ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

মূল হোতা বাঘালের হুকুমেই চার শিশুকে হত্যা

প্রকাশিত: ০৫:৩৬, ২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

মূল হোতা বাঘালের হুকুমেই চার শিশুকে হত্যা

রফিকুল হাসান চৌধুরী তুহিন, হবিগঞ্জ থেকে ॥ বাহুবলে পৈশাচিক কায়দায় চার স্কুলছাত্রকে হত্যার পর সুন্দ্রাটিকি গ্রামের মানুষের মাঝে এখনও বিরাজ করছে চাপা আতঙ্ক। শিক্ষক থাকলেও স্কুলগুলোতে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি একেবারেই কম। এদিকে চার স্কুলছাত্র হত্যাকা-ে অংশ নেয়া রুবেল আদালতে জবানবন্দী দিয়েছে। উদ্ধার করা হয়েছে হত্যাকা-ে ব্যবহৃত শাবল, বস্তা ও রক্তমাখা পাঞ্জাবি। অটোরিক্সা মালিক বাচ্চুর গ্যারেজ থেকে উদ্ধার করা হয় রক্তমাখা পাঞ্জাবি ও বস্তা। আর ঘাতক আরজুর বাড়ি থেকে উদ্ধার হয় শাবল। এ হত্যাকা-ের সঙ্গে জড়িতদের দ্রুতবিচার ও ফাঁসির দাবিতে ফুসে উঠেছে বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ। শনিবার বাহুবলের মিরপুরসহ বিভিন্ন স্থানে নানা সংগঠন দিনভর সভা-সমাবেশ, মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে। বাহুবল অনার্স কলেজের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, মিরপুর উন্নয়ন ফোরাম, দিগাম্বর মাদ্রাসার শিক্ষক-শিক্ষার্থী, সচেতন নাগরিক সমাজ, সানশাইন প্রি-ক্যাডেট এ্যান্ড স্কুল, প্রজন্ম ক্লাবসহ অন্তত দশটি সংগঠন এ হত্যাকা-ের সঙ্গে জড়িতদের গ্রেফতার ও দ্রুত বিচার দাবি করে। এ সময় মিছিল-সেøাগানে উত্তাল ছিল এসব স্থান। শিশু হত্যায় জড়িত সন্দেহে শনিবার সকালে বাহুবলের সুন্দ্রাটিকি গ্রাম থেকে সালেহ আহমেদ (২৭) নামে এক যুবককে আটক করেছে পুলিশ। সকাল ১০টার দিকে এই গ্রামে ঘোরাফেরা করার সময় স্থানীয়দের সন্দেহ হলে তাকে আটক করে পুলিশ। তার আগে তারই ভাই বশির আহমদকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদের আওতায় নিয়েছে পুলিশ। ফলে এ নিয়ে গ্রেফতার হলো ছয়জন। এমনই পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে শিশু শুভ, তাজেল, মনির ও ইসমাঈলকে হত্যার লোমহর্ষক জবানবন্দী দিয়েছে কিলিং মিশনের প্রধান দুর্ধর্ষ আব্দুল আলী বাঘালের ছেলে বখাটে রুবেল। শুক্রবার রাতে হবিগঞ্জের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কৌশিক আহমেদ খন্দকারের আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দীতে রুবেল বলেন, ওই শিশুদের অপহরণ ও হত্যাকা-ের মিশনে অংশ নেয় ছয়জন। প্রধান হোতা আব্দুল আলী বাঘালের হুকুমেই এই চার শিশুকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। গত ১২ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় বৃষ্টির মধ্যে জনশূন্য ফাঁকা মাঠ থেকে এই শিশুদের প্রথমে ধরা হয় এবং পরবর্তীতে অজ্ঞান করে বাচ্চু মিয়ার গাড়ির গ্যারেজে নেয়া হয়। পরবর্তীতে বাচ্চুর সিএনজি চালিত অটোরিক্সায় তুলে নিয়ে এই শিশুদের রাতেই হত্যার পর ইসাবিল নামে স্থানে বালির নিচে পুঁতে রাখা হয়। এদিকে সিলেট রেঞ্জের ডিআইজি মোঃ মিজানুর রহমান, অতিরিক্ত ডিআইজি ড. আক্কাছ উদ্দিন ভূইয়ার সার্বিক তত্ত্বাবধান ও হবিগঞ্জের এসপি জয়দেব কুমার ভদ্রের নেতৃত্বে চলছে এ হত্যাকা-ের সঙ্গে জড়িত পলাতকদের গ্রেফতারে সাড়াশি অভিযান। আধিপত্য বিস্তার ও গ্রামের নেতৃত্ব নিয়ে তালুকদার গোষ্ঠীর সঙ্গে দুর্ধর্ষ আব্দুল আলীর দ্বন্দ্বের জের ধরে গত ১২ ফেব্রুয়ারি বাহুবলের সুন্দ্রাটিকি গ্রাম থেকে ওই চার শিশুকে তুলে নিয়ে হত্যা করা হয়।
×