ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

নিখোঁজের ৩ দিন পর যশোরের সন্ত্রাসী নজুর লাশ মিলল ঝিনাইদহে

প্রকাশিত: ০৫:৩২, ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

নিখোঁজের ৩ দিন পর যশোরের সন্ত্রাসী নজুর লাশ মিলল  ঝিনাইদহে

স্টাফ রিপোর্টার, যশোর অফিস ॥ তিনদিন নিখোঁজ থাকার পর অবশেষে যশোরের ষষ্ঠীতলাপাড়ার সন্ত্রাসী শরিফুল ইসলাম ওরফে নজুর মৃতদেহ পাওয়া গেছে। পার্শ¦বর্তী জেলা ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার বারবাজার ফুলবাড়ি নামক স্থান থেকে নজুর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। নিহত নজু যশোর শহরের ষষ্ঠীতলাপাড়ার চুন্নু মিয়ার ছেলে। স্থানীয়দের অভিযোগ, পুলিশ পরিচয়ে তাকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। জানা গেছে, বুধবার কালীগঞ্জ থানা পুলিশ এক যুবকের লাশ উদ্ধার করে অজ্ঞাত হিসেবে। বৃহস্পতিবার এ সংক্রান্ত একটি রিপোর্ট যশোরের পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। একই সঙ্গে নজুর নিখোঁজ হওয়ার সংবাদও ওইদিন স্থানীয় পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। দুইদিন নজুর খোঁজ না পেয়ে নজুর মা-বাবা কোতোয়ালি থানায় যান। সেখানে জিডি করতে চাইলে তাদের কোন জিডি নেয়নি পুলিশ। বিষয়টি তারা যশোর প্রেসক্লাবে গিয়ে সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করেন। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় পুনরায় প্রেসক্লাবে গিয়ে নজুর মা রহিমা বেগম ও বাবা চুন্নু মিয়া সাংবাদিকের ল্যাপটপে উদ্ধার যুবকের ছবি দেখে তাদের শনাক্ত করেন। এ সময় তারা কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। চুন্নু মিয়া ও রহিমা বেগম জানান, গত ২৩ ফেব্রুয়ারি রাতে একটা ফোন পেয়ে নজু বাড়ি থেকে বের হয়। যাওয়ার সময় বলে যায় ৫ মিনিটের মধ্যে চলে আসবে। পরে সে বাড়ি না ফেরায় অনেক খোঁজাখুঁজির পর জানতে পারেন, রেলস্টেশন এলাকার নিঝুম হোটেলের সামনে থেকে কে বা কারা তাকে বোরকা পরিয়ে গাড়িতে তুলে নিয়ে গেছে। এরপর থেকে তাকে আর খুঁজে পাওয়া যায়নি। বৃহস্পতিবার দুপুরে কোতোয়ালি থানায় নজুর মা-বাবা তাদের সন্তানের বিষয়ে খোঁজখবর নিতে গেলে তাদের তাড়িয়ে দেয়া হয় বলে তারা অভিযোগ করেন। পুলিশ তাদের কাছে উল্টো নজুর বন্ধুদের নাম ও ফোন নম্বর চায়। নজুর বোন রশিদা খাতুন জানিয়েছেন, নিঝুম হোটেলের মধ্যে থেকে তার ভাইকে নিয়ে যেয়ে খুন করা হয়েছে। সে সন্ত্রাসী বলে কি মানুষ না? তাকে এভাবে হত্যা করতে হবে? তিনি কান্না জড়িত কণ্ঠে বলেন, এক বছর আগে এই দিনে বেজপাড়া তালতলা মোড় এলাকায় যারা সন্ত্রাসী ডলারকে পিটিয়ে হত্যা করেছিল, তারাই তার ভাই নজুকে হত্যা করিয়েছে। নজুর স্ত্রীর নাম চন্দনা। সে ৬ মাসের অন্তঃসত্ত্বা। একটি সূত্র জানায়, নজু ষষ্ঠীতলাপাড়ার সুরেন্দ্রনাথ রোডের একজন চিহ্নিত সন্ত্রাসী। চাঁদাবাজ হিসেবে তার কুখ্যাতি রয়েছে। গত ২০ ফেব্রুয়ারি রাতে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বোমা হামলাকারীদের একজন নজু। ওই এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী ম্যানসেলের সহযোগী। ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ থানার ওসি আনোয়ার হোসেন জানান, ভোর ৫টার দিকে যশোর-ঝিনাইদহ মহাসড়কের পাশে ওই যুবকের লাশ দেখতে পেয়ে এলাকাবাসী পুলিশে খবর দেয়। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে মর্গে প্রেরণ করে। নিহতের শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। এ বিষয়ে কথা হয় যশোর কোতোয়ালি থানার ওসি ইলিয়াস হোসেন জানান, উদ্ধার মরদেহ নজুর কি-না তা তিনি জানেন না। নজুর স্বজনদের সঙ্গে দুর্ব্যবহারের কথা তিনি অস্বীকার করেন।
×