ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

তাভেলা হত্যা তদন্তে দৃশ্যমান কোন অগ্রগতি নেই

প্রকাশিত: ০৫:২০, ৭ জানুয়ারি ২০১৬

তাভেলা হত্যা তদন্তে দৃশ্যমান কোন অগ্রগতি নেই

শংকর কুমার দে ॥ গত তিন মাসেও ‘বড় ভাই’ রহস্যের জট খোলেনি। রাজধানীর গুলশানে ইতালি নাগরিক সিজার তাভেলা হত্যাকা-ের ঘটনায় বড় ভাই জড়িত বলে সংবাদ সম্মেলন করে দাবি করেছিল পুলিশ কর্তৃপক্ষ। পুলিশ কর্তৃপক্ষের পর বড় ভাই নামটি উচ্চারিত হয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর মুখেও। কিন্তু দীর্ঘ তিন মাসেও সেই বড় ভাই রহস্য উদ্ঘাটিত হয়নি এখনও। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ সূত্রে এ খবর জানা গেছে। রাজধানীর গুলশানে ২০১৫ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর তাভেলা সিজার হত্যাকা-ের ঘটনায় তোলপাড় সৃষ্টি হয় দেশ-বিদেশে। তাভেলা হত্যাকা-ের ৫ দিনের মাথায় রংপুরে হত্যা করা হয় জাপানী নাগরিক কুনিও হোসিওকে। দুই বিদেশী হত্যকা-ের ঘটনায় তোলপাড় সৃষ্টি হয় রাজনৈতিক অঙ্গনে। তদন্তে আসে ক্ষিপ্রতা। কিন্তু হত্যাকা-ে ব্যবহৃত সম্পূর্ণ আলামত উদ্ধার হয়নি। দীর্ঘ তিন মাসের ব্যবধানে বড় ভাই রহস্য উদ্ঘাটনের তদন্ত ধামাচাপা পড়ে গেছে বলে জানা গেছে। এখন আর তদন্তে দৃশ্যমান কোন অগ্রগতি হওয়ার খবর পাওয়া যায়নি। ২০১৫ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর রাজধানীর গুলশানে সশস্ত্র দুর্বৃত্তরা মোটরসাইকেলে এসে গুলি করে হত্যা করে ইতালীয় নাগরিক তাভেলা সিজারকে। এই বিদেশী নাগরিক হত্যাকা-ের ঘটনাটি একজন ‘বড় ভাই’-এর নির্দেশ ঘটানো হয়েছে বলেছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। এ ঘটনায় বিএনপির রাজনীতি জড়িত বলেও জানিয়েছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। ঢাকা মহানগর পুলিশের কমিশনার আসাদুজ্জামান মিয়া গত ২৬ অক্টোবর দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ইতালীয় নাগরিক তাভেলা সিজার হত্যার নেপথ্যে কথিত এক বড় ভাই রয়েছেন। কথিত ওই বড় ভাই ভাড়াটে চার খুনী দিয়ে তাভেলাকে খুন করান বলে জানান পুলিশ কমিশনার। ঢাকা মহানগর পুলিশের পক্ষ থেকেও একই ধরনের বক্তব্য জানানো হয় এবং এই বড় ভাইয়ের বিষয়ে বিস্তারিত জানানোর ঘোষণাও দেয়া হয়। ওই সময় বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে ঢাকা মহানগর বিএনপির যুগ্মআহ্বায়ক ও সাবেক কমিশনার এমএ কাইয়ুমের নামই উঠে আসে বড় ভাই হিসেবে। তিনি বর্তমানে মালয়েশিয়ায় আছেন বলেও প্রতিবেদন প্রকাশ হয় গণমাধ্যমে। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের একজন কর্মকর্তার সঙ্গে আলাপ হলে তিনি জানান, ইতালীয় নাগরিক তাভেলা সিজার হত্যাকা-ের ঘটনায় পাঁচজন গ্রেফতার হয়েছে। এর মধ্যে চারজন আসামি, দুইজন সাক্ষী হিসেবে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী দিয়েছেন। ১৫ জন সাক্ষী ১৬১ ধারায় জবানবন্দী দিয়েছেন। তবে এখনও এ মামলার আলামত উদ্ধার হয়নি। তদন্তের তদারকিতে সংশ্লিষ্ট ডিবি ও পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে জানতে চাওয়া হয়- ‘বড় ভাই’ কে, কোথায়, গ্রেফতার হয়েছে কিনা? কিন্তু বড় ভাই এর বিষয়টি সরাসরি উত্তর না দিয়ে এড়িয়ে যাওয়ার প্রবণতা দেখান তদন্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
×