ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

মুনতাসীর মামুন

বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ড ॥ সেনা কর্মকর্তাদের বয়ান

প্রকাশিত: ০৩:৪০, ২৭ জানুয়ারি ২০১৬

বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ড ॥ সেনা কর্মকর্তাদের বয়ান

(২৬ জানুয়ারির পর) ফারুক ১৯৭৩ সালে একবার অভ্যুত্থান করেছিলেন বলে জানা যায়। সেনাবাহিনীর তিনটি ট্যাঙ্ক ছিল। এ তিনটিকেই কব্জা করে তিনি এগোতে চেয়েছিলেন। উর্ধতন অফিসাররা তা জানতেন। তা সত্ত্বেও শফিউল্লাহ ৩২টি ট্যাঙ্কের রেজিমেন্টের অধিনায়ক ফারুককেই করেছিলেন। শুধু তাই নয়, ১৫ আগস্টের দু’মাস আগে জামিলের ব্রিগেডের একমাত্র গোয়েন্দা ইউনিটটিকে প্রত্যাহার করে নেন। জিয়া সেনাপ্রধান হওয়ার পরদিন এরশাদ দিল্লী থেকে চলে আসেন জিয়াকে অভিনন্দন জানাতে। এতে জিয়া খুব ক্ষুব্ধ হন এবং তাকে বঙ্গভবনে যেতেও নিষেধ করেন। কারণ সেখানে তখনও অভ্যুত্থানকারীরা অবস্থান করছিল। এরশাদ ঠিক ঠিকই রাতে সেখানে যান। জিয়ার আমলের শেষের দিকে আগস্টের খুনীরা আবারও একটি বৈঠক করেন জিয়াকে ক্ষমতাচ্যুত করার জন্য। এরা সবাই বিদেশে অবস্থান করছিলেন। তাদের ঢাকায় তলব করা হয়। তারা কেউ না এসে চাকরি ছেড়ে বিভিন্ন দেশে রাজনৈতিক আশ্রয় নেন। ঢাকার দুজন অফিসার লে. কর্নেল দীদার ও লে. কর্নেল নুরুন্নবীর একই কারণে বিচার হয় এবং কারাদণ্ড দেয়া হয়। ক্ষমতায় এসে জেনারেল এরশাদ ওই খুনীদের চাকরিতে পুনর্নিয়োগ করেন। ‘শুধু পুনর্বাসনই নয়, এরশাদ আগস্ট অভ্যুত্থানের সঙ্গে জড়িত উল্লিখিত অফিসারদের কর্মস্থলে বিনানুমতিতে অনুপস্থিতকালের প্রায় তিন বছরের পুরো বেতন ও ভাতার ব্যবস্থা করে দেন।” [পৃ. ১২১] কিন্তু দেশে বন্দী থাকা দুজনকে মুক্তি দেননি। খালেদা জিয়াও এরশাদের সেই সিদ্ধান্ত বহাল রাখেন। জামিল উল্লেখ করেছেন সেই ‘ব্রিগেডিয়ার রউফ থেকে এরশাদ মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি চরম বিদ্বেষপূর্ণ ছিলেন।’ মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি বহুদিনের লালিত হিংসা-বিদ্বেষ আর ঘৃণার চরম প্রকাশ তারা ঘটিয়েছিলেন পরবর্তীকালে চট্টগ্রামে রাষ্ট্রপতি জিয়ার হত্যাকাণ্ডের পর। মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি অন্ধ বিদ্বেষের কারণে- ‘হত্যাকাণ্ডকে উপলক্ষ করে কতিপয় অমুক্তিযোদ্ধা সিনিয়র অফিসার এরশাদের নেতৃত্বে তাদের প্রতিহিংসা চরিতার্থ করেছিলেন। মুক্তিযোদ্ধা অফিসারদের ফাঁসি, জেল ও চাকরিচ্যুত করেই এরশাদ ও তার পোষ্য ওই অমুক্তিযোদ্ধা সিনিয়র অফিসাররা সন্তুষ্ট হতে পারেননি। রাষ্ট্রপতি থাকাকালে এরশাদ এক অলিখিত নির্দেশে মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তান ও নিকটাত্মীয়দের সেনাবাহিনীর অফিসার কোরে যোগদান নিষিদ্ধ করেছিলেন। অনেক মুক্তিযোদ্ধার মতো কর্নেল (অব) শওকত আলী এমপির এবং আমার ছেলেও সামরিক বাহিনীতে যোগদান করা থেকে বঞ্চিত হয়। পক্ষান্তরে একাত্তরে পরাজিত পাকবাহিনীর দোসরদের সন্তানদের জন্য সেনাবাহিনীর দুয়ার অবারিত করা হয়। এখানে বিশেষভাবে উল্লেখ্য, এরশাদ বাংলাদেশে আগমনের পর আর্মি হেডকোয়ার্টারের প্রথম কনফারেন্সে মুক্তিযোদ্ধাদের দুই বছরের সিনিয়রিটিকে চ্যালেঞ্জ করেছিলেন।’ [পৃ. ১১৫] গ্রন্থের তৃতীয় পর্ব ‘ষড়যন্ত্রময় নবেম্বরে’ ৭ নবেম্বর ও চার নেতাকে হত্যার বিবরণ দিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন খালেদ মোশাররফ, তিনি ও আরো কয়েক জুনিয়র অফিসার পরিস্থিতি পাল্টে দিতে চেয়েছিলেন। পারেননি। ব্রিগেডিয়ার কিউ.জি. দস্তগীরের কথা উল্লেখ করেছেন যিনি বঙ্গবন্ধু হত্যা মেনে নিতে পারেননি। ওসমানী খুনীদের সমর্থন করেছিলেন। অক্টোবরের মাঝামাঝি ওসমানী প্রতিরক্ষা উপদেষ্টা হিসেবে বঙ্গভবনে সিনিয়র সেনা কর্মকর্তাদের একটি বৈঠক ডাকেন। সেখানে তিনি ‘পর্যায়ক্রমে বিভিন্ন রেজিমেন্টের সিনিয়র জেসিওদের কাছে ডেকে নিয়ে বলতে লাগলেন, যারা সরকারের বিরুদ্ধাচরণ করবে তারা ভারতীয় প্ররোচনাতেই তা করবে। তারা সব ভারতীয় এজেন্ট। ১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ড ও অভ্যুত্থান বিরোধীদের ‘ভারতের দালাল’ লেবেল সেঁটে দেয়া হলো।’ [পৃ. ১৩১] আগস্টেই শফিউল্লাহ, একে খন্দকার চাকরি নেন। এমনকি আবু সাঈদ চৌধুরীর মতো মানুষও। জামিলও এই দুঃখ করেছেন। জামিলও চাকরিচ্যুত ও গ্রেফতার হন। শাফায়াত জামিলের বিবরণে, ক্রোধ আছে, ক্ষোভ আছে, ফাঁক-ফোকরও আছে। মেজর রশীদ তার অধীনে গোলন্দাজ ইউনিটের প্রধান ছিলেন, তিনি ইঙ্গিত করেছেন সেনাপ্রধান তাকে এ ইউনিটে দিয়েছিলেন [যেন তিনি ষড়যন্ত্র করতে পারেন]। শাফায়াত জামিলের নিশ্চয় জানা ছিল, এগুলো রুটিন পোস্টিং, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত নয়। তিনি জিয়ার ঘনিষ্ঠ ছিলেন, এমনও তো হতে পারে তিনিই এ জন্য জিয়াকে তদ্বির করেছিলেন। কিন্তু আমি তা বলব না। এটি রুটিন পোস্টিং বলেই মনে করব। শফিউল্লাহ তাকে ফোন করেছিলেন এ কথা শফিউল্লাহ বিস্তারিত লিখেছেন এবং আক্ষেপ করে বলেছেন, ‘যা হোক তিনি অন্তত স্বীকার করেছেন যে তিনি ফোন করেছিলেন।’ হ্যাঁ, এমন একটি ঘটনায় সেনাপ্রধান বিপর্যস্ত থাকতে পারেন কিন্তু নির্দেশ দেননি এ ভাষ্যটি বোধহয় ঠিক নয়। শফিউল্লাহ তাকে বার বার ফোন করেছেন কিন্তু তিনি তা এড়িয়ে গেছেন। তিনিই স্বীকার করেছেন জিয়ার সঙ্গে আগে দেখা করেছেন। কেন? শফিউল্লাহ নয় কেন। তার ভাষ্য অনুযায়ী জিয়া তারপর শফিউল্লাহর বাসায় গেছেন। কিন্তু জিয়া শাফায়াতের ব্যাপারে কিছুই জানাননি। খালেদ মোশাররফের সঙ্গে তার সাক্ষাতের কথা লিখেছেন। শফিউল্লাহ তো খালেদকে পাঠিয়েছিলেন নির্দেশ দিয়ে। খালেদ সেখান থেকে শফিউল্লাহকে ফোন করেছেন কিন্তু জামিলকে পেয়েছেন তা তো বলেননি। তিনি