ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

মেসির নৈপুণ্যে শেষ আটের পথে বার্সিলোনা

প্রকাশিত: ০৬:১২, ৮ জানুয়ারি ২০১৬

মেসির নৈপুণ্যে শেষ আটের পথে বার্সিলোনা

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ নতুন বছরের প্রথম ম্যাচেই ধাক্কা খেতে হয়েছিল বার্সিলোনাকে। ২০১৫ সালে পাঁচ-পাঁচটি শিরোপা জেতা ক্যাটালানদের রুখে দিয়েছিল এস্পানিওল। অবশেষে তাদের হারিয়েই বছরের প্রথম জয় পেয়েছে লুইস এনরিকের দল। বুধবার রাতে স্প্যানিশ কোপা ডেল রে (কিংস কাপ) ফুটবলের শেষ ষোলোর প্রথম লেগের ম্যাচে মাঠে নামে বার্সিলোনা। নিজেদের মাঠ ন্যুক্যাম্পে আলোচিত, ঘটনাবহুল ও উত্তেজনাপূর্ণ ম্যাচে বার্সা ৪-১ গোলে পরাজিত করে অতিথি এস্পানিওলকে। বিজয়ী দলের হয়ে জোড়া গোল করেন প্রাণভোমরা লিওনেল মেসি। একটি করে গোল করেন জেরার্ড পিকে ও নেইমার। অথচ ম্যাচের শুরুর দিকে ফেলিপে সেইসেডোর গোলে এগিয়ে গিয়েছিল অতিথিরাই। পরতে পরতে উত্তেজনা ছড়ানো ম্যাচে লালকার্ড ও হলুদ কার্ডের ছড়াছড়ি হয়। এস্পানিওলের দুইজন ফুটবলার লালকার্ড দেখেন। সবমিলিয়ে দুই দলের নয়জন হলুদকার্ড দেখেন। এর মধ্যে বার্সার মেসি, নেইমার, সুয়ারেজসহ চারজন ও এস্পানিওলের পাঁচজন। এই পরিসংখ্যানই জানান দিচ্ছে, কতটা উত্তাপ ছড়ানো ছিল ম্যাচটি। এই জয়ে কোয়ার্টার ফাইনাল খেলা একপ্রকার নিশ্চিত করে ফেলেছে আসরের বর্তমান চ্যাম্পিয়ন বার্সা। ১৩ জানুয়ারি দ্বিতীয় লেগের ম্যাচে নিজেদের মাঠে লড়বে এস্পানিওল। ন্যুক্যাম্পে ম্যাচের শুরু থেকেই আক্রমণ পাল্টা আক্রমণে ম্যাচ উপভোগ্য হয়ে ওঠে। নবম মিনিটে বার্সার জালে বল জড়িয়ে অঘটনের ইঙ্গিত দেন এস্পানিওলের ফেলিপে সেইসেডো। তবে এই ধাক্কা কাটিয়ে উঠতে খুব বেশি সময় নেয়নি স্বাগতিকরা। ১৩ মিনিটে অধিনায়ক আন্দ্রেস ইনিয়েস্তার পাস থেকে বল পেয়ে গোল করেন মেসি। ৪৪ মিনিটে অসাধারণ ফ্রিকিক থেকে দ্বিতীয় গোল করেন আর্জেন্টাইন এ তারকা। বিরতির পরপরই (৪৯ মিনিটে) বার্সার পক্ষে তৃতীয় গোল করেন পিকে। এ গোলেরও নেপথ্যের কারিগর মেসি। ৮৮ মিনিটে বার্সার পক্ষে চতুর্থ গোল নেইমার করেন মেসির পাস থেকে বল পেয়ে। শুরুতে গোল হজম করলেও শেষ পর্যন্ত বড় জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে বার্সা। পুরো ম্যাচেই এস্পানিওলের খেলোয়াড়রা ছিলেন আগ্রাসী ভঙ্গিতে। মেসি-নেইমারদের মতো তারকাদের রুখে দেয়ার জন্য কৌশলের পাশাপাশি শারীরিক বলপ্রয়োগও করে তারা। এজন্য তাদের দুইজন খেলোয়াড়কে দেখতে হয়েছে লালকার্ড। ৭৫ মিনিট থেকেই এস্পানিওল পরিণত হয় নয়জনের দলে। যে কারণে অতিথিদের বেশিরভাগ সময়ই ব্যস্ত থাকতে হয় নিজেদের রক্ষণভাগ সামলানোর জন্য। প্রতিপক্ষের এমন মারমার কাটকাট ফুটবলের কারণে উত্তেজিত হয়ে হলুদকার্ড দেখেন বার্সার আক্রমণভাগের তিন তারকা ত্রয়ীই। ম্যাচটি দারুণভাবে জিততে পারায় খুশি বার্সা কোচ লুইস এনরিকে। ম্যাচ শেষে তিনি বলেন, আমাদের আধিপত্যের প্রতিফলন স্কোরবোর্ডে দেখা যায়। আমরা ভাল খেলেছি এবং এই ম্যাচে নিজেদের লক্ষ্য অর্জন করেছি আমরা। গোল না পেলেও অধিনায়ক ইনিয়েস্তার প্রশংসা করে বার্সা বস বলেন, সে একজন জাদুকরী খেলোয়াড়। সে একাই ম্যাচের গতিপ্রকৃতি পাল্টে দিতে পারে। এস্পানিওলের বিরুদ্ধে এই ম্যাচ দিয়ে বার্সিলোনায় অভিষেক হয়েছে আরডা টুরান ও এ্যালেক্স ভিদালের। নতুন কোন খেলোয়াড়কে নিবন্ধন করানোর ওপর ফিফার নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়াতেই এই দুইজনকে মাঠে নামাতে পারেন বার্সিলোনা কোচ। এদিকে ম্যাচ শেষে টানেলে এস্পানিওলের খেলোয়াড়দের উত্ত্যক্ত করার কারণে নিষিদ্ধ হতে পারেন বার্সাতারকা লুইস সুয়ারেজ। ম্যাচের রেফারি তার প্রতিবেদনে জানিয়েছেন, ম্যাচ শেষে টানেলে দুই দলের খেলোয়াড়দের ঝগড়া করতে উস্কে দেন সুয়ারেজ। টানেলে অপেক্ষা করতে থাকা সুয়ারেজ প্রতিপক্ষের খেলোয়াড়দের উদ্দেশ করে বেশ কয়েকবার বলেন, ‘আমি তোমাদের জন্য অপেক্ষা করছি। এখানে আস। তোমরা কোন কাজেরই না।’ শেষ ষোলোর অপর ম্যাচে রায়ো ভায়োকানোর সঙ্গে ১-১ গোলে ড্র করে এ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ। দু’দলের ভাগ্য নির্ধারিত হবে ফিরাত লেগে ভিসেন্টে ক্যালডেরনে। আরেক ম্যাচে আলভারো নেগ্রেডোর দুর্দান্ত হ্যাটট্রিকে ভ্যালেন্সিয়া ৪-০ গোলে উড়িয়ে দেয় গ্রানাডাকে।
×