ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

বাংলাদেশের মাটি নিতে আগ্রহী মালদ্বীপ

প্রকাশিত: ০৫:৫৬, ১২ মার্চ ২০১৬

বাংলাদেশের মাটি নিতে আগ্রহী মালদ্বীপ

স্টাফ রিপোর্টার, বাগেরহাট ॥ বাংলাদেশ থেকে মাটি ও বালু নিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে দ্বীপরাষ্ট্র মালদ্বীপ। এ ক্ষেত্রে দেশের একমাত্র আন্তর্জাতিক নৌরুট মংলা-ঘষিয়াখালী চ্যানেল ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে পাওয়া মাটি ও বালু রফতানির কথা ভাবছে সরকার। এই চ্যানেলের ২০ থেকে ৩০টি পয়েন্টের থেকে খননকৃত মাটির নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। এ বিষয়ে দু’দেশের মধ্যে প্রাথমিক আলোচনাও শুরু হয়েছে। এরই মধ্যে বাগেরহাটের মংলা-ঘষিয়াখালী নৌ-চ্যানেল ঘুরে গেছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত মালদ্বীপের হাইকমিশনার ড. মোহাম্মদ অসীম। খনন করা মাটির ধরন ও গুণাগুণ পরীক্ষা এবং মালদ্বীপে এই মাটির চাহিদা আছে কি না- সে বিষয়ে জানতেও শুরু হয়েছে পরীক্ষা-নিরীক্ষা। এতে খননকৃত মাটি রাখার বড় সমস্যা দূর হবে। মংলা-ঘষিয়াখালী নৌ-রুটের সংরক্ষণ ও রক্ষণাবেক্ষণ কার্যক্রম পরিদর্শন করে এমন তথ্য জানিয়েছেন নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব অশোক মাধব রায়। তিনি বলেন, বাংলাদেশ থেকে মাটি ও বালু নিতে চায় মালদ্বীপ। আমরা মালদ্বীপের হাইকমিশনারকে দেখলাম আমাদের কোন কোন মাটি আছে এখানে। পরীক্ষার জন্য মংলা-ঘষিয়াখালী চ্যালেন থেকে খননকৃত ২০ থেকে ৩০টি পয়েন্টের মাটির নমুনা সংগ্রহ করেছি। এগুলো পরীক্ষাগারে পরীক্ষা করা হবে এবং পরে রিপোর্ট মালদ্বীপের হাইকমিশনার ড. মোহম্মদ অসীমের মাধ্যমে সেদেশে পাঠানো হবে। মালদ্বীপ যদি মনে করেন যে- এখানকার খননকৃত মাটি উপযুক্ত, তখন আলাপ আলোচনার মধ্যমে ঠিক করা হবে কিভাবে বাংলাদেশ মাটি রফতানি করবে। বিআইডাবটির তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী (ড্রেজিং) এ এইচ ফরহাদ উজ জামান বলেন, মংলা-ঘষিয়াখালী চ্যানেলে জেয়ারের সময় পশুর ও বলেশ্বর দু’দিক দিয়ে স্রোত আসে। আবার ভাটার সময় দু’দিক পানির টান থাকায় চ্যানেলে দ্রুত পলি জমে ভরাট হচ্ছে। ২০১৪ সালে জুনে শুরু হওয়া ক্যাপিটাল ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে খনন কাজে ২৮০ কোটি টাকা ব্যয়ে ১ কোটি ২৫ লাখ কিউবিক মিটার মাটি খনন করা হয়েছে। প্রতিনিয়ত পলি জমার কারণে চ্যানেলের ত্রিশ থেকে চল্লিশ ভাগ আবার ভরাট হয়ে যাচ্ছে। পলি জমার হার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রতি বছর এই চ্যানেলে প্রায় অর্ধ কোটি ঘনমিটার পলি জমে। যার জন্য মাত্র তিন মাসেই চ্যানেলে একের তিন ভাগ ভরাট হয়ে যেতে পারে। তাই সারা বছর নাব্য রাখতে চ্যানেল সংলগ্ন ছোট বড় নদী-খালগুলোতে ড্রেজিং প্রয়োজন। এক্ষেত্রে খননকৃত মাটি রাখা এখন এই অঞ্চলে একটি বড় সমস্যা। এজন্য এই মাটির বিষয়ে বিআইডব্লিউটিএ বিভিন্ন সময়ে কয়েকটি মন্ত্রণালয় এবং অধিদফতরের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। এরই ধারাবাহিকতায় মালদ্বীপের সঙ্গে মাটি রফতানির এই প্রাথমিক আলোচনা। বুধবার বিকেলে মংলা-ঘষিয়াখালী চ্যানেল পরিদর্শনের সময় মালদ্বীপের হাইকমিশনার ড. মোহম্মদ অসীমের সঙ্গে ছিলেন, বাংলাদেশের নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব অশোক মাধব রায়, মংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ, বিআইডব্লিউটির চেয়ারম্যান কমোডর মোজাম্মেল হক, এলজিইডির প্রধান প্রকৌশলী শ্যামা প্রসাদ অধিকারীসহ স্থানীয় প্রশাসনের ঊর্ধ্বতনরা। প্রসঙ্গত এর আগেও বিভিন্ন সময় মালদ্বীপ, সিঙ্গাপুর ও শ্রীলঙ্কা বাংলাদেশ থেকে বালু আমদানিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছিল।
×