এও লিখেছেন, তিন বাহিনীপ্রধান ৪৬ সদর দফতরে গিয়েছিলেন কিন্তু তিনি কি ছিলেন সেখানে? থাকলে তিন বাহিনীপ্রধান তো তার সঙ্গে নিশ্চয় কথা বলতেন। এ প্রসঙ্গটি তিনি এড়িয়ে গেছেন। ট্যাঙ্ক-গোলা সরবরাহ নিয়ে শফিউল্লাহ জানিয়েছেন তার সঙ্গে কথা হয় খালেদের। জামিলের সঙ্গে তো তার দেখাই হয়নি। মোশাররফ ১৫ আগস্ট কি দায়িত্ব বুঝিয়ে দিয়েছিলেন? সেনা সদরে তিনি যা বলেছেন তা অন্যদের ভাষ্যের সঙ্গেও মিলে যায়। এখানে একটি প্রশ্ন তোলা যায়। ১৯ তারিখে শাফায়াতের সঙ্গে শফিউল্লাহর দেখা হয়, শফিউল্লাহ কি শাফায়াতকে জিজ্ঞেস করেছিলেন কেন তার নির্দেশ মানা হয়নি? যদি না জিজ্ঞেস করে থাকেন তাহলে কেন করেননি? শফিউল্লাহ এ ব্যাপারে কিছুই লেখেননি। তিনি পাকিস্তান ফেরত ও মুক্তিযোদ্ধাদের দ্বন্দ্বের কথা লিখেছেন। সঠিক এ বিষয়টি প্রায় সব সেনা কর্মকর্তাই স্বীকার করেছেন। রউফ ও এরশাদ সম্পর্কে যা বলেছেন তাও সঠিক বলে অনুমিত। এরশাদের সঙ্গে শফিউল্লাহর অন্তরঙ্গ সম্পর্ক ছিল এ বিষয়টি শুধু লে. কর্নেল হামিদ এবং তিনি উল্লেখ করেছেন আর কেউ নয়। হামিদ জিয়ার বন্ধু ছিলেন সে কারণে শফিউল্লাহকে হয়ত পছন্দ করতেন না। জামিলও হয়ত শোনা কথা লিখেছেন। পরে প্রমাণিত হয়, এরশাদ জিয়ার অনুচর হিসেবেই কাজ করেছেন। ওসমানীর বিষয়ে যত শ্রদ্ধাই পোষণ করেন না কেন, এটা তো অসত্য নয় যে, তিনি খুনীদের, বঙ্গবন্ধুর খুনীদের সহায়তা করেছেন। তার প্রতি শ্রদ্ধা রাখা দুরূহ। জামিল সরাসরি যুক্ত ছিলেন এ কথা বলব না, কিন্তু তিনি যে ওই দিন এসব বিষয় থেকে দূরে থাকতে চেয়েছেন তা তো ঠিক। পরবর্তীকালে নিজের অবস্থান ঠিক রাখতে খালেদ মোশাররফের সঙ্গে হাত মিলিয়েছেন কিন্তু নিজে দূরে থেকেছেন, বঙ্গবন্ধু হত্যার সমর্থক তিনি ছিলেন না তা কীভাবে বলা যায়? ॥ বারো ॥ লে. কর্নেল শরিফুল হক ডালিমও দুটি আত্মজৈবনিক গ্রন্থ রচনা করেছেন যা হয়ত অনেকেই জানেন না। ২০০১ সালে প্রকাশিত হয়েছে প্রথম বইটি যা দেখেছি যা বুঝেছি। ঢাকার নবজাগরণ প্রকাশনী গ্রন্থ দুটি প্রকাশ করেছে। ডালিম যা দেখেছেন তা যে ঠিক দেখেননি এবং যা বুঝেছেন তা যে ‘কনফিউশন’ সেটি তার বই পড়লেই বোঝা যায়। অতিরঞ্জন আছে, বাগাড়ম্বর আছে, তার চরম দক্ষিণপন্থী দর্শন আছে। এসব বিচার-বিশ্লেষণ করলে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য বেরিয়ে আসে। সেগুলো হলো- সেনাবাহিনীর এই কর্মকর্তারা ষড়যন্ত্র করেছিলেন, জিয়াসহ সিনিয়র অনেক কর্মকর্তা [শফিউল্লাহ ছাড়া] জানতেন। গাজী গোলাম মোস্তফার ঘটনাটি ছিল অজুহাত, তৎক্ষণিক কারণ। বঙ্গবন্ধু হত্যায় তারা কীভাবে কাজ করেছেন, জিয়া কীভাবে প্ররোচনা দিয়েছেন, এসব বিবরণে খানিকটা অতিরঞ্জন থাকতে পারে। কিন্তু মিথ্যা তথ্য হিসেবে তা নাকচ করা যায় না। আমি আমার আলোচনার জন্য তার গ্রন্থের প্রাসঙ্গিক কিছু বিষয় মাত্র উল্লেখ করব। গাজী গোলাম মোস্তফার ঘটনা