ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

এক যুগ পর নতুন কমিটি পাচ্ছে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ

প্রকাশিত: ০৫:৪৪, ১০ এপ্রিল ২০১৬

এক যুগ পর নতুন কমিটি পাচ্ছে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ সম্মেলনের প্রায় ৩ বছর ৩ মাস পর অবশেষে আজ রবিবার আনুষ্ঠানিকভাবে দু’ভাগে বিভক্ত হচ্ছে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ। ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ (উত্তর) ও ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ (দক্ষিণ) নামে বিভক্ত কমিটি আজ সাংবাদিক সম্মেলনের মাধ্যমে ঘোষণা করা হবে। দলটির একাধিক নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা উত্তর মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি হচ্ছেন একেএম রহমতউল্লাহ এমপি ও সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পাচ্ছেন মোহাম্মদপুর থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাদেক খান। অপরদিকে ঢাকা দক্ষিণ মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক হচ্ছেন নগর নেতা আবুল হাসনাত ও শাহে আলম মুরাদ। আওয়ামী লীগের একাধিক সূত্র জানিয়েছে, আজ রোববার সকাল এগারোটায় ধানম-ির আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এই বিভক্ত কমিটি ঘোষণা করবেন দলটির সাধারণ সম্পাদক ও জনপ্রশাসনমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম। ইতোমধ্যে বিভক্ত এই দুই কমিটির অনুমোদন দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বিভক্ত দুই মহানগর কমিটি ছাড়াও আজ ঢাকা মহানগরের ৪৯ থানা, ১০৩ ওয়ার্ড এবং ১৭ ইউনিয়ন কমিটিও ঘোষণা করা হতে পারে। এটি ঘোষণা হলে প্রায় একযুগ পর নতুন কমিটি পাবে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ। এ বিষয়ে ঢাকা মহানগর উত্তর কমিটির সমন্বয়কের দায়িত্বপ্রাপ্ত আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক লে. কর্নেল (অব) ফারুক খান জনকণ্ঠকে বলেন, আজ রবিবার সকালে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে কমিটি ঘোষণা করা হবে। দক্ষিণ কমিটির সমন্বয়কের দায়িত্বে থাকা কেন্দ্রীয় কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক ড. আবদুর রাজ্জাকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনিও এর সত্যতা স্বীকার করেন। প্রায় সাড়ে ৯ বছর পর ২০১২ সালের ২৭ ডিসেম্বর ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সর্বশেষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। ওই সম্মেলনে শুধুমাত্র সভাপতি পদে সদ্য প্রয়াত এম এ আজিজকে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীরবিক্রমের নাম ঘোষণা করা হয়। এরপর মহানগর কমিটি একটি নাকি বিভক্ত হবে- এ নিয়ে আলোচনার মাঝেই পার হয়ে গেছে ৩ বছর ৩ মাস সময়। পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন ছাড়াই এই সময়ের মধ্যে মেয়াদও উত্তীর্ণ হয়ে গেছে। সবশেষে আজ পূর্ণাঙ্গরূপ পাচ্ছে উত্তর ও দক্ষিণ মহানগর কমিটি। দলীয় সূত্র জানায়, দ্বিতীয় মেয়াদে বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পরই আন্দোলন-সংগ্রামের সূতিকাগার বলে খ্যাত ঢাকায় দলটির মহানগর কমিটিকে দুই ভাগে বিভক্ত করার উদ্যোগ নেয়া হয়। ঢাকা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের পরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মহানগর উত্তরে লে. কর্নেল (অব) ফারুক খান এবং দক্ষিণে ড. আবদুর রাজ্জাককে দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল নগরের কমিটি গঠনের। কেন্দ্রীয় কমিটির এই দুই নেতা দীর্ঘদিন প্রতিটি ওয়ার্ড-থানা ও ইউনিয়নে ঘুরে ঘুরে বিভক্ত দুই কমিটি গঠনের দায়িত্ব পালন করেন। সবশেষ ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বরে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ কমিটি এবং নগরের থানা, ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন কমিটির খসড়া তালিকা প্রধানমন্ত্রীর কাছে জমা দেন তারা। প্রথম দিকে ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি হিসেবে নাম প্রস্তাব করা হয়েছিল এম এ আজিজকে। কিন্তু কমিটি ঘোষণার আগেই তিনি মারা গেলে পুনরায় থমকে যায় কমিটি ঘোষণা। এছাড়া বিভক্ত নগর কমিটিতে বর্তমান সাধারণ সম্পাদক ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া থাকতে চান না, এটা তিনি আগেই জানিয়ে দিয়েছেন। শোনা যাচ্ছে, আগামী জুলাইতে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে দীর্ঘদিন ঢাকা মহানগরের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দক্ষভাবে দায়িত্বপালনকারী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়াকে কেন্দ্রীয় কমিটির একটি বড় পদে মনোনীত করে তাকে সম্মানিত করা হতে পারে। সূত্র জানায়, এম এ আজিজের মৃত্যুর পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রয়াত এই নেতার মতোই ঢাকা দক্ষিণ মহানগর কমিটির সভাপতি পদে একজন আদি ঢাকাইয়াকে মনোনীত করতে চাচ্ছিলেন। সেই অনুযায়ী এম এ আজিজের জায়গায় সভাপতি হচ্ছেন লালবাগ থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি হাজী আবুল হাসনাত। প্রধানমন্ত্রী গত ১১ মার্চ গণভবনে আবুল হাসনাতকে ডেকে নিয়ে কথা বলেন। এরপরই নিশ্চিত হয় আদি ঢাকাইয়া হিসেবে আবুল হাসনাতই দায়িত্ব পাচ্ছেন দক্ষিণ মহানগর আওয়ামী লীগের।
×