ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

নতুন ইতিহাসের অপেক্ষায় মেসি

প্রকাশিত: ০৪:২৮, ১১ জানুয়ারি ২০১৬

নতুন ইতিহাসের অপেক্ষায় মেসি

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ বয়স মাত্র ২৮ বছর। এরই মধ্যে বিশ্বের সবচেয়ে আলোকিত ফুটবলারের তকমা সেঁটে গেছে লিওনেল মেসির গায়ে। জাতীয় দল আর্জেন্টিনার হয়ে তার পারফর্মেন্স নিয়ে মৃদু সমালোচনা থাকলেও ক্লাব বার্সিলোনার হয়ে জাদুকরী নৈপুণ্য এক কথায় বিস্ময়কর। প্রতিপক্ষের রক্ষণভাগ মায়াবি জাদুতে মোহাবিষ্ট করে যিনি গোল করে যান চোখের পলকেই। দুই পায়ের দুর্দান্ত কারিকরি, নয়নকাড়া ড্রিবলিং, নিখুঁত থ্রু, আর ডিফেন্ডারদের বোকা বানানোতে জুড়ি নেই ক্ষুদে ফুটবল জাদুকরের। ইতোমধ্যে ফুটবলের সব পুরস্কারই তার শোকেসে জমা হয়েছে। রেকর্ড টানা চারবার হয়েছেন ফিফার বর্ষসেরা ফুটবলার। মাঝখানে টানা দুই বছর মুকুট হারিয়েছেন চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোর কাছে। তবে এবার আবারও তার সামনে নতুন ইতিহাস গড়ার হাতছানি। আজ রাতে সুইজারল্যান্ডের রাজধানী জুরিখে ফিফার সদর দপ্তরে ঘোষিত হবে ২০১৫ ফিফা ব্যালন ডি’অর বর্ষসেরা ফুটবলারের নাম। তিনজনের সংক্ষিপ্ত তালিকায় অনুমিতভাবেই আছেন মেসি। তার সঙ্গে আছেন রিয়াল মাদ্রিদের পর্তুগীজ তারকা ফরোয়ার্ড ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো ও বার্সা সতীর্থ ব্রাজিলিয়ান অধিনায়ক নেইমার। ২০০৯ থেকে ২০১২। টানা চার বছর ফিফা সেরা হয়ে রেকর্ড গড়েন মেসি। এই কীর্তি আর কারও নেই। এবারও মুকুট জয়ে ফেবারিট আর্জেন্টাইন অধিনায়ক। সেরা হলে পঞ্চমবারের মতো অনন্য কীর্তির সাক্ষী হবেন তিনি। যেখানে আর কেউ নেই। এই অর্জনের দিকে দু’চোখে মেলে তাকানোর দুঃসাহসও হয়ত কেউ দেখাবেন না! বর্তমান বর্ষসেরা রোনাল্ডো ও সাবেক সেরা মেসির নাম থাকাটা অনুমিতই ছিল। তবে সেরা তিনের আরেকজন কে হবেন তা নিয়ে ছিল ব্যাপক জল্পনা-কল্পনা। এক্ষেত্রে আলোচনায় ছিলেন দুই বার্সিলোনা সতীর্থ লুইস সুয়ারেজ ও নেইমার। শেষ পর্যন্ত ক্লাব সতীর্থকে পেছনে ফেলে এই তালিকায় জায়গা পেয়েছেন ব্রাজিলিয়ান অধিনায়ক। এই প্রথমবারের মতো সেরা তিনে জায়গা পেয়েছেন নেইমার। এর আগে ২৩ জনের তালিকা প্রকাশ করেছিল ফিফা। সেখান থেকে ২০ জনকে বাদ দিয়ে সেরা তিনজনের নাম ঘোষণা করা হয়। ব্যালন ডি’অর পুরস্কারের জন্য ফিফার ২০৯টি সদস্য দেশের জাতীয় দলের অধিনায়ক, কোচ ও একজন