ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

গুরুত্বপূর্ণ কোন দায়িত্ব দেয়া হয় না ;###;বিয়ের অনুষ্ঠান, পুরস্কার বিতরণী সভা ও এমপিদের পাশে থাকাই মূল কাজ ;###;এ অবস্থার পরিবর্তন না হলে ভবিষ্যতে আগ্রহ হারিয়ে ফেলবে নারীরা

অবহেলার শিকার ॥ স্থানীয় সরকারের সব স্তরে নারী প্রতিনিধির নির্দিষ্ট কাজ নেই

প্রকাশিত: ০৫:০৭, ১৬ জানুয়ারি ২০১৬

অবহেলার শিকার ॥ স্থানীয় সরকারের সব স্তরে নারী প্রতিনিধির নির্দিষ্ট কাজ নেই

শাহীন রহমান ॥ নারী ক্ষমতায়নে এশিয়ার দেশের মধ্যে বাংলাদেশ এগিয়ে থাকলেও স্থানীয় সরকার পরিষদের সব স্তরে নির্বাচিত নারী প্রতিনিধিরা অবহেলার শিকার হচ্ছে। জনগণের ভোটে সরাসরি নির্বাচিত হলেও পরিষদে তাদের নেই সুনির্দিষ্ট কোন কাজ, নেই কোন মূল্যায়ন। আবার স্থানীয় সরকার পরিষদের আইনে নারী প্রতিনিধিদের ভূমিকা সুস্পষ্ট নয়। ফলে দায়িত্ব পালনে প্রতিনিয়ত বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন নারী প্রতিনিধিরা। তারা বলেন, উন্নয়ন কর্মকা-ে তাদের নেই কোন ভূমিকা। পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের নেই কোন সম্পৃক্ততা। চেয়ারম্যান বা মেয়রের অনুপস্থিতিতে কর্মকা- পরিচালনার জন্য প্যানেল চেয়ারম্যান বা মেয়রের তালিকায় তাদের রাখা হয় না। তারা জানান, নির্বাচনের আগে জনগণের কাছে নানা প্রতিশ্রুতি দিয়ে ভোট নিলেও এখন তাদের কাছে কোন প্রকার জবাবদিহিতা করা সম্ভব হচ্ছে না। এ অবস্থা চলতে থাকলে আগামীতে নারী নির্বাচনে আগ্রহ হারিয়ে ফেলতে পারে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে মহিলা সদস্যদের একদমই মূল্যায়ন নেই। অনেকটা হতাশার সুরে রাজবাড়ির পাংশা উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান শাহিদার আহমেদ জনকণ্ঠকে বলেন, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে নারীদের ডেকে এনে এক প্রকার অপমাণ করা হচ্ছে। জনগণের কাছে প্রতিশ্রুতি দিয়ে নির্বাচিত হয়ে এখন তাদের কাছে মুখ দেখাতে পারছি না। তিনি বলেন, উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে নারীদের কোন কাজ নেই। নেই কোন মূল্যায়নও। পরিষদের ১৭টি স্থায়ী কমিটির মধ্যে ৯টির সভাপতির দায়িত্ব পালন করা সত্ত্বেও মিটিং ডাকলে কেউ আসে না। নারী চেয়ারম্যানদের কথা কেউ শোনে না। শীতে গরিব মানুষের দেয়ার জন্য একটা কম্বলও চেয়ে পাওয়া যায়নি। অথচ জনগণের কাছে প্রতিশ্রুতি দিয়ে ভোট নিতে হয়েছে। এখন দেখছি নির্বাচিত হয়ে বেকার বসে থাকতে হচ্ছে উপজেলা নারী ভাইস চেয়ারম্যানদের। তিনি আক্ষেপের সুরে বলেন, উপজেলা পরিষদে ভাইস চেয়ারম্যান পদে নারী পদ সৃষ্টির কোন প্রয়োজন ছিল না। নারী ক্ষমতায়নের নামে সৃষ্টি করা হলেও এতে নারীদের কাজ না দিয়ে অপমানিত করা হচ্ছে। আইনেও নারীদের কাজে কোন সুযোগ রাখায় হয়নি। পরিষদের মিটিংয়ে গেলেও যাদের স্বাক্ষরে কোন কাজ হয় না তাদের মিটিংয়ে মতামত দিয়ে কোন লাভ নেই। তিনি বলেন, জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে নারীরা সঠিক দায়িত্ব পালন করতে চায়। জনগণের প্রতিশ্রুতি পূরণ করতে চায়। নারীদের ক্ষমতায়ন করতে হলে অবশ্যই নারী ভাইস চেয়ারম্যানদের মূল্যায়ন করতে হবে। তা না হলে শুধু নির্বাচিত