ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

গণভবনে ত্রিপুরার মন্ত্রীকে প্রধানমন্ত্রীর আশ্বাস

কোন দেশের বিরুদ্ধে বিচ্ছিন্নতাবাদী কাজ চালাতে দেব না

প্রকাশিত: ০৫:২২, ১১ জানুয়ারি ২০১৬

কোন দেশের বিরুদ্ধে বিচ্ছিন্নতাবাদী কাজ চালাতে দেব না

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদের বিরুদ্ধে তার সরকারের দৃঢ় অবস্থান ও ‘জিরো টলারেন্স নীতির’ বিষয়টি পুনর্ব্যক্ত করে বলেছেন, কোন দেশের বিরুদ্ধে বিচ্ছিন্নতাবাদী কর্মকা চালানোর জন্য বাংলাদেশের মাটি কাউকে ব্যবহার করার সুযোগ দেয়া হবে না। খবর বাসসর। ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের বিদ্যুত, পল্লী ও নগর উন্নয়ন ও পরিবহন মন্ত্রী মানিক দে রবিবার সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে তার সরকারী বাসভবন গণভবনে সাক্ষাত করেন। এ সময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশে কোন ধরনের বিদ্রোহ বরদাস্ত করব না। আমরা এ অঞ্চলে একটি শান্তিপূর্ণ পরিবেশ চাই।’ সাক্ষাতের পর প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের এ বিষয়ে ব্রিফ করেন। তিনি বলেন, ত্রিপুরা থেকে বাংলাদেশে ১০০ মেগাওয়াট বিদ্যুত আমদানির লক্ষ্যে বাংলাদেশ ও ভারতের কর্মকর্তারা শুল্ক ও অন্যান্য বিষয় চূড়ান্ত করেছেন বলে জানতে পেরে প্রধানমন্ত্রী সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। প্রধানমন্ত্রী আশা প্রকাশ করেছেন, উভয় পক্ষ বিদ্যুত সরবরাহ শুরু করার জন্য যথাশীঘ্র সম্ভব বিদ্যুত ক্রয় ও সরবরাহ সংক্রান্ত অন্যান্য আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করবে। এ প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা উল্লেখ করেন যে, বাংলাদেশে ক্রমবর্ধমান বিদ্যুতের চাহিদা পূরণের জন্য আরও বিদ্যুৎ লাগবে। দুটি দেশের মধ্যে স্থল সীমান্ত চুক্তির পর ছিটমহলগুলো বিনিময়ের উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, শান্তিপূর্ণভাবে এই ইস্যুটির মীমাংসা হয়েছে। শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ এখন বিনিয়োগের সবচেয়ে আকর্ষণীয় স্থান এবং তার সরকার দেশে আরও শিল্পায়ন ও কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে ১০০টি অর্থনৈতিক জোন প্রতিষ্ঠা করার পদক্ষেপ নিয়েছে। এ প্রসঙ্গে তিনি বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে বেশ কিছু সীমান্ত হাট স্থাপনের উল্লেখ করে বলেন, এই ধরনের পদক্ষেপ দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক জোরদারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। যোগাযোগ ব্যবস্থার ওপর গুরুত্ব আরোপ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৬৫ সালের যুদ্ধের পর বন্ধ হয়ে যাওয়া বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যকার রেলপথগুলো বাংলাদেশ পুনরায় খুলে দিতে চায়। শেখ হাসিনা বলেন, তার সরকার রেল যোগাযোগ আরও কার্যকর করার লক্ষ্যে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা পর্যন্ত রেলপথে ডুয়েলগেজ রেললাইন স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছে। চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দরের সম্ভাবনার উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দ্বিপক্ষীয় ব্যবসা-বাণিজ্য জোরদার করার লক্ষ্যে ভারত এই বন্দর ব্যবহার করতে পারে। প্রধানমন্ত্রী ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় ভারত ও তাদের জনগণের মূল্যবান অবদানের কথা স্মরণ করেন এবং ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী, সরকার ও জনগণ ও বিশেষ করে ত্রিপুরা রাজ্য সরকার ও জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। ত্রিপুরার মন্ত্রী এ সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে আর্থ-সামাজিক ক্ষেত্রে বাংলাদেশের ব্যাপক সাফল্যের ভূয়সী প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, সড়ক যোগাযোগের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ নজিরবিহীন উন্নয়ন সাধন করেছে। ত্রিপুরার মন্ত্রী ২০১২ সালে জানুয়ারি মাসে ত্রিপুরায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সফর এবং আগরতলায় প্রায় এক লাখ লোকের সমাবেশে তার ভাষণ দেয়ার কথা স্মরণ করেন। এ প্রসঙ্গে মানিক দে সমাবেশ অনুষ্ঠানে ত্রিপুরা থেকে ১০০ মেগাওয়াট বিদ্যুত আমদানির বিষয়ে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার কথাও উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, ত্রিপুরা থেকে শীঘ্রই বিদ্যুত সরবরাহ শুরু হবে। ত্রিপুরার মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের কুমিল্লা সীমান্তের কাছে ত্রিপুরায় মনারচরে রাজ্য সরকার একটি বিদ্যুত কেন্দ্র নির্মাণ করছে। বিদ্যুত, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মোঃ আবুল কালাম আজাদ এবং বিদ্যুত বিভাগের সচিব মনোয়ার ইসলাম এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
×