ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

মাহমুদা সুবর্ণা

সানিয়া-হিঙ্গিসের দুর্দান্ত সময়

প্রকাশিত: ০৭:১৫, ২০ জানুয়ারি ২০১৬

সানিয়া-হিঙ্গিসের দুর্দান্ত সময়

গত মৌসুমটা স্বপ্নের মতো কেটেছে সানিয়া মির্জা আর মার্টিনা হিঙ্গিস জুটির। কোর্টে নেমে চ্যাম্পিয়ন হওয়াটাকে যেন একেবারে নিয়মিতই করে ফেলেছেন তারা। চলতি মৌসুমেও অপ্রতিরোধ্য টেনিস দ্বৈতের এই জুটি। নতুন বছরের প্রথম দুটি টুর্নামেন্ট খেলেছেন তারা। তার দুটিতেই চ্যাম্পিয়ন। ব্রিসবেন ইন্টারন্যাশনাল টেনিস টুর্নামেন্টের পর সিডনির শিরোপাটাও নিজের শোকেসে তুলেছেন তারা। গত মৌসুমের মতো এবারও যেন দ্বৈতের দুই তারা ভারতের সানিয়া মির্র্জা আর সুইজারল্যান্ডের মার্টিনা হিঙ্গিস। স্বর্ণ সময়ে মার্টিনা নাভ্রাতিলোভা আর স্টেফি গ্রাফ জুটি বাঁধলে কী হতো, তা কল্পনাতেই সীমাবদ্ধ রয়ে গেছে। প্রথাগতভাবেই টেনিস সার্কিটে সেরাদের দ্বৈত কিংবা মিশ্র দ্বৈতর জুটি হতে দেখা যায়নি। মার্টিনা হিঙ্গিস অবশ্য সুপারস্টারদের দলেই পড়েন, গ্র্যান্ডসøামও জিতেছেন এই সুইস প্রমীলা। সে তুলনায় ভারতের সানিয়া মির্জার প্রোফাইল অতটা উঁচুতে নয়। তাতে কী, সেরার সঙ্গে জুটি বেঁধে মাঝারিমানের সানিয়াও যেন গড়ছেন একের পর এক অনন্য রেকর্ড। টানা ২৯ ম্যাচ যে জেতেনি মেয়েদের আর কোন জুটি। সিডনি ইন্টারন্যাশনালের সেমিফাইনালে রোমানিয়ার রালুকা ওলারু ও কাজাখস্তানের ইরোসøাভা শেদোভা জুটিকে হারিয়ে টানা ২৯তম জয়ের রেকর্ড গড়েন ‘স্যান্টিনা’, সানিয়া আর মার্টিনার নামের ‘সংমিশ্রণ’। কোয়ার্টার ফাইনালেই চীনা জুটিকে হারিয়েই মেয়েদের দ্বৈতে টানা জয়ের রেকর্ড ছুঁয়েছিলেন মার্টিনা-সানিয়া জুটি। আর শেষ চার জিতেই গড়েন অনন্য এক কীর্তি। এর আগে দীর্ঘদিন এই রেকর্ডটা নিজেদের করে রেখেছিলেন পুয়ের্তোরিকোর গিগি ফার্নান্দেজ ও বেলারুশের নাতাশা জভেরভা জুটিকে। ১৯৯৪ সালে তাদের গড়া রেকর্ডটা ভাঙ্গতে যখন এতগুলো বছর লেগেছে, তখন মানতেই হবে দারুণ কিছুই ঘটিয়েছে স্যান্টিনা। গত বছরের ৩ সেপ্টেম্বর থেকে এখনও টেনিস কোর্টে অজেয় তারা। ২০১৫ সালের শেষভাগ থেকেই যে দারুণ সুসময় যাচ্ছে মার্টিনা ও সানিয়ার। সিডনির ফাইনাল জিতে ইন্দো-সুইস জুটি সপ্তম শিরোপা তাদের শোকেসে তুলল। গত বছরের ইউএস ওপেন নিয়ে স্বপ্নের দৌড় শুরু করা স্যান্টিনা জুটি একে একে জিতেছে গুয়াঞ্জো, ইউহান, বেজিং, সিঙ্গাপুর ইন্টারন্যাশনাল ট্যুর ফাইনালস, ব্রিসবেন ইন্টারন্যাশনাল টেনিস টুর্নামেন্ট এবং সিডনি ওপেন। পুরোনো রেকর্ডে সানিয়া ভাগ বসালেও মার্টিনার বিশেষত্ব তো আর আড়াল পড়ছে না। ৩৫ বছর বয়সী এ সুইস তারকা দ্বৈতে জুটি বেঁধেছিলেন গিগি এবং নাতাশার সঙ্গেও। ট্রফিও জিতেছেন ওই দুজনকে সঙ্গী করে। সবশেষ রেকর্ডটি মার্টিনা হিঙ্গিসের সফল টেনিস ক্যারিয়ারে নতুন একটি মাত্রা দিল মাত্র। একক, দ্বৈত আর মিশ্র দ্বৈত মিলিয়ে ১১টি গ্র্যান্ডসøামের ট্রফি যার কাপবোর্ডে সাজানো, তাঁর কাছে সাফল্য কিংবা রেকর্ড নতুন কিছু নয়! আর সিডনি ইন্টারন্যাশনাল টেনিস টুর্নামেন্ট জয়ের পর নতুন এক মাইলফলক স্পর্শ করেছেন সুইজারল্যান্ডের জীবন্ত কিংবদন্তি মার্টিনা হিঙ্গিস। দীর্ঘ ১৬ বছর পর দ্বৈতে এক নাম্বার স্থান ফিরে পান তিনি। যৌথভাবে শীর্ষস্থান ফিরে পেয়ে দারুণ রোমাঞ্চিত সুইস তারকা। এ বিষয়ে আনন্দে-উদ্বেলিত মার্টিনা হিঙ্গিস বলেন, ‘নামের পাশে এক নাম্বার দেখার অনুভূতিটা সত্যিই অন্যরকম। এটা এমন একটি ব্যাপার যা আমি দীর্ঘদিন ধরেই চাইতাম। সানিয়ার সঙ্গে খেলার পর থেকেই মনে হয়েছে যে এমনটা হতে পারে। চার্লটনে যখন সানিয়া শীর্ষস্থান দখল করে তখন আমি অনেক আনন্দিত হয়েছিলাম।’ গত ১২ মাসে ১১টি শিরোপা জয়ের রেকর্ড গড়েছেন তারা। এটাকে অবিশ্বাস্য মানছেন খোদ হিঙ্গিসও। এ বিষয়ে ৩৫ বছর বয়সী সুইস তারকা বলেন, ‘শেষ দশ মাসে আমরা যা করেছি তাতে এক নাম্বার দল হওয়ার যোগ্যতা আমাদের রয়েছে। দুটি গ্র্যান্ডসøাম ছাড়াও সিঙ্গাপুরে ডব্লিউটিএ ফাইনালস জিতেছি। আমরা নিশ্চিতভাবেই এর জন্য যোগ্য।’
×