করে পরিষদের চেয়ারম্যান বানালেই নারীর ক্ষমতায়ন হবে না। শুধু পাংশা উপজেলা পরিষদ নয়। সারাদেশের সব উপজেলা পরিষদের নির্বাচিত মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানদের চিত্র একই। তারা অভিযোগ করে বলেন, প্রশাসনের নিম্নস্তর থেকে শুরু করে কেউই স্থানীয় সরকারের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের কথা মূল্যায়ন করেন না। বিয়ের অনুষ্ঠান, পুরস্কার বিতরণী সভা, এমপিদের পাশাপাশি থাকা আর মিটিং করা ছাড়া তেমন কোন কাজ নেই তাদের। এ পদ্ধতির সংস্কার না করা হলে ইউপি মেম্বার থেকে শুরু করে সিটি কর্র্পোরেশনের মহিলা কমিশনার, উপজেলা নারী ভাইস চেয়ারম্যানদের দ্বারা কোন পরিবর্তন আসবে না। অথচ এসব নারী জনপ্রতিনিধিও জনগণের ভোটেই নির্বাচিত হয়ে এসেছেন। এ অবস্থা শুধু উপজেলা পরিষদে নয়। ইউনিয়ন পরিষদ থেকে পৌরসভা, সিটি কর্পোরেশন সবখানেই একই অবস্থায়। স্থানীয় সরকার পরিষদের সবচেয়ে কার্যকরী পরিষদ হলো ইউনিয়ন পরিষদ। সেখানে নির্বাচিত নারী প্রতিনিধিরা থাকলেও তাদের একই অবস্থা। তবে অন্য পরিষদের চেয়ে ইউনিয়ন পরিষদে কিছু ব্যতিক্রম হলোÑ এখানে নারী সদস্যরা কিছুটা হলেও ভূমিক রাখতে পারছেন। পরিষদের সাধারণ সদস্যদের মতো নারী সদস্যরা কিছু কিছু কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত রয়েছে। তবে ব্যাপকভাবে তাদের ভূমিকা রাখার বিষয়ে আইনে স্পষ্ট করা হয়নি। কারণ, আইনে ইউনিয়ন পরিষদের সকল কাজের কেন্দ্রবিন্দু হলেন পরিষদের চেয়ারম্যান। তিনিই পরিষদের প্রধান নির্বাহী হিসেবে দায়িত্ব পালন করে থাকেন। পরিষদের যেকোন সিদ্ধান্ত নেয়ার জন্য চেয়ারম্যানের অনুমোদন দরকার হয়। উন্নয়ন,রাজস্ব, প্রশাসনসহ ইউনিয়নের সব ধরনের কাজ তদারক করার দায়িত্ব চেয়ারম্যানের। এছাড়াও প্রশাসনিক কার্যক্রম, গণসংযোগ কার্যক্রম, রাজস্ব ও বাজেট সংক্রান্ত কার্যক্রম, উন্নয়নমূলক কার্যক্রম, বিচারবিষয়ক কার্যক্রম ও অন্যান্য দায়িত্ব ও কর্তব্য চেয়ারম্যান দেখভাল করে থাকেন। ইউনিয়ন পরিষদের কাজ পরিচালনার জন্য সচিব, গ্রাম পুলিশ এবং অন্যান্য কর্মচারীকে নিয়ে একটি অফিসও আছে। তাদের পরিচালনা করা, ছুটি ও বেতন দেয়া এবং তারা যথাযথভাবে কাজ করছে কিনা তা তদারক করেন। পরিষদের সভার আহ্বান আলোচনার বিষয়ও তিনিই ঠিক করে থাকেন। তবে সভায় বিভিন্ন সমস্যা সম্পর্কে চেয়ারম্যান সদস্যদের মতামত গ্রহণ করে থাকেন। এছাড়াও গ্রাম পুলিশ নিয়োগের জন্য প্রার্থী তালিকা তৈরি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে পাঠানোর দায়িত্ব ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান একাই করে থাকেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কর্তৃক মনোনীত প্রার্থীদের নিয়োগের ব্যবস্থা করেন চেয়ারম্যান। ইউনিয়ন পরিষদের বিভিন্ন স্ট্যান্ডিং কমিটি ও সাবকমিটির কার্যক্রম দেখাশোনা ও নিয়ন্ত্রণ করেন চেয়ারম্যান নিজে। বিভিন্ন সময়ে ঘোষিত সরকারী আইন ও সার্কুলার অনুযায়ী অর্পিত অন্যান্য প্রশাসনিক দায়িত্বও চেয়ারম্যানের হাতে। জানা গেছে, এর বাইরে উন্নয়নমূলক কিছু কর্মকা- অন্য সদস্যদের মতো নারী সদস্যরা করে থাকে। এ ছাড়া সরকারের বিশেষ কোন বরাদ্দের ক্ষেত্রে নারী সদস্যরাও কিছু বরাদ্দ পেয়ে থাকে। তবে তা অনেকটা চেয়ারম্যানের ম,ি অনেক নারী সদস্য জনগণের ভোটে নির্বাচিত হলেও পরিষদের কাজকর্ম সম্পর্কে ওয়াকিফহাল থাকেন না। