল হক, সাকিব আল হাসান ও তাইজুল ইসলাম ছিলেন। তারা দুই টেস্ট ম্যাচের সিরিজে খেলেছেনও। সৌম্য সরকার দলে থাকলেও টিম কম্বিনেশনের কারণে একাদশে সুযোগ পাননি। একাদশে থাকেননি রুবেল হোসেনও। যারা খেলেছেন, তাদের মধ্য থেকে সবাই কমবেশি নৈপুণ্য দেখিয়েছেন। তাই কাউকে বাদ দেয়ার সুযোগ নেই। এরপরও যদি ঢাকা লীগে কেউ এক্সট্রা অর্ডিনারি খেলে ফেলেন, তাহলে সুযোগ ধরা দিতেও পারে। ঢাকা লীগ হবে ওয়ানডে ফরমেটে। ভারতের বিপক্ষে খেলা হবে টেস্ট। তাই লীগের পারফর্মেন্স বিচার করে টেস্টের জন্য দলে নেয়ার সুযোগ নেই। কিন্তু কোন ব্যাটসম্যান যদি ৩-৪টি শতক করে ফেলেন, তাহলে তো টেস্টে তার জায়গা হতেই পারে? তবে এতটুকু বোঝা যাচ্ছে, এ মুহূর্তে টেস্টে বোলার নিয়ে চিন্তিত নন নির্বাচকরা। কারণ, দলে পেস আক্রমণে মুস্তাফিজতো আছেনই, সঙ্গে যেহেতু একটি টেস্ট হবে; খেলানো হবে ২ পেসার; শহীদ সেক্ষেত্রে সুযোগ পাবেনই বলা চলে। একাধারে বহু ওভার যে করতে পারেন। যা টেস্টে খুব বেশি প্রয়োজন। আর স্পিনারদের মধ্যে সাকিব, জুবায়ের, তাইজুলতো আছেনই। প্রয়োজনে মাহমুদুল্লাহও স্পিনটা ভালই করেন। খানিক চিন্তা করে যা বোঝা গেল, তা ব্যাটিং নিয়ে আছে। ওপেনিংয়ে তামিম-ইমরুলতো সেটই আছেন। এরপর নির্ধারিত ওভারে মুমিনুল যেমনই খেলুন না কেন, টেস্টে নিয়মিতই। মাহমুদুল্লাহ, মুশফিক, সাকিবের স্থানতো আছেই। তা নিয়ে নির্বাচকদের ভেতর চিন্তাও নেই। পরের দুই ব্যাটিং পজিশনে লিটন কুমার দাস ও নাসির হোসেনও আছেন। এখানে সৌম্য সরকারও সুযোগ পেতে পারেন। যদি একজন স্পিনার বেশি খেলানো হয়, সেক্ষেত্রে নাসির, সৌম্যের ওপর দিয়েই কোপ পড়বে। লিটন যে সর্বশেষ টেস্ট সিরিজে ভাল খেলেছেন। বাকি পজিশনগুলোতেতো বোলাররাই আছেন। তাতেই বোঝা যাচ্ছে, যদি নির্বাচকদের সামান্য চিন্তাও থাকে, সেটি ব্যাটিং নিয়েই থাকছে। আর সেই ব্যাটিং চিন্তাটি মূলত ব্যাটসম্যান একজন বেশি নিয়ে একাদশ সাজানো হলে অষ্টম ব্যাটসম্যান নিয়েই থাকছে। সেক্ষেত্রে যদি কোন ব্যাটসম্যান এক্সট্রা অর্ডিনারি কিছু করে ফেলেন, তার সুযোগ হয়ে যেতে পারে। এমনও হতে পারে নুরুল হাসান সোহানকেও সুযোগ করে দেয়া হতে পারে। হাবিবুল বাশার আবার জানিয়ে দিলেন, ‘জাতীয় দলে ঢোকা এখন খুবই কঠিন। এজন্য সাধারণ মানের কোন পারফর্মেন্স আসলে তেমন কাজে দেবে না। এজন্য চাই এক্সট্রা অর্ডিনারি ব্যাটিং বা বোলিং। যে এ কাজটি করতে পারবে, তার হয়তো দ্রুত জাতীয় দলে ঢোকার পথ বের হতে পারে। দলে ঢোকার সুযোগ সবার জন্যই উন্মুক্ত। তবে এজন্য এখন দীর্ঘদিন ধরেই ভাল খেলতে হবে। হুট করে কেউ জাতীয় দলে ঢুকতে পারবে না। যদি বিশেষ কোন নৈপুণ্য না থাকে।’ সেই নৈপুণ্যটিই হতে হবে ‘এক্সট্রা অর্ডিনারি’।
×