ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

শুধু উৎসব নয়, প্রতিবাদ ও প্রতিরোধের অগ্নিশিখায় আজ পহেলা বৈশাখ

প্রভাতসূর্য, এসেছ রুদ্র সাজে

প্রকাশিত: ০৫:৫৮, ১৪ এপ্রিল ২০১৬

প্রভাতসূর্য, এসেছ রুদ্র সাজে

মোরসালিন মিজান ॥ বাজেনি নাকাড়া, নহবৎ ধ্বনি/ তবু এসে গেছে নব পল্লবে, নব উৎসবে,/ নব জীবনের নব অনুভবে, এপ্রিলে বৈশাখ...। হ্যাঁ, আজ বৃহস্পতিবার বাঙালীর অভূতপূর্ব সাংস্কৃতিক জাগরণের দিন পহেলা বৈশাখ। ১৪২৩ বঙ্গাব্দের প্রথম দিন। মহাসমারোহে বাঙালী বরণ করে নেবে নববর্ষকে। আজ নতুন স্বপ্ন বুনবে বাংলার কৃষক। হালখাতা খুলবেন ব্যবসায়ীরা। নববর্ষ বরণে রাজধানীসহ সারাদেশ একযোগে চলবে লোকজ ঐতিহ্যের নানা উৎসব অনুষ্ঠান। আজ সরকারী ছুটির দিন। জাতীয় দৈনিকগুলো প্রকাশ করেছে নববর্ষের বিশেষ সংখ্যা। টেলিভিশন রেডিওতে প্রচারিত হচ্ছে বিশেষ অনুষ্ঠানমালা। বাংলা নববর্ষের সূচনালগ্নে দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়ে বাণী দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। যখন ধর্মীয় মৌলবাদ জঙ্গীবাদ মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশকে চোখ রাঙানোর দুঃসাহস দেখাচ্ছে, যখন বর্বর আক্রমণের শিকার হচ্ছে মুক্তচিন্তা, এই ছুঁতোয় ওই ছুঁতোয় অন্য ধর্মের মানুষের ওপর হামলা করা হচ্ছেÑ তখন পহেলা বৈশাখ নতুন তাৎপর্য নিয়ে জাতির সামনে হাজির হয়েছে। আজ শুধু উৎসব নয়, সকল অন্যায় অসাম্য সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে জ্বলে ওঠার দিন। আজ ধর্মান্ধতা, মৌলবাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ প্রতিরোধের অগ্নিশিখা ভেতরে জ্বালিয়ে রাখার অনুপ্রেরণা গ্রহণ করবে বাঙালী। দ্রোহের আগুনে শাণিত হবে। বাঙালীর চেতনাবিরোধী অপশক্তি রুখতে নতুন বছরে ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে যাওয়ার শপথ নেবে বাংলাদেশ। কবির ভাষায়Ñ ওই বুঝি কালবৈশাখী সন্ধ্যা আকাশ দেয় ঢাকি/ভয় কী রে তোর ভয় কারে, দ্বার খুলে দিস চারধারে...। বাংলা নববর্ষের সঙ্গে সবচেয়ে নিবিড় সম্পর্ক কৃষির। এ সম্পর্কের সূত্রেই বাংলা সন প্রবর্তন করেন সম্রাট আকবর। তার আমলেই প্রবর্তন হয় বাংলা সন। এখন তা বঙ্গাব্দ নামে পরিচিত। বঙ্গাব্দের মাস হিসেবে বৈশাখের প্রথম স্থান অধিকার করার ইতিহাসটি বেশি দিনের না হলেও, আদি সাহিত্যে বৈশাখের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়। দক্ষের ২৭ কন্যার মধ্যে অনন্য সুন্দরী অথচ খরতাপময় মেজাজসম্পন্ন একজনের নাম বিশাখা। এই বিশাখা নক্ষত্রের নামানুসারেই বাংলা সনের প্রথম মাস বৈশাখের নামকরণ। বৈদিক যুগে সৌরমতে বৎসর