ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

এশিয়া কাপ টি২০

বাংলাদেশকে হারিয়ে ভারতের শুভ সূচনা

প্রকাশিত: ০৫:১৭, ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

বাংলাদেশকে হারিয়ে ভারতের শুভ সূচনা

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ভরা ফাল্গুনে বুধবার শিলাবৃষ্টি হয়েছে! ভারতের বিপক্ষে এশিয়া কাপ টি২০’র উদ্বোধনী ম্যাচে বাংলাদেশ দলেও আনন্দের বন্যা বয়েছে! শুরুতেই যে জয় মিলেছে। সেটি ম্যাচ জয় নয়। টস জয়। যে দলই জিতত, সবুজ উইকেটে ফিল্ডিংই আগে নিত। বাংলাদেশই তা করতে পেরেছে। কিন্তু রোহিত শর্মার ৮৩ রানে ঝড়ে সেই আনন্দ আর থাকল কই। ২০ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে যে ১৬৬ রান করে ফেলল ভারত। শুরু থেকে বাংলাদেশ পেসাররা ভারত ব্যাটসম্যানদের চাপে রাখেন। তাসকিন আহমেদ যে প্রথম ওভারে একের পর এক দ্রুতগতির বল ছাড়তে থাকলেন, রোহিত শর্মা সেই বলগুলো ব্যাটেই লাগাতে পারলেন না; সেখানেই যেন ম্যাচের আসল মেজাজ মিলতে শুরু করে দিল। এমনিতে ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ হচ্ছে বিশ্ব ক্রিকেটে সবচেয়ে উত্তেজনাকর ম্যাচ। কিন্তু ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ সচরাচর না হওয়ায় এখন যেন দিন যাচ্ছে আর বাংলাদেশ-ভারত ম্যাচ হয়ে উঠছে উত্তেজনার ম্যাচ! সেই উত্তেজনা দ্বিতীয় ওভারেই শিখর ধাওয়ানকে (২) বোল্ড করে দিয়ে আরও বাড়িয়ে দিলেন আল আমিন। সবাই তখন অপেক্ষায়- গতবছর জুনে ভারতের বিপক্ষে সিরিজে ৩ ম্যাচে ১৩ উইকেট নিয়ে রেকর্ড গড়া বাংলাদেশের ‘কাটার মাস্টার’ মুস্তাফিজুর রহমান কখন বোলিংয়ে আসবেন। চতুর্থ ওভারেই মুস্তাফিজ বল হাতে নিলেন। এক ওভার বল করিয়েই মুস্তাফিজকে ১৪ ওভারের আগে আর বল করতেই আনলেন না মাশরাফি। তবে নিজেই বোলিংয়ে এসে বিরাট কোহলির (৮) উইকেটটি তুলে নিলেন। ভারত পুরোপুরি চাপে পড়ে গেল। এ মাসেই শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে তিন ম্যাচের টি২০ সিরিজের প্রথম ম্যাচে ১০১ রানে অলআউট হয়ে হেরেছিল ভারত। বুধবার বাংলাদেশ-ভারত ম্যাচ যে উইকেট হয়েছে, সেইরকম উইকেটই ছিল। তাই সেই ম্যাচের মতোই ভারতের অবস্থা হতে পারে। সেই ধারণাও করা হয়। যখন সুরেশ রায়নাকে (১৩) বোল্ড করে দেন মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, তখন সেই সম্ভাবনা আরও জেগে ওঠে। তখন যে ভারতের স্কোরবোর্ডে ৪২ রান যোগ হতেই ৩ উইকেটের পতন ঘটে যায়। পাওয়ার প্লেতে ৩১ রান যোগ করতে পারে ভারত। ৮ ওভারে গিয়ে ৪৩ রান যুক্ত হয়। ৫২ রানের সময় ২১ রানে থাকা রোহিতও আউট হয়ে যেতে পারতেন। তাসকিনের বলটি পয়েন্টে খেলেন রোহিত। সেখানে ছিলেন সাকিব। কিন্তু সহজ ক্যাচটি হাতের মুঠোয় করতে পারেননি সাকিব। সুযোগটি পেয়ে টানা তিন বলে দুই চার ও এক ছক্কা হাঁকিয়ে দেন রোহিত। মুহূর্তেই ৫২ থেকে ৬৬ রানে পৌঁছে যায় ভারত। ৪২ বলে ৫০ রানও করে ফেলেন রোহিত। বিপদ যেন আসতে শুরুও করে। এত সুন্দর শুরুর পর হঠাৎ করেই কেমন যেন ভারতের নিয়ন্ত্রণে চলে যায় ম্যাচটি। এমন মুহূর্তে যুবরাজ সিংকে (১৫) আউট করে দিয়ে যেন ক্যাচ ফেলার অভিশাপ থেকে মুক্তি পেতে চান সাকিব। ততক্ষণে ৯৭ রান যোগ হয়ে যায়। ভারতের ৪ উইকেটেরও পতন ঘটে। ১৫ ওভারও শেষ হয়ে যায়। কিন্তু সাকিব কী সত্যিই মুক্তি পেলেন। যে রোহিতের ক্যাচটি লুফে নিতে পারেননি, সেই রোহিতই ভারতকে এগিয়ে নিয়ে গেলেন। তার সঙ্গে হার্দিক পান্ডের দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে ১৬ থেকে ১৯ ওভারের মধ্যে চার ওভারে ৬১ রান যোগ করে ফেলে ভারত। আল আমিনের বলে ১৫৮ রানে আউট হওয়ার আগে করলেন ৫৫ বলে ৭ চার ও ৩ ছক্কায় ৮৩ রান, যা ভারতের স্কোরবোর্ডকে অনেক মজবুত করে তোলে। আল আমিন শেষ ওভারে বল করতে এসে রোহিতকেও আউট করলেন। পান্ডেকেও (৩১) আউট করে দিলেন। কিন্তু ততক্ষণে ভারত অনেক বেশি রান স্কোরবোর্ডে জমা করে ফেলে। শেষে মহেন্দ্র সিং ধোনি ২ বল খেলার সুযোগ পান। ২ বলে এক ছক্কাসহ ৮ রান নিয়ে নেন। ভারতের স্কোর দাঁড়ায় ১৬৬ রান। শেষ ৫ ওভারেই ৬৯ রান নিয়ে নেয় ভারত। মুস্তাফিজকে নিয়ে খুব উচ্চবাচ্য হয়েছে। কিন্তু সেই মুস্তাফিজ কিছুই করতে পারলেন না। ৪ ওভার বল করে ৪০ রান দিলেন! কোথায় গেল ‘সেই কাটার’। মুস্তাফিজ কিছুই করতে পারলেন না। তার চেয়ে আল আমিন অনেক ভাল বল করলেন। ৩ উইকেট নিলেন। কিন্তু বাংলাদেশের সামনে ভারত বড় টার্গেটই দাঁড় করিয়ে ফেলল।
×