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে নারী সদস্যরা পরিবারের পুরুষ সদস্য দিয়ে কাজ পরিচলনা করেন। ফলে পরিষদের নিয়মিত না যাওয়ায় পরিষদের কর্মকা- সম্পর্কে তাদের কোন ধারণা থাকে না। এ বিষয়ে কুষ্টিয়ার খোকসা থনার শিমুলিয়া ইউনিয়নের সংরক্ষিত মহিলা সদস্য ফুলবানু জনকণ্ঠকে বলেন, তার অনুপস্থিতিতে বেশিরভাগ কাজই তার স্বামী করে করে থাকেন। অসুস্থার কারণে পরিষদে তার নিয়মিত যাওয়া হয় না। তবে কোন বিশেষ সভা হলে তিনি তখন সভায় হাজিরা দেন। এছাড়া পরিষদের কর্মকা- সম্পর্কে তার ভাল জানা নেই বলে উল্লেখ করেন। তবে তিনি বলেন, উন্নয়নমূলক কোন কর্মকা- হলে তাকেও দায়িত্ব দেয়া হয়। বিশেষ করে পরিষদের সাধারণ সদস্যরা যেভাবে বরাদ্দ পান তাকেও সে অনুযায়ী কাজ দেয়া হয় উল্লেখ করেন। তবে সেসব কাজের বেশিরভাগই তার স্বামী দেখাশোনা করেন। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বর্তমান ব্যবস্থায় স্থানীয় পরিষদ সিস্টেম ভালভাবে কাজ করছে না। জেলা, উপজেলায় কোন কাজ নেই। ইউনিয়ন পরিষদের কাজ থাকলেও সিস্টেম আগের মতো আর নেই। এ বিষয়ে স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ তোফায়েল আহমেদ জনকণ্ঠকে বলেন, স্থানীয় সরকার পরিষদের টোটাল সিস্টেম অকেজো হয়ে পড়ছে। নির্বাচিত প্রতিনিধিরা বেশিরভাগই কাজের চেয়ে অকাজের সঙ্গে জড়িত হয়ে পড়ছেন। এক্ষেত্রে নারী প্রতিনিধিদের সুবিধা হলো তারা কোন অকাজের সঙ্গে জড়াচ্ছেন না। তিনি বলেন, বর্তমান অবস্থায় রাজনীতিবিদরা যাদের ক্ষমতা রয়েছে তারাই কিছু করছেন। অন্যরা বঞ্চিত হয়ে পড়ছেন। তিনি বলেন, স্থানীয় সরকার পরিষদ সিস্টেম ঠিকমতো কাজ না করলেও সেখানে বিচ্ছিন্নভাবে নারীদের ক্ষমতায়ন করা সম্ভব নয়। বর্তমান স্থানীয় সরকার ব্যবস্থায় সিটি কর্পোরেশন থেকে শুরু করে উপজেলা, পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদে নারীদের সরাসরি নির্বাচনের ব্যবস্থা রয়েছে। অথচ নির্বাচিত এসব নারী প্রতিনিধি জানান, ভোটের মাধমে তারা নির্বাচিত হলেও মূলত তাদের কোন গুরুত্বপূর্ণ কাজ দেয়া হয় না। তারা জানেনও না পরিষদে তাদের সুনির্দিষষ্ট ভূমিকা কি। অথচ নির্বাচনের সময় জনগণের কাছে বিভিন্ন সমস্যার সমাধান ও নানা প্রতিশ্রুতি দিয়ে ভোট নিতে হয়েছে। কিন্তু নির্বাচনের পর কাজ করতে গিয়ে দেখা যায় জনগণের জন্য তাদের কোন কাজ নেই। তারা জানান, পরিষদে নারীদের অবস্থান ‘নেই কাজ তো খই ভাজের মতো’। বিশেষজ্ঞদের মতে গ্রামীণ ও শহর এলাকার মানুষের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ও দেশের গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করার ক্ষেত্রে স্থানীয় সরকারের ভূমিকা সবচেয়ে বেশি। বিশেষ করে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় স্থানীয় সরকার ব্যবস্থার মাধ্যমে মানুষের স্বাধীন মতের প্রতিফলন ঘটে। এ কারণে দেশের সংবিধানে স্থানীয় সরকার ব্যবস্থার ওপর অধিক গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে। সংবিধানে তৃণমূল পর্যায়ে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা সুপ্রতিষ্ঠিত করার জন্য স্থানীয় সরকারকে প্রতিনিধিত্বমূলক প্রতিষ্ঠান এবং একই সঙ্গে জনগণের অংশগ্রহণের গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হিসাবে স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে? তাদের মতে, স্থানীয় সরকার হলো নিম্নতম পর্যায়ে বা স্থানীয়ভাবে সংগঠিত সরকার ব্যবস্থা। বাংলায় সব যুগেই স্থানীয় সরকার ছিল। তবে বিভিন্ন যুগে এর ধরন ছিল ভিন্নতর। গ্রামীণ প্রতিষ্ঠানই স্থানীয় সরকার কাঠামো গড়ে তুলেছিল। আর এ প্রতিষ্ঠানের ওপরই মূলত নির্ভরশীল ছিল প্রাচীন ও মধ্যযুগের বাংলার সরকার ব্যবস্থা। গ্রামসমাজ নিজ নিজ শাসনকার্য পরিচালনা করত তারা। রাজা খাজনা পেয়েই সন্তুষ্ট থাকতেন। সরকারীভাবে প্রতিষ্ঠিত অনেক প্রতিষ্ঠান ছিলÑ যেমন গ্রামপ্রধান ও গ্রাম পরিষদ। এসব প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার পেছনে দু’ধরনের উদ্দেশ্য ছিলÑ একদিকে রাজস্ব আদায় এবং অন্যদিকে উৎপাদন অব্যাহত রাখার লক্ষ্যে জনগণকে সংগঠিত করা, রাজ্যের সুখ ও সমৃদ্ধি বজায় রাখা। বর্তমান এ ব্যবস্থার অনেক উন্নয়ন ঘটেছে। তৃণমূলে জনগণের একমাত্র ক্ষমতা প্রয়োগ মাধ্যম হলো স্থানীয় সরকার ব্যবস্থা। দেশে স্বাধীনতার পর থেকে স্থানীয় সরকার পরিষদে নারীদের আলাদাভাবে নির্বাচনের বিধান না থাকলেও নারী সদস্য মনোনীত করার বিধান ঠিক ছিল। আওয়ামী লীগ ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় এসে নারীদের সরাসরি সংরক্ষিত পদে নির্বাচনের ব্যবস্থা করে। বর্তমান এ বিধান অনুযায়ী প্রতিনিটি ইউনিয়ন পরিষদে তিনজন করে নির্বাচিত নারী সদস্য রয়েছেন। এছাড়া উপজেলায় একজন করে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান জনগণের ভোটের নির্বাচিত হচ্ছে। ইউনিয়ন পরিষদের মতোই পৌরসভায় ও সিটি কর্র্পোরেশনেও সরাসরি নারী সদস্যদের নির্বাচনের বিধান রয়েছে। বর্তমানে সবকটি স্থানীয় সরকার পরিষদে পুরুষ সদস্যের মতো ভোটযুদ্ধে অবতীর্ণ হতে হচ্ছে নারীদের। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নির্বাচিত হওয়ার পর নারী সদস্যদের কাজ না থাকায় গুরুত্ব থাকছে না। ফলে জনগণও মূল্যায়ন করছেন না। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ অবস্থা চলতে থাকলে আগামীতে হয়ত নারী পদে নির্বাচনের জন্য কাউকে খুঁজে পাওয়া যাবে না। অথচ সরকার নারীর ক্ষমতায়নকে সবচেয়ে গুরুত্ব দিয়ে মূল্যায়ন করছে। তাদের মতে, রাজনৈতিক ক্ষমতায়নের দিক থেকে দেখলে বলা যায়, স্বাধীনতার পর থেকে নারীরা এক্ষেত্রে ক্রমাগত যে সাফল্য অর্জন করেছে। ১৯৮৬ সালের সাধারণ নির্বাচনে সরাসরি ভোটে মাত্র ৫ নারী সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। পরে ১৯৯১-এর নির্বাচনে ৪ জন, ১৯৯৬-এর নির্বাচনে ১১ জন ও ২০০১-এর নির্বাচনে ৬ নারীর বিজয়ের রেকর্ডকে টপকিয়ে ২০০৮-এর নির্বাচনে ১৯ নারী সরাসরি নির্বাচিত হয়ে জাতীয় সংসদে প্রতিনিধিত্ব করছেন। এছাড়াও সংবিধানের সংশোধনীতে সংসদের সংরক্ষিত আসনের সংখ্যা ৫০ রাখা হয়েছে। তারা বলেন, সংসদে নারীদের প্রতিনিধি বাড়াতে হলে তৃণমূল থেকেই তাদের মূল্যায়ন করতে হবে। ফলে তারা পরবর্তীতে জাতীয় পর্যায়ে ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবে।
×