ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

শিক্ষিতের হার ৬১ শতাংশ

প্রকাশিত: ০৫:২৭, ২৯ জানুয়ারি ২০১৬

শিক্ষিতের হার ৬১ শতাংশ

সংসদ রিপোর্টার ॥ শুধু কওমী মাদ্রাসায় জঙ্গী সৃষ্টি হয় এ কথা ঠিক নয়। তবে কিছু কওমী মাদ্রাসা আছে যেগুলো জঙ্গী তৈরির কারখানা। অনেক মাদ্রাসায় জঙ্গীদের ট্রেনিংও দেয়া হয়। তাই সংসদ সদস্যদের নিজ নিজ এলাকার মাদ্রাসার ওপর নজর রাখতে হবে। পাশাপাশি অভিভাবকদের তাদের সন্তানদের ওপর সম্পূর্ণ দৃষ্টি রাখা উচিত, তার সন্তানরা আসলে কি করে, খারাপ পথে যায় কিনা? এসব গভীরভাবে মনিটরিং করলে যুবকরা বিপথে যেতে পারবে না। বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে শিক্ষামন্ত্রীর অনুপস্থিতিতে তাঁর মন্ত্রণালয়ের প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে এসব কথা বলেন খাদ্যমন্ত্রী এ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম। জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদ ও তরিকত ফেডারেশনের নজিবুল বশর মাইজভা-ারীর পৃথক দুটি সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী আরও বলেন, আমি আগেও বলেছি একমাত্র কওমী মাদ্রাসায় জঙ্গী সৃষ্টি হয় এ কথা ঠিক নয়। ইংরেজী মাধ্যমে যারা ‘ও’ লেভেল, ‘এ’ লেবেল পড়ছে, ইঞ্জিনিয়ার, ডাক্তার তাদের মধ্য থেকেও জঙ্গী ধরা পড়ছে। মন্ত্রী প্রশ্ন রেখে বলেন, আজ আনসারুল্লাহ টিম কারা? এরা ইংরেজী ‘ও’ লেভেল, ‘এ’ লেভেলের ছাত্র। ব্লগার হত্যাকা-ের সঙ্গে জড়িত থাকার অপরাধে এরাই ধরা পড়ছে। কাজেই কওমী মাদ্রাসাকে ঢালাওভাবে দোষারোপ করা ঠিক হবে না। তারপরও আমি সংসদ সদস্যদের নিজ এলাকার মাদ্রাসার ওপর নজরদারি রাখতে বলব। এর আগে স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য হাজী মোহাম্মদ সেলিম মন্ত্রীর কাছে সম্পূরকে প্রশ্ন করতে গিয়ে বলেন, কিছু কিছু কওমী-মাদ্রাসার কর্মকা-ের জন্য সরকারকে বদনাম হতে হয়। নতুন নতুন কওমী মাদ্রাসা হচ্ছে, এতে সরকারের নিয়ন্ত্রণ আছে কি না? জবাবে মন্ত্রী কামরুল ইসলাম বলেন, এটি একটি জাতীয় ইস্যু। তিনি অত্যন্ত একটি স্পর্শকাতর প্রশ্নের উত্তর দিতে বলেছেন। আসলে সরকার কওমী মাদ্রাসাগুলোকে নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করছে। এ লক্ষ্যে কওমী মাদ্রাসার জন্য একটি বোর্ড বা কমিটিও করা হয়েছে। আমি যতদূর জানি ফরিদ উদ্দিন মাসুদ সাহেব, হেফাজতে ইসলামের মাওলানা শফী সাহেবও সেই কমিটিতে আছেন। এ ব্যাপারে তাদের সিলেবাস মোটামুটি কিভাবে আধুনিকায়ন করা যায় সে ব্যাপারে চিন্তা-ভাবনা করা হচ্ছে। সংসদ সদস্যদের প্রতি অনুরোধ জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, প্রত্যেক সংসদ সদস্যদের নিজ নিজ এলাকায় কওমী মাদ্রাসার সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। প্রত্যেকটি কওমী মাদ্রাসার সবগুলো জঙ্গি তৈরির কারখানা, এই কথাটা আমি বলব না। কিন্তু কিছু কিছু কওমী মাদ্রাসায় এ সমস্ত জঙ্গীদের ট্রেনিং দেয়া হয়। এসব বিষয়ে নজর দিতে হবে। দেশে শিক্ষিতের হার ৬১ শতাংশ ॥ বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস)-২০১৫ অনুযায়ী দেশের শিক্ষিতের হার ৬১ শতাংশ। শিক্ষিতের হার বৃদ্ধির লক্ষ্যে বিদ্যালয়ে ভর্তির হার বৃদ্ধি, ঝরে পড়ার হার কমানো, উপস্থিতির হার বাড়ানো এবং শিক্ষাচক্র সমাপনের হার বৃদ্ধিতে সরকার নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। বৃহস্পতিবার দশম জাতীয় সংসদে প্রশ্নোত্তর পর্বে জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য বেগম সালমা ইসলামের প্রশ্নের জবাবে এ তথ্য জানিয়েছেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান। তিনি জানান, প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গমনোপযোগী ৯৭ দশমিক ৯৪ শতাংশ শিশুকে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি করা হয়েছে। প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ঝরে পড়া হার কমে ২০ দশমিক ৪ শতাংশে নেমে এসেছে এবং শিক্ষাচক্র সমাপণের হার ৭৯ দশমিক ৬ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। অবসরে যাওয়া শিক্ষকদের জন্য এক হাজার ৮শ’ কোটি টাকা প্রয়োজন ॥ সংসদ সদস্য ফরিদুল হক খানের প্রশ্নের জবাবে শিক্ষামন্ত্রীর পক্ষে খাদ্যমন্ত্রী এ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম বলেন, অবসর সুবিধা বোর্ডে বর্তমানে অনিষ্পন্ন ৪১ হাজার ৮০১টি আবেদন নিষ্পতিতে ঘাটতি বাবদ প্রায় এক হাজার আটশত কোটি টাকা প্রয়োজন। আবেদন নিষ্পত্তিতে অর্থ মন্ত্রণালয়কে ছয়শত কোটি টাকা বরাদ্দের জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। তিনি আরও জানান, এ সুবিধা হালনাগাদ করাসহ অব্যাহত রাখার স্বার্থে বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিক্ষক ও কর্মচারী অবসর সুবিধা বোর্ডের জন্য বছরে প্রায় চারশত কোটি টাকা এবং বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিক্ষক ও কর্মচারী কল্যাণ ট্রাস্টের জন্য দুইশত কোটিসহ প্রতি মাসে মোট ৬০০ কোটি টাকার মুনাফার লক্ষ্যে (আনুমানিক ১০ শতাংশ হারে সুদ হিসেবে) সিডমানি বাবদ মোট ৭ হাজার ২০০ কোটি টাকা এককালীন বরাদ্দ অথবা অবসর সুবিধা আইন ৯(১)(ক) অনুযায়ী প্রতিবছর জাতীয় ছয়শত কোটি টাকা বরাদ্দের জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ করা হয়েছে। প্রয়োজনীয় অর্থের সংস্থান হলে তাৎক্ষণিক সকল আবেদন নিষ্পতি করা হবে।
×