ক্রীড়া সাংবাদিক ভোট দিয়ে থাকেন। ফিফা ফুটবল কমিটির সদস্যবৃন্দ এবং ফ্রান্স ফুটবলের একটি বিশেষজ্ঞ দল যৌথভাবে ২৩ জন পুরুষ খেলোয়াড়ের একটি সংক্ষিপ্ত তালিকা করেন। সেখান থেকে ভোটাররা তাদের শীর্ষ তিনজনকে বাছাই করে ভোট দেন। প্রত্যেক ফিফা সদস্য রাষ্ট্র থেকে তিনজন ভোটার থাকবেন। একজন সাংবাদিক, জাতীয় পুরুষ দলের কোচ ও অধিনায়ক। প্রত্যেক ভোটার নিজের প্রথম (৫ পয়েন্ট), দ্বিতীয় (৩ পয়েন্ট) ও তৃতীয় (১ পয়েন্ট) পছন্দের খেলোয়াড়কে ভোট দেন। এবারও কি মেসি না রোনাল্ডোর একজন? না অন্য কেউ। সব কৌতূহলের অবসান ঘটবে আজ রাতে। তবে এবার সেরা তিনে নেইমার জায়গা পাওয়ায় অনেকেই স্বপ্ন দেখছেন, মেসি ও রোনাল্ডোর একক আধিপত্যের অবসান ঘটবে। সেই ২০০৭ সালে ব্রাজিলের কাকার পর আর কেউ ফিফা সেরা হতে পারেনিনি। এর পরের সাতবার হয়ত রোনাল্ডো না হয় মেসি জিতেছেন বর্ষসেরার মুকুট। বিজয়ীর নাম ঘোষণা করার আগেই অবশ্য হুলস্থুল কা- ঘটে গেছে। দিনকয়েক আগে জানা যায়, ভুলবশত ফিফা তাদের ওয়েবসাইটে বিজয়ীর নাম ঘোষণা করে ফেলেছে। সেখানে সেরা হিসেবে অনুমিতভাবে আছেন মেসি। তবে ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর ওয়েবসাইট থেকে ফিফা সেটা সরিয়ে নিয়েছে এবং বিষয়টি অস্বীকারও করেছে। এর মাঝে ঘটেছে আরেকটি কান্ড। জোর গুঞ্জন, এবার টানা দুই বছরের ব্যর্থতা কাটিয়ে পঞ্চমবারের মতো ফিফা সেরা হতে যাচ্ছেন মেসি। এটি না হলেই বরং অঘটন হবে! কেননা গত বছর সম্ভাব্য সবই জিতেছেন বার্সিলোনার আর্জেন্টাইন তারকা। কিন্তু দুই এবং তিনে থাকবেন কে সেটা নিয়েই বেশ কৌতূহল। এবারই প্রথমবারের মতো সেরা তিনে এসেছেন নেইমার। শোনা যাচ্ছে রোনাল্ডোকে টপকে দুইয়ে জায়গা পাবেন ব্রাজিলিয়ান অধিনায়ক। এমনটি নাকি স্বয়ং সি আর সেভেনই বলেছেন। গত নবেম্বরে এক সাক্ষাতকারে রিয়াল মাদ্রিদের পর্তুগীজ তারকা অকপটে বলেছেন, এবার ব্যালন ডি’অর জিততে যাচ্ছেন মেসি। গত বছর ইউরোপের সর্বোচ্চ গোলদাতা হলেও রোনাল্ডো জিততে পারেননি একটি ট্রফিও। ব্যালন ডি’অরের প্রবর্তন ১৯৫৬ সাল থেকে। ২০০৯ সাল পর্যন্ত এ পুরস্কার দেয়া হয়। আর ফিফা বর্ষসেরা পুরস্কারের প্রবর্তন ১৯৯১ সাল থেকে। ২০১০ সাল থেকে এ দু’টি পুরস্কারকে একীভূত করা হয়। যার নাম দেয়া হয়েছে ফিফা ব্যালন ডি’অর। ২০০৯ সালে সর্বশেষ ব্যালন ডি’অর জয় করেন মেসি। ওই বছর ফিফা বর্ষসেরাও হন বার্সিলোনা ডায়মন্ড। ২০১০ সাল থেকে প্রচলিত ফিফা ব্যালন ডি’অরের এবার ষষ্ঠ পালা।
×