ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

ইউপি নির্বাচন

সহিংসতা বাড়ছে

প্রকাশিত: ০৪:০৫, ৭ মার্চ ২০১৬

সহিংসতা বাড়ছে

জনকণ্ঠ ডেস্ক ॥ ইউপি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন স্থানে সহিংসতায় আহত হয়েছেন অন্তত ৭৬ কর্মী-সমর্থক। হাতিয়ায় গুলিবিদ্ধ হয়েছেন প্রার্থীর বাবা। এছাড়া অন্যান্য স্থানে ব্যাপক ভাংচুর, লুটপাট, হামলা ও আগুন দেয়া হয়েছে বাড়িঘরে। স্টাফ রিপোর্টার ও নিজস্ব সংবাদদাতাদের পাঠানো খবর : হাতিয়া নোয়াখালীর দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ায় ইউপি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দফায় দফায় সংঘর্ষে ২০ জন আহত হয়। এ সময় আওয়ামী লীগ প্রার্থীর সমর্থকরা বিদ্রোহী প্রার্থীর বাড়িতে অগ্নিসংযোগ ও প্রার্থীর বাবাকে গুলি করে। গুরুতর আহত দু’জনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় প্রেরণ করা হয়। শনিবার রাত থেকে দফায় দফায় সংঘর্ষে হাতিয়ার ওছখালী, সোনাদিয়া, চরকিং ইউনিয়নের বিভিন্ন জায়গায় এ সংঘর্ষ হয়। প্রথমে সোনাদিয়া ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের মেম্বার প্রার্থী বাহার উদ্দিনকে আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী নুরুল ইসলামের সমর্থকরা কুপিয়ে জখম করে। একই সময় তমরদ্দি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান প্রার্থী ফারুকের সমর্থকরা স্থানীয় সংসদ সদস্যের বাসভবন থেকে ফেরার পথে আওয়ামী লীগ নেতা এ্যাডভোকেট ছাইফ উদ্দিন আহাম্মদের বাসা থেকে তাদের আক্রমণ করে। এ সময় উভয় গ্রুপের সংঘর্ষে ২০ জন আহত হয়। পরে ফারুকের সমর্থকরা এ্যাডভোকেট ছাইফ উদ্দিন আহাম্মদের বাসভবনে হামলা করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ৫০ রাউন্ড গুলি ছুড়ে। রবিবার দুপুরে হাতিয়ার চরকিং ইউনিয়নের আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মহিউদ্দিন আহমেদের সমর্থকরা বিদ্রোহী প্রার্থী মহিউদ্দিন মুহিনের বাড়িতে হামলা করে। বরিশাল প্রথম ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে জেলার গৌরনদী উপজেলার নলচিড়া ও সরিকল ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ সমর্থিত চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকদের হামলায় নিজ দলের বিদ্রোহী ও বিএনপি সমর্থিত প্রার্থীর কমপক্ষে ৪০ জন সমর্থক আহত হয়েছেন। এ সময় ২০টি মোটরসাইকেল ও একটি বাড়ি ভাংচুরের অভিযোগ পাওয়া গেছে। শনিবার বিকেলে ও রাতের এসব হামলায় গুরুতর আহতদের শেবাচিমসহ বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। উপজেলার নলচিড়া ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী চেয়ারম্যান প্রার্থী মীর মাসুদ উদ্দিন অভিযোগ করেন, আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থীর সমর্থকরা শনিবার দুপুরে