গণনার পদ্ধতি প্রচলিত ছিল। সেখানেও সন্ধান মেলে বৈশাখের। পেছনের যত ক্ষত ভুলে এ মাসেই ঘুরে দাঁড়ানোর স্বপ্ন দেখে বাঙালী। সেই শুভসূচনা হয় পহেলা বৈশাখে। কবিগুরুর ভাষায়Ñ মুছে যাক গ্লানি, ঘুচে যাক জরা/অগ্নিস্নানে শুচি হোক ধরা...। পুরনো দিনের শোক-তাপ-বেদনা-অপ্রাপ্তি-আক্ষেপ ভুলে অপার সম্ভাবনার দিকে এগিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় ঘোষণা করবে। দুই হাতে অন্ধকার ঠেলে, সকল ভয়কে জয় করার মানসে নতুন করে জেগে উঠবে বাঙালী। ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে দেশের সকল শ্রেণী-পেশার মানুষ আজ একাত্মা হয়ে গাইবেÑ এসো, এসো, এসো হে বৈশাখ...। আনন্দে উৎসবে মাতবে গোটা দেশ। কবিগুরুর ভাষায়Ñ নব আনন্দে জাগো আজি নব রবি কিরণে/শুভ্র সুন্দর প্রীতি-উজ্জ্বল নির্মল জীবনে...। একই আনন্দের বহির্প্রকাশ ঘটিয়ে নজরুল লিখেছেনÑ তোরা সব জয়ধ্বনি কর/তোরা সব জয়ধ্বনি কর/ঐ নূতনের কেতন ওড়ে কালবোশেখির ঝড়/তোরা সব জয়ধ্বনি কর...। আবহমান কাল ধরেই চলছে বৈশাখ বরণের আনুষ্ঠানিকতা। প্রকৃত রূপটি দৃশ্যমান হয় গ্রামে। এক সময় গ্রামবাংলায় চৈত্রসংক্রান্তি ছিল প্রধান উৎসব। বছরের শেষ দিনে তেতো খাবার খেয়ে শরীর শুদ্ধ করতেন কৃষাণ-কৃষাণীরা। নির্মল চিত্তে প্রস্তুত হতেন নতুন বছরে প্রবেশ করার জন্য। এখনও বৈশাখ বরণের অংশ হিসেবে বাড়িঘর ধুয়েমুছে পরিষ্কার করেন গৃহিণীরা। অদ্ভুত মুন্সিয়ানায় আলপনা আঁকেন মাটির মেঝেতে। খুব ভোরে ঘুম থেকে ওঠেন সবাই। স্নান সারেন। নতুন পোশাক পরেন। আত্মীয়স্বজন, পাড়া-প্রতিবেশীর বাড়িতে বেড়াতে যান। ঘরে ঘরে সাধ্যমতো বিশেষ খাবার রান্না করা হয়। থাকে পিঠা-পুলির আয়োজন। আজ হাটে-মাঠে-ঘাটে বসবে ঐতিহ্যবাহী বৈশাখী মেলা। নানারকম কুটির শিল্প, খেলনা, মিষ্টিসহ বাহারি পণ্যে স্টল সাজানো হবে। বিভিন্ন এলাকায় থাকবে নৌকাবাইচ, লাঠিখেলা কিংবা কুস্তির মতো ঐতিহ্যবাহী আয়োজন। নাগরিক জীবনেও বিপুল আনন্দ যোগ করে পহেলা বৈশাখ। বর্ষবরণের দিন সব শহরেই আয়োজন করা হয় বর্ণাঢ্য উৎসব অনুষ্ঠানের। ধর্ম-বর্ণ ভেদ ভুলে অসাম্প্রদায়িক উৎসবে মাতে বাংলা। ষাটের দশকে বাঙালী চেতনাবিরোধী অবস্থানের প্রতিবাদে রাজধানী শহর ঢাকার রমনা বটমূলে শুরু হয় বৈশাখ উদ্যাপন। এর মাধ্যমে বাঙালী আপন পরিচয়ে সামনে আসার সুযোগ পায়। পরবর্তী সময়ে বাঙালীর রাজনৈতিক সংগ্রামের মধ্য দিয়ে উত্থান ঘটে পহেলা বৈশাখের। বাংলা নববর্ষের প্রথম দিবসটি বর্তমানে বাঙালীর জাতিসত্তায়, চেতনায় ও অনুভবের জগতে গভীরভাবে বিরাজ করছে। এ প্রসঙ্গে ড. মুহাম্মদ এনামুল হকের বলাটি চমতকার। তিনি বলেছেন, আমাদের অধুনাতম নববর্ষ এদেশের গ্রীষ্মকালীন