ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

বেতনের অর্থ ফেরতের নির্দেশ

রাজশাহীতে জাল সনদে চাকরি, ৬ শিক্ষক চাকরিচ্যুত

প্রকাশিত: ০৪:১০, ৭ জানুয়ারি ২০১৬

রাজশাহীতে জাল সনদে চাকরি, ৬ শিক্ষক চাকরিচ্যুত

স্টাফ রিপোর্টার, রাজশাহী ॥ মোহনপুর উপজেলার জাহানাবাদ ইউনিয়নের পাকুড়িয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে জাল (ভুয়া) নিবন্ধন ও সনদপত্রে চাকরির অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ার ৬ শিক্ষককে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। একই সঙ্গে বেতন-ভাতা বাবদ উত্তোলন করা সরকারী অর্থ ফেরতের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। রাজশাহী অঞ্চলের মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদফতরের উপ-পরিচালকের কার্যালয় থেকে সম্প্রতি এ নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতর রাজশাহীর উপ-পরিচালক ড. শারমিন ফেরদৌস চৌধুরী এক পত্রে এ নির্দেশ দেন। ওই চিঠিতে তিন কর্মদিবসের মধ্যে ৬ শিক্ষকের উত্তোলনকৃত টাকাসহ যাবতীয় তথ্য প্রেরণের জন্যও বলা হয়। জানা গেছে, মোটা অঙ্কের অর্থের বিনিময়ে ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জসিম উদ্দিন ও তৎকালীন ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আইয়ুব আলী ২০১১ সালের ২৮ আগস্ট যোগসাজসে নিজ প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ বোর্ড না বসিয়ে রাজশাহী ল্যাবরেটরি সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ে নিয়োগ পরীক্ষার ৬ শিক্ষককে ডেকে নেন। প্রার্থীরা সেখানে উপস্থিত হলে প্রধান শিক্ষক ও সভাপতি কৌশলে পরীক্ষা হবে না বলে জানিয়ে দেয়। কিন্তু ওইদিনই নগরীর শহীদ নজমুল হক উচ্চ বিদ্যালয়ে নির্ধারিত প্রার্থীদের ভুয়া নিবন্ধন ও জাল সনদে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেন প্রধান শিক্ষক ও সভাপতি। ওই সময় নিয়োগপ্রাপ্তরা হলেন, সহকারী শিক্ষক রেজাউল করিম (সমাজবিজ্ঞান), মাসুদ রানা (সমাজবিজ্ঞান) তাজউল ইসলাম, (সমাজবিজ্ঞান), বেলাল হোসেন (শরীরচর্চা) আরিফুজ্জান (গ্রন্থাগারিক) ও সুমিতা রানী (কাব্যতীর্থ)। এরপর তারা স্কুলে যোগদান করে নিয়মিত বেতন-ভাতা উত্তোলন করে আসছিলেন। তবে শিক্ষকদের বিরুদ্ধে ভুয়া ও জাল সনদপত্রে চাকরি নেয়ার অভিযোগে এনে মোহনপুর থানার সহকারী জজ আদালতে মামলা দায়ের করেন বারইপাড়া গ্রামের একরামুল হকের ছেলে নাজমুল হক। এছাড়াও উপ-পরিচালক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা রাজশাহী অঞ্চল রাজশাহী অধিদফতরসহ বিভিন্ন দফতরে অভিযোগ দায়ের করেন তিনি। এরপর এক বছর ধরে তদন্তে করে ৬ শিক্ষকের সনদপত্র ও নিবন্ধন জাল প্রমাণিত হওয়ার কারণে তিন কার্য দিবসের মধ্যে প্রধান শিক্ষককে ব্যবস্থ্য গ্রহণ ও যোগদানের পর হতে সরকারী কোষাগার হতে উত্তোলনকৃত বেতনের টাকা ফেরতসহ তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ প্রদান করে আদালত। প্রধান শিক্ষক জসিম উদ্দিনের সহযোগিতায় চাকরি ও সরকারী বেতন উত্তোলন করে আসছিলেন অভিযুক্ত ৬ শিক্ষক। রহস্যজনক কারণে অভিযুক্ত শিক্ষকদের বিরুদ্ধে কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেননি প্রধান শিক্ষক। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জসিম উদ্দিন জানান, তাদের অর্থের হিসাব বিবরণী উপ-পরিচালক দফতরে ইতোমধ্যে জমা দেয়া হয়েছে। ম্যানেজিং কমিটির সভায় তাদের বিরুদ্ধে বিধিমোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
×