ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

বঙ্গবন্ধুর ছবি বিকৃতি

চট্টগ্রাম আওয়ামী লীগে উত্তাপ বাড়ছেই

প্রকাশিত: ০৫:১১, ২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

চট্টগ্রাম আওয়ামী লীগে উত্তাপ বাড়ছেই

মোয়াজ্জেমুল হক, চট্টগ্রাম অফিস ॥ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর ছবি বিকৃতির ঘটনা নিয়ে নগর আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপে উত্তাপ কেবলই বাড়ছে। এমপি এম এ লতিফের বঙ্গবন্ধুর ছবিকে বিকৃতভাবে হোল্ডিংয়ের মাধ্যমে উপস্থাপন করায় দলীয় রাজনীতিতে সংঘাতের প্রতিবাদে বক্তব্য বিবৃতি প্রদান শেষে এমপি লতিফের বিচারের দাবিতে রীতিমতো মাঠে নেমেছেন চট্টগ্রামের সাবেক মেয়র ও নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী। পক্ষান্তরে, এমএ লতিফের পক্ষাবলম্বন করেছেন চট্টগ্রামের অপর সাত এমপি। এসব ঘটনাকে কেন্দ্র করে মামলার পাশাপাশি, জনসভা ও নগরীর ১৬ থানায় জিডি দায়েরের ঘটনা ঘটেছে। লতিফের বিরোধীরা করেছেন মামলা। আর ভীতসন্ত্রস্ত এমএ লতিফ প্রাণনাশের হুমকি পেয়ে সিএমপির সব থানায় জিডি করেছেন। এদিকে গত দুই দিনে এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী ও এমএ লতিফ এবং তাকে সমর্থনকারী কয়েক এমপিকে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে একই মঞ্চে দেখা যাওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। এমপি লতিফ পক্ষে বঙ্গবন্ধুর ছবি বিকৃতি করার ঘটনায় মহিউদ্দিন চৌধুরীর পক্ষে ইতোপূর্বে পনেরো দিনের আল্টিমেটাম দেয়া হয় তাকে গ্রেফতারের জন্য। এর পাশাপাশি নগরীতে লতিফকে অবাঞ্ছিতও ঘোষণা করা হয়। এখন মহিউদ্দিন চৌধুরী ঘোষণা দিয়েছেন আগামী ১ মার্চ লালদীঘি ময়দানে জনসভার মাধ্যমে লতিফের বিরুদ্ধে চূড়ান্ত কর্মসূচী দেয়া হবে। আওয়ামী লীগের নগর পরিস্থিতি বলা চলে এই নিয়ে এখন বেশ উত্তপ্ত। শনিবার চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে মহানগর আওয়ামী লীগের পক্ষে এক সাংবাদিক সম্মেলনে বলা হয়েছে এমএ লতিফ পাকিস্তানী প্রেতাত্মা, পরাজিত শক্তির দোসর। বঙ্গবন্ধুর ছবি বিকৃতির অপরাধে এমএ লতিফের বিচারের দাবিতে নগর মহিলা আওয়ামী লীগ ১ মার্চ লালদীঘিতে সমাবেশের ঘোষণা দেয়া হয়েছে। প্রয়োজনে মাঠে নামবে বলে ঘোষণা দেয়া হয়েছে। সাংবাদিক সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন দলের সভানেত্রী হাসিনা মহিউদ্দিন। সংবাদ সম্মেলনে লতিফের পক্ষাবলম্বনকারী এমপি ও নেতাদের হাইব্রিড বলেও সম্বোধন করা হয়। প্রশ্ন উঠেছে, আওয়ামী লীগ সরকারে। বঙ্গবন্ধুর ছবি বিকৃতির ঘটনা নিয়ে যে লঙ্কাকা-ের অবতারণা হয়েছে তা শেষ পর্যন্ত একটি হাস্যকর ঘটনায় পরিণত হতে চলেছে। কেননা, এ ঘটনা দল এবং আইনের পরিপন্থী বিধায় যারা এর সঙ্গে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণ অপরিহার্য ছিল। বিলম্ব হলেও এখনও এ ব্যাপারে ব্যবস্থা গ্রহণ করা যায়। কিন্তু সবই রহস্যময় হয়ে আছে। জাতির পিতার প্রতিকৃতি নিয়ে বিকৃতি ও অবমাননাকর ঘটনায় যারাই লিপ্ত থাকুক না কেন তা তদন্ত করে বের করে আনা কোন বিষয় নয় বলে মনে করা হচ্ছে। একটি অনাকাক্সিক্ষত ঘটনাকে নিয়ে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম এ নগরীতে যা চলমান তা নিয়ে নিরপেক্ষ ও শান্তিপ্রিয় মানুষ শঙ্কিত ও উদ্বিগ্ন। কারও কারও মতে, এমপি লতিফ যে কাজটি করেছেন তা সঠিক বলে প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধে আশু ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত। অপরদিকে বিষয়টি যদি ভুলবশত বা অনিচ্ছাকৃত হয়ে থাকে তাহলে তা ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতেই গ্রহণ করা উচিত।
×