ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

বাণিজ্যমেলার খাবারের দোকান

প্রকাশিত: ০৬:১৪, ১০ জানুয়ারি ২০১৬

বাণিজ্যমেলার খাবারের দোকান

‘বাণিজ্যমেলা শুরু হয়েছে। মানুষ ঘুরতে ঘুরতে গিয়ে বসেন খাবার দোকানে। তারপর হাফপ্লেট বিরিয়ানির দাম শোনেন ১০০ টাকা। খাবার খাওয়ার পরে বিল আসে ৭০০ টাকা। কারণ? পানির দাম ২০০ টাকা, মাংস প্রতি পিস ১শ টাকা করে, বিরিয়ানিতে ৩ পিস আণুবীক্ষণিক মাংস ছিল, সেগুলোর মোট দাম ৩শ টাকা। ১শ টাকা ভ্যাট। এসব মিলিয়ে ৭শ টাকা বিল। প্রতিবছর একই ঘটনা, প্রতিবছর সবার চোখের সামনে এমন জোচ্চুরি চলে। না জেনে মানুষ প্রতিবার ঠকে। দেখার যেন কেউ নেই।’ উপরের এমন সব প্রতিক্রিয়া সম্প্রতি দেখা যাচ্ছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক পোস্টে। যারা ঢাকায় আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলায় গিয়ে এ ধরনের অভিজ্ঞতার শিকার হয়েছেন তারা অনেকেই ক্ষোভে ফেটে পড়ছেন এমন অব্যবস্থাপনা ও খামখেয়ালী দেখে। খাবার হোটেল নাকি কসাইখানা! এ প্রশ্ন ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলায় আসা দর্শনার্থীদের। প্রতিটি হোটেল নিজের ইচ্ছামতো খাবারের গলাকাটা মূল্য নিচ্ছে। নেই কোন মূল্য তালিকা। যার কাছ থেকে যেভাবে পারা যায়, আদায় করে নিচ্ছেন হোটেল কর্মীরা। শুক্রবার (৮ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় বাণিজ্যমেলা ঘুরে দর্শনার্থীদের সঙ্গে কথা বলে পাওয়া যায় অভিযোগের সত্যতা। হাজী বা নান্নার বিরিয়ানি, স্টার কাবাব নামের সুবিশাল রেস্টুরেন্ট কর্তৃপক্ষও বেশি দাম নেওয়ার কথা স্বীকার করেছে। হাজী বিরিয়ানির ম্যানেজার অলিউর রহমান বলেন, ‘রফতানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) এখন পর্যন্ত কোন মূল্য তালিকা দেয়নি। তাই আমরা গত বছরের মূল্যই রাখছি। হয়তো দুই একদিনের মধ্যে মূল্য তালিকা দেবে। এদিকে বাণিজ্যমেলার অস্থায়ী খাবার হোটেলগুলোর অধিকাংশের নেই কোন মূল্য তালিকা। হোটেল মালিকরা ইচ্ছে মতো দাম হাকিয়ে নিচ্ছেন ক্রেতাদের কাছ থেকে। এছাড়া মেলায় আসা দর্শনার্থীদের নিজ রেস্টুরেন্টে নেওয়ার জন্য হোটেল বয়দের অনুরোধেরও শেষ নেই। অন্যদিকে মেলায় অংশ নেওয়া রেস্টুরেন্টগুলোর খাবার অনেকটা খোলামেলা পরিবেশেই তৈরি করা হচ্ছে। ধুলাবালির মধ্যেই তৈরি করা হচ্ছে গ্রিল, চিকেন ঝাল ফ্রাই, বার-বি কিউ, শিক কাবাব, চটপটি, ফুচকা, চাপ, নুড্্লস। তবে সব খাবারের দোকানকে ঢালাওভাবে একই সারিতে বিচার করা ঠিক হবে না। এর প্রমাণ মেলে সুপ্রতিষ্ঠিত রস-এর খাবারের স্টলে গিয়ে। সেখানে সুস্পষ্টভাবে খাবারের তালিকা সাজানো আছে। খাবারের মূল্যও রাখা হয়েছে হাতের নাগালে। প্রতিষ্ঠানটির সেলস্্ এ্যান্ড মার্কেটিং ম্যানেজার মিজানুর রহমানের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তাদের স্টলে রস-এর বিভিন্ন প্রকারের মিষ্টি ও শুকনো খাবারের পাশাপাশি ফাস্টফুড জাতীয় খাবার (চিকেন বল, চিকেন ফ্রাই, চিকেন সসেজ, বার্গার, পেটিস, সেন্্ডুস ইত্যাদি), সফ্্ট ডিঙ্কস, কফি, পানি সাশ্রয় মূল্যে পাওয়া যায়। আছে বিভিন্ন খাবারের সাশ্রয়ী প্যাকেট আইটেম। মেলায় আসা দর্শনার্থীরা ক্লান্ত হওয়ার পর এসকল খাবার স্টলে বসে যেন খেতে পারেন এবং বাড়িতে নিতে পারেন তার সুব্যবস্থা রয়েছে। তিনি আরো বলেন, ‘ঢাকার সকল রস-এর স্টলে যে মূল্যে খাবার পাওয়া যায়, সেই মূল্যেই রাখা হয়েছে বাণিজ্যমেলার স্টলে।’ তার মতে, মেলায় খাবারের দোকানগুলো নির্দিষ্ট কোন একটি জায়গায় না রেখে যদি তা বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে দেয়া হতো, তবে আগত দর্শনার্থীদের জন্য অনেক সুবিধা হতো। কারণ এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে খাবারের দোকান খুঁজে বের করতে নারী-শিশুসহ সকলের অনেক কষ্ট করতে হয়। অঞ্জন আচার্য
×