উৎসব ও কৃষি উৎসব উদযাপনের একটি বিবর্তিত নবসংস্করণ। এর অতিহ্য প্রাচীন কিন্তু রূপ নতুন, নতুন সংস্কার, নতুন সংস্কৃতি, নতুন চিন্তাধারা অবারিত স্রোতে যুক্ত হয়ে সৃষ্টি করেছে এমন এক নতুন আবহ, যাকে একটা দার্শনিক পরিম-ল বলে উল্লেখ করতে হয়। এ পরিম-লে পুরাতন বিলীন জীর্ণ স্তূপ নিশ্চিহ্ন, মিথ্যা বিলুপ্ত ও অসত্য অদৃশ্য। আর নতুন আবির্ভূত নবজীবন জাগরিত সুন্দর সম্মিত ও মঙ্গল সম্ভাবিত কালবৈশাখীই এর প্রতীক। সে নববর্ষের অমোঘ সহচর। নবসৃষ্টির অগ্রদূত সুন্দরের অগ্রপথিক ও বিজয়কেতন। ছায়ানটের সঙ্গে দিন শুরু ॥ বহু বছরের ঐতিহ্যের ধারাবাহিকতায় রাজধানীর রমনা বটমূলে ভোরে আয়োজন করা হবে বর্ষবরণের প্রধান উৎসব। এবার ৪৮তম আয়োজন। সাম্প্রতিক সময়টি বিবেচনায় রেখে উৎসবের প্রতিপাদ্য করা হয়েছেÑ মানবতা। মানবতার জয়গান করবেন শিল্পীরা। আয়োজক সূত্র জানায়, এবারও রমনা বটমূলে প্রস্তুত হয়েছে বিশাল মঞ্চ। সঙ্গীত আবৃত্তি ও পাঠ ছাড়াও, সমকালীন অভিজ্ঞতার আলোকে দিক-নির্দেশনামূলক বক্তব্য রাখবেন ছায়ানট সভাপতি সন্্জীদা খাতুন। চারুকলায় মঙ্গল শোভাযাত্রা ॥ বর্ষবরণের সবচেয়ে বর্ণাঢ্য আয়োজনটির নাম মঙ্গল শোভাযাত্রা। ছায়ানটের অনুষ্ঠান শেষ হওয়ার পরপরই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের উদ্যোগে এ শোভাযাত্রা বের করা হবে। শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে পুনরায় এটি চারুকলায় এসে শেষ হবে। শোভাযাত্রায় বহন করা হবে বাঁশ ও কাঠে গড়া বিশালাকৃতির ভাস্কর্য। থাকবে ষাঁড়, হাতি, হরিণ, পাখিসহ গ্রামীণ জীবনের নানান অনুষঙ্গ। মঙ্গল শোভাযাত্রার খুঁটিনাটি তুলে ধরে অনুষদের ডিন শিল্পী নিসার হোসেন বলেন, আমাদের আয়োজনটি বিশাল। কয়েক শ’ ছেলেমেয়ে দিনরাত কাজ করেছে। শিক্ষকরাও তাদের সঙ্গে ছিলেন। তিনি বলেন, প্রতিবারের মতোই লোকজ সংস্কৃতিকে তুলে ধরার প্রয়াস নিয়েছে চারুকলা অনুষদ। গ্রাম আমাদের মূল শক্তি। গ্রামের লোকসংস্কৃতিতে সাম্প্রদায়িকতার স্থান কোনকালেই ছিল না জানিয়ে তিনি বলেন, এ সংস্কৃতি মানুষের। বিভাজনের নয়। এক করার। বর্তমান সময়ের কিছু সাম্প্রদায়িক হামলার ঘটনার উল্লেখ করে তিনি বলেন, এই অশুভ শক্তির বিরুদ্ধে আমাদের অবস্থান। এজন্য প্রচুর কাজ করতে হবে। সেই চিন্তা থেকেই এবারের প্রতিপাদ্যÑ অন্তর তব বিকশিত কর অন্তরতর হে। ঋষিজের বর্ষবরণ ॥ সঙ্গীত সংগঠন ঋষিজের আয়োজনে বহু বছর ধরে বর্ষবরণ উৎসব আয়োজন করা হচ্ছে। সেই ধারাবাহিকতায় আজ শিপার্কের সামনে নারকেলবীথি চত্বরে সকাল সাড়ে সাতটায় শুরু হবে উৎসব। হাজার কণ্ঠে বর্ষবরণ ॥ গত কয়েক বছর ধরে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজন করা হচ্ছে হাজার কণ্ঠে বর্ষবরণের বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানমালা। এবারও ব্যতিক্রম হচ্ছে না। চৈত্রসংক্রান্তির আনুষ্ঠানিকতা শেষ হতেই ভোর সাড়ে ৫টা থেকে শুরু হবে নববর্ষ আবাহন। চ্যানেল আইয়ের সহায়তায় অনুষ্ঠানের আয়োজন করবে সুরের ধারা। আয়োজনের শিরোনামÑ ‘হাজারও কণ্ঠে কোটি বাঙালীর বর্ষবরণ’। চলবে একটানা দুপুর ১২টা পর্যন্ত। এছাড়াও এখানে আয়োজন করা হবে বৈশাখী মেলার। শিল্পকলা একাডেমিতে বাউল গান ॥ শিল্পকলা একাডেমির উদ্যোগে একাডেমির জাতীয় নাট্যশালা মিলনায়তনে সকাল ৯টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত থাকবে বর্ণাঢ্য আয়োজন। বাংলা একাডেমিতে কারুশিল্প মেলা ॥ বাংলা একাডেমিতে আজ থেকে শুরু হচ্ছে কারুশিল্প মেলা। আয়োজন করবে বিসিক। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ॥ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে থাকবে নানা আয়োজন। ‘চেতনায় বাঙালী ও বাঙালিয়ানা’ নামের সংগঠন নববর্ষ বরণ করতে ভিন্নধর্মী এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করবে। সকাল ১০টায় টিএসসি মিলন চত্বর থেকে ছেলেরা দেশীয় লুঙ্গি, পাঞ্জাবি ও গামছা এবং মেয়েরা দেশীয় শাড়ি পরে শোভাযাত্রা বের করবে। শোভাযাত্রা শেষে পান্তাভাতভোজ এবং মুড়ি, খই ও বাতাসা বিতরণ করা হবে। রিপোর্টার্স ইউনিটি ॥ এখানে সকাল সাড়ে ৮টা থেকে শুরু হবে বৈশাখী অনুষ্ঠানমালা। মোহাম্মদপুর ক্লাব ॥ বৈশাখ উপলক্ষে ক্লাব প্রাঙ্গণে তিন দিনব্যাপী মেলার আয়োজন করা হয়েছে। প্রধান অতিথি থাকবেন সংসদ সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক। সরকারী কর্মসূচী ॥ পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে সরকারীভাবে ব্যাপক কর্মসূচী গ্রহণ করা হয়েছে। আজ রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ স্বাধীনতা ও একুশে পদকপ্রাপ্ত বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ, লেখক, কবি, সাহিত্যিক, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বদের বঙ্গভবনে সংবর্ধনা জানাবেন। বিকেলে গণভবনে সর্বস্তরের মানুষের সঙ্গে নববর্ষের শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এছাড়া পাঁচটি বিভাগীয় শহর, ঢাকা মহানগর, দেশের সব জেলা-উপজেলায় পহেলা বৈশাখ উদযাপন উপলক্ষে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, আলোচনা সভা ও গ্রামীণ লোকজ মেলার আয়োজন করেছে সরকার। কারাগার, হাসপাতাল ও এতিমখানায় উন্নতমানের খাবার পরিবেশন, শিশুদের নিয়ে ঐতিহ্যবাহী বাঙালী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং কারাবন্দীদের পরিবেশনায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হবে। আওয়ামী লীগের শোভাযাত্রা ॥ সকাল ৭টায় আওয়ামী লীগের উদ্যোগে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের ব্যবস্থাপনায় শুভ নববর্ষ-১৪২৩ বঙ্গাব্দ বরণ উপলক্ষে ঐতিহাসিক বাহাদুর শাহ পার্ক থেকে বঙ্গবন্ধু এভিনিউ পর্যন্ত নববর্ষ মঙ্গল শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হবে। রাষ্ট্রপতির বাণী ॥ নববর্ষ উপলক্ষে দেয়া বাণীতে রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ দেশবাসীকে অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেছেন, বৈশাখ শুধু ঋতুচক্রমনের ধারাবাহিকতা নয় বরং আমাদের ঐতিহ্য চেতনারই নাম। শুধু সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে নয়, অর্থনৈতিক ও সামাজিক ক্ষেত্রেও বাংলা নববর্ষ উৎসবের কোন তুলনা হয় না। অতীতের সব গ্লানি ও বিভেদ ভুলে বাংলা নববর্ষ জাতীয় জীবনের সর্বক্ষেত্রে ঐক্য ও সংহতি আরও সুদৃঢ় করবে বলেও আশা প্রকাশ করেন রাষ্ট্রপতি। প্রধানমন্ত্রীর বাণী ॥ বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, পহেলা বৈশাখে বাঙালী সংস্কৃতির যে চর্চা হয় তা আমাদের জাতিসত্তাকে আরও বিকশিত করে। সাম্প্রদায়িকতা, ধর্মান্ধতা, জঙ্গীবাদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার শক্তি যোগায়। শেখ হাসিনা বলেন, বর্ষবরণের উৎসবে এ চেতনাকে নস্যাত করার জন্য স্বাধীনতার আগে ও পরে বহু ষড়যন্ত্র হয়েছে। আঘাত করা হয়েছে বার বার। বোমা মেরে মানুষ হত্যা করা হয়েছে। ধর্মান্ধ, সাম্প্রদায়িক শক্তির কোন অপচেষ্টাই সফল হয়নি। বাঙালী জাতি নববর্ষকে ধারণ করেছে তার জীবনযাত্রা ও সংস্কৃতির অনুষঙ্গ হিসেবে। নববর্ষে রাজনীতির নামে আগুনে পুড়িয়ে নিরীহ মানুষ হত্যা ও দেশের সম্পদ ধ্বংসকারী অপশক্তির বিরুদ্ধে বাঙালীকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী। বিরোধীদলীয় নেত্রীর বাণী ॥ নববর্ষ উপলক্ষে দেয়া বাণীতে বিরোধীদলীয় নেত্রী রওশন এরশাদ দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। নতুন বছরে দেশকে আরও এগিয়ে নিতে সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি। বিএনপি চেয়ারপার্সনের বাণী ॥ নববর্ষ উপলক্ষে বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া সকলকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, সুদীর্ঘকাল ধরে নতুন আঙ্গিক, রূপ, বর্ণ ও বৈচিত্র্য নিয়ে বাঙালীর জীবনে বারবার ঘুরে আসে পহেলা বৈশাখ। পহেলা বৈশাখ আমাদের গর্বিত ঐতিহ্যকে স্মরণ করিয়ে দেয়, এ দিন জেগে ওঠে জাতির আত্মপরিচয়।
×