ঘটে গেছে। ডালিম এ বিষয়ে বিস্তারিত লিখেছেন, যার মধ্যে অতিরঞ্জন প্রচুর। ডালিমের ভাষ্য অনুসারে পরদিনই তার ডাক পড়ল সেনাসদর দফতরে। সেনাপ্রধানের দফতরে যাওয়ার আগেই জেনারেল জিয়া তাকে ডেকে পাঠালেন এবং সব শুনে বললেন, “This is incredible and ridiculous. This is simply not acceptable. ঠিক আছে দেখ চীফ কি বলে।” [পৃ. ৪৩৫] মেজর হাফিজ তখন জিয়ার ব্যক্তিগত সচিব হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তিনি ডালিমকে বললেন, “গত রাতের বিষয়টা শুধু তোমার আর ভাবির ব্যাপার নয়। সমস্ত আর্মির dignity, pride and honour are at stake. মানে আমরা সবাই এর সঙ্গে জড়িত। You got to understand this clearly ok? অন্য সব ব্রিগেডের সঙ্গে আলাপ হয়েছে। তারাও এ ব্যাপারে সবাই একমত। ঞযরং যধং মড়ঃ ঃড় নব ংড়ৎঃবফ ড়ঁঃ ৎরমযঃ ধহফ ঢ়ৎড়ঢ়বৎ. দেখ মুজিব কি বিচার করে? আমরা শফিউল্লাহর মাধ্যমে দাবি জানাব আর্মির তরফ থেকে। প্রধানমন্ত্রীকে [আসলে রাষ্ট্রপতি। তাই তার ভাষ্যে রাষ্ট্রপতির স্থলে প্রধানমন্ত্রী শব্দটি ব্যবহার করেছি] সে দাবি অবশ্যই মানতে হবে। দাবিগুলোও আমরা ঠিক করে ফেলেছি। তুমি শফিউল্লাহ কী বলে শুনে আস। তারপর আমরা যা করার তা করব।” [পৃ. ৪৩৫-৪৩৬] শফিউল্লাহর সঙ্গে ডালিম কথা বললেন। শফিউল্লাহ জানালেন, রাষ্ট্রপতি ও তিনি সম্পূর্ণ ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছেন। এখন তা মিটমাট করে নেয়া উচিত। ডালিম তাতে রাজি নয়। মিটিং শেষ। ডালিম বাইরে এসে দেখেন সেনাসদরের ‘প্রায় সব অফিসার একত্রিত হয়ে দাঁড়িয়ে আছে।’ তারা জানতে চায় সেনাপ্রধান কী বললেন। ডালিম জানালেন, সবাই ক্ষুব্ধ। একজন এডিসিকে বললেন, সেনাপ্রধানকে বাইরে আসতে বলতে, তারা কথা বলবেন। শফিউল্লাহ বাইরে এলেন। একজন বললেন, গাজী যা করেছেন তা সম্পূর্ণ “বেআইনীই শুধু নয়; It has compromised the honour and the dignity of the whole armed forces particularly army. We canÕt take it lying. It has got to be sorted out right and proper.” [পৃ. ৫৩৭] শফিউল্লাহ জানালেন, রাষ্ট্রপতি ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছেন, তারা মানতে রাজি নন। তারা জানালেন, তাদের তিনটি দাবি আছে। সেনাপ্রধানকে এই দাবি রাষ্ট্রপতির কাছে তুলে ধরতে হবে- “১. গাজীকে তার সংসদ পদ এবং অন্যান্য সমস্ত সরকারী পদ থেকে এই মুহূর্তে অব্যাহতি দিয়ে তাকে এবং তার অবৈধ অস্ত্রধারীদের অবিলম্বে আর্মির হাতে সোপর্দ করতে হবে রাষ্ট্রপতিকে, যাতে করে আইনানুযায়ী তাদের সাজা হয়। ২. গত রাতের সমস্ত ঘটনা প্রচারমাধ্যমগুলোর মাধ্যমে দেশের জনগণকে অবগত করার অনুমতি দিতে হবে রাষ্ট্রপতিকে। ৩. যেহেতু আওয়ামী লীগের সদস্য সেই পরিপ্রেক্ষিতে পার্টিপ্রধান হিসেবে রাষ্ট্রপতিকে ব্যক্তিগতভাবে মেজর ডালিম এবং তার স্ত্রীর কাছে ক্ষমা চাইতে হবে। চলবে...
×