প্রকাশ্যে তার আনারস মার্কার নলচিড়া বাজারের প্রধান নির্বাচনী অফিসে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাংচুর করে। ওই দিন বিকেলে তার শতাধিক সমর্থক ৫০টি মোটরসাইকেল নিয়ে পিঙ্গলাকাঠী এলাকার উঠান বৈঠকে যোগ দেয়ার জন্য রওয়ানা হন। পথিমধ্যে পিঙ্গলাকাঠী বাজারে বসে নৌকা মার্কার সমর্থকরা তার সমর্থকদের ওপর অতর্কিতভাবে হামলা চালায়। এ সময় তার ৪০ কর্মী-সমর্থকদের কুপিয়ে আহত ও তাদের ব্যবহৃত ২০টি মোটরসাইকেল ভাংচুর করা হয়। অপরদিকে একই দিন সন্ধ্যায় সরিকল ইউনিয়ন পরিষদের বিএনপি সমর্থিত চেয়ারম্যান প্রার্থী মঞ্জুর হোসেন মিলনের ধানের শীর্ষ প্রতীকের পোস্টার লাগানোর অজুহাতে আওয়ামী লীগ সমর্থিত চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকরা মহিষা গ্রামের আওয়ামী লীগ কর্মী রনো ঋষীকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করেছে। রনো ঋষী অভিযোগ করেন, হামলাকারীরা একই দিন রাতে তার বাড়িতে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাংচুর ও বাড়ির নারীদের মারধর করে আহত করেছে। আমতলী (বরগুনা) বরগুনার আমতলী উপজেলার আড়পাঙ্গাশিয়া ইউনিয়নের স্বতন্ত্র দুই চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে দফায় দফায় ঘণ্টাব্যাপী সংঘর্ষে ১৬ জন আহত হয়েছেন। ঘটনাটি ঘটেছে শনিবার সন্ধ্যায়। জানা গেছে, আড়পাঙ্গাশিয়া ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান স্বতন্ত্র প্রার্থী আবুল কালাম আজাদ তার সর্মথকদের নিয়ে সোমবাড়িয়া বাজার (চরকগাছিয়া) থেকে উঠান বৈঠক শেষে শনিবার বিকেলে আড়পাঙ্গাশিয়া বাজারে আসছিল। ওই সময় সাবেক চেয়ারম্যান স্বতন্ত্র প্রার্থী একেএম নুরুল হক তার সমর্থকদের নিয়ে কর্মিসভা শেষে বাড়ি ফিরছিল। দুইপক্ষ মুখোমুখি হলে সেøাগান পাল্টা সেøাগানের মধ্য দিয়ে সংঘর্ষ শুরু হয়। বাউফল নওমালা ইউনিয়নে রাত নেমে এলেই বিকট শব্দে কেঁপে ওঠে বিস্তীর্ণ জনপদ। বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে টহল দিচ্ছে ভাড়াটে সন্ত্রাসী। এদের ভয়ে সন্ধ্যার পর ঘর থেকে বাইরে বের হয় না কেউ। অভিযোগ রয়েছে, প্রতিপক্ষ চেয়ারম্যান প্রার্থীর সন্ত্রাসীদের হুমকির মুখে নওমালা গ্রামের মীনাবাড়ির নৌকা মার্কার প্রার্থীর এক সমর্থক পরিবার-পরিজন নিয়ে এলাকা ছেড়েছেন। ইউপি নির্বাচনের দিন যতই ঘনিয়ে আসছে ততই এ জনপথের মানুষ আতঙ্কিত হয়ে পড়ছেন। নৌকা মার্কার চেয়ারম্যান প্রার্থী ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট কামাল হোসেন বিশ্বাস অভিযোগ করেন, ঘোড়া মার্কার চেয়ারম্যান প্রার্থী শাহজাদা হাওলাদারের ভাড়াটে সন্ত্রাসীরা রাত নেমে এলেই মোড়ে মোড়ে টহল দেয়। তাদের কর্মী-সমর্থকরা ভোটারদের কাছে যেতে পারছে না। শনিবার রাতে নয়ারহাট বাজারের পশ্চিম পাশে মজুমদার বাড়ির কাছে পরপর চার রাউন্ড ফাঁকা গুলিবর্ষণ করে আতঙ্কের সৃষ্টি করে।
×