ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

ইনফ্রাস্ট্রাকচার ব্যাংক ২০১৬ আইন পাস

প্রকাশিত: ০৫:২১, ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

ইনফ্রাস্ট্রাকচার ব্যাংক ২০১৬ আইন পাস

সংসদ রিপোর্টার ॥ অবকাঠামো এবং অন্যান্য উৎপাদনশীল খাতে বিনিয়োগের মাধ্যমে এশিয়ার টেকসই উন্নয়ন, সম্পদ সৃষ্টি এবং যোগাযোগ অবকাঠামো উন্নয়নে উৎসাহিত করার লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠিত হতে যাওয়া এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংকের (এআইআইবি) অংশীদার হতে মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে একটি বিল পাস করা হয়েছে। অর্থপ্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান ‘এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক আইন-২০১৬’ নামের বিলটি পাসের প্রস্তাব উত্থাপন করলে তা কণ্ঠভোটে পাস হয়। এর আগে বিলের উপর জনমত যাচাই ও বাছাই কমিটিতে পাঠানোর কণ্ঠভোটে নাকচ হয়ে যায়। ব্যাংকটির সদস্য পদের জন্য বাংলাদেশকে শেয়ারমূল্য বাবদ ৬৬ কোটি ৫০ লাখ মার্কিন ডলার পরিশোধ করতে হবে। মঙ্গলবার বিকেলে স্পীকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে শুরু হওয়া সংসদ অধিবেশনে বিলটি পাসের আগে প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে বিরোধী দলের সদস্যদের প্রাণবন্ত বিতর্ক হয়। বিরোধীদলীয় হুইপ ফখরুল ইমাম বাংলাদেশ এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক (এআইআইবি)-এর প্রতিষ্ঠাতা সদস্য কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন উত্থাপন করেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশ এই ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য হতে চাইলে তা হতে পারেনি। যার তথ্য প্রমাণ আমার কাছে রয়েছে। আর সাধারণ সদস্য হওয়ার জন্য এই আইন পাসের প্রয়োজন নেই। তিনি ছাড়াও সংসদ সদস্য নূরুল ইসলাম ওমর ও অধ্যাপিকা রওশন আরা মান্নান বিলটি পাসের আগে জনমত যাচাইয়ের প্রস্তাব দেন। এসব প্রস্তাবের বিরোধিতা করে অর্থপ্রতিমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ এআইআইবি’র প্রতিষ্ঠাতা সদস্য এ নিয়ে সন্দেহ প্রকাশের কোন সুযোগ নেই। আর উন্নয়ন প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করতে এই ব্যাংকের সদস্য হওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাই বিলটি পাস করা জরুরী। তিনি বলেন, ইতোমধ্যে সারাদেশে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। সংসদীয় কমিটিও যাচাই বাছাই করেছে। তাই নতুন করে জনমত যাচাইয়ের প্রয়োজন নেই। পাস হওয়া বিলের উদ্দেশ্য ও কারণ সংবলিত বিবৃতিতে বলা হয়, এশিয়ার ভৌত অবকাঠামো উন্নয়নে সহায়তা প্রদানের লক্ষ্যে চীন এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক (এআইআইবি) প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নিয়েছে। এআইআইবি’তে প্রতিষ্ঠাতা সদস্য হিসেবে যোগ দিতে বাংলাদেশ ২০১৪ সালের ১৪ অক্টোবর সমঝোতা স্মারকে স্বাক্ষর করেছে। ২০১৫ সালের ২৯ জুন বাংলাদেশসহ ৫৭টি সদস্য দেশ আর্টিকেল অব এগ্রিমেন্ট (এওএ) সই করে। গত ২৫ ডিসেম্বর থেকে কার্যকর হয়েছে। এই ব্যাংকের সদস্য হওয়ায় বাংলাদেশেরও কিছু দায়দায়িত্ব রয়েছে। যে কারণে নতুন আইন প্রণয়ন প্রয়োজন। যে কারণে এই বিলটি আনা হয়েছে। বিলে বলা হয়েছে, এআইআইবি’র অনুমোদিত মূলধন ধরা হয়েছে এক শ’ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। সদস্য পদের জন্য বাংলাদেশকে শেয়ারমূল্য বাবদ ৬৬ কোটি ৫০ লাখ মার্কিন ডলার পরিশোধ করতে হবে। এর মধ্যে পরিশোধিত মূলধন হিসেবে ১৩ কোটি ২১ লাখ ডলার এবং ৫২ কোটি ৮৪ লাখ ডলার পরিশোধ করতে হবে অপরিশোধিত (কিস্তিতে) মূলধন হিসেবে। প্রতিকিস্তিতে ১০৫ কোটি ৬৮ লাখ পরিশোধ করতে হবে। বিলে আরও বলা হয়েছে, এই ব্যাংকের উদ্দেশ্য হচ্ছে প্রধানত অবকাঠামো এবং অন্যান্য উৎপাদনশীল খাতে বিনিয়োগের মাধ্যমে এশিয়ার টেকসই উন্নয়ন, সম্পদ সৃষ্টি এবং যোগাযোগ অবকাঠামো উন্নয়নে উৎসাহিত করা। দ্বি-পাক্ষিক ও বহুপক্ষীয় উন্নয়ন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগের মাধ্যমে কাজ করে আঞ্চলিক সহযোগিতা ও অংশীদারিত্ব বৃদ্ধির মাধ্যমে উন্নয়ন চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করা।
×