নিজস্ব সংবাদদাতা, জয়পুরহাট, ১৮ জানুয়ারি ॥ তুলসীগঙ্গা নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ১৪টি স্লুইচ গেট অকেজো হওয়ায় এলাকার হাজার হাজার কৃষকের ফসল নষ্ট হচ্ছে। যে উদ্দেশ্য নিয়ে নদীর দুই তীরের বাঁধ নির্মাণ করা হয়েছিল, স্লুইচ গেট নষ্ট হওয়ায় তা এলাকার কৃষকের মরণফাঁদ হয়ে দাঁড়িয়েছে। জয়পুরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায় ২০০১ সালে জেলার ক্ষেতলাল উপজেলার বটতলী থেকে আক্কেলপুর উপজেলার হলহলিয়া সেতু পর্যন্ত ৩১.৪৬ কিলোমিটার বাঁধ নির্মাণ করা হয়। এ বাঁধ নির্মাণে ব্যয় হয়েছিল ২০ কোটি ১৭ লাখ টাকা। জেলার ১৪ হাজার পাঁচ শ’ ৪৩ হেক্টর জমি বর্ষা মৌসুমে জলাবদ্ধতার হাত থেকে রক্ষা করা ও খরা মৌসুমে ১১ হাজার দুই শ’ ২৬ হেক্টর জমিতে সেচ সুবিধার জন্য ওই বাঁধ নির্মাণ করা হয়। ৩১.৪৬ কিলোমিটার বাঁধে ১৪টি স্লুইচ গেইট রয়েছে। সুষ্ঠু তদারকি ও ব্যবস্থাপনার অভাবে নির্মাণের তিন বছরের মাথায় স্লুইচ গেইটগুলো অকেজো হয়ে যায়। ফলে যে লক্ষ্যে এ বাঁধ নির্মাণ করা হয়েছিল তা ভেস্তে যায়। জয়পুরহাট জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, গত বছর বন্যায় প্রায় ৩ হাজার হেক্টর জমির আমনক্ষেতসহ অন্যান্য ফসল পানিতে তলিয়ে যায়। চলতি বছর বন্যা শুরু হলে আবারও সমপরিমাণ জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হবে এমন আশঙ্কায় এলাকার হাজার হাজার কৃষক রয়েছে। জয়পুরহাট সদর উপজেলার ধারকী, বানিয়াপাড়া, ঘনাপাড়া, রশিদা, কোমরগ্রাম, সোটাহার, চক, ফকিরপাড়া, নাম ধারকী, ক্ষেতলাল উপজেলার বটতলী, ইকরগাড়া, আটিদাশড়া, আটিমুকুল, তালসন, মির্জাপুর, রসুলপুর, দেওগ্রাম, আমিরা, জিয়াপুর, দূর্গাপুর, খানদার, দীঘিরপার, মহাব্বতপুর, আক্কেলপুর উপজেলার আওয়ালগাড়ী, নলডাঙ্গা, ভিকনী, শান্তা, ভা-ারীপাড়া, উলিপুর গ্রামগুলো বন্যার কবলে পড়ে ফসলহানি ঘটে। বন্যায় কোটি কোটি টাকার ফসল ও বাড়িঘর বিনষ্ট হওয়ায় বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধটি কোন সুফল বয়ে আনে না। এলাকায় ঘুরে দেখা গেছে নদীর পূর্ব পাশে আক্কেলপুরের আওয়ালগাড়ী এবং ক্ষেতলাল উপজেলার দেওগ্রামের কাছে কয়েকটি স্থানে বাঁধের নিচ দিয়ে ছিদ্র করে বোরো চাষাবাদের জন্য গভীর নলকূপের পানি সরবরাহ করা হচ্ছে। এর ফলে ওইসব জায়গায় বাঁধের মাটি সরে যচ্ছে। ফলে বাঁধ হুমকির সম্মুখীন হয়েছে।