ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

কয়েকটি ভবনে ফাটল ॥ আহত শতাধিক

আতঙ্ক ছড়াল ভূমিকম্প

প্রকাশিত: ০৫:৪৩, ৫ জানুয়ারি ২০১৬

আতঙ্ক ছড়াল ভূমিকম্প

জনকণ্ঠ ডেস্ক ॥ সোমবার ভোরে ভূমিকম্পে কেঁপে উঠল সারাদেশ। এ সময় আতঙ্কিত হয়ে ছোটাছুটি করতে গিয়ে সিলেটে আহত হয়েছেন ৩২ জন। এছাড়া কয়েকটি ভবনে ফাটল দেখা দিয়েছে। খবর স্টাফ রিপোর্টার ও নিজস্ব সংবাদদাতাদের। সিলেট ॥ সোমবার ভোর ৫টা ৬ মিনিটে সিলেটে তীব্র ভূকম্পন অনুভূত হয়। ভূমিকম্পের তীব্রতায় সর্বত্র আতঙ্ক দেখা দেয়। ভোরে আচমকা ঝাঁকুনিতে ঘুম থেকে জেগে উঠে আতঙ্কিত লোকজন ছোটাছুটি শুরু করেন। সবাই বাসাবাড়ি ছেড়ে রাস্তায় নেমে আসেন। বিশেষ করে বহুতলবিশিষ্ট দালানগুলোতে মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছিল বেশি। তাড়াহুড়ো করে নেমে আসতে ও ছোটাছুটি করতে গিয়ে প্রায় ৩২ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। নগরীর জিন্দাবাজারে একটি মার্কেটের একটি অংশ পার্শ্ববর্তী একটি বাসার ওপর ধসে পড়ে যায়। এখানে ৮ জন আহত হন। কানিজ প্লাজা নামের এই মার্কেটের ১১ তলা ভবনের ৯ম তলার দেয়াল ধসে পার্শ্ববর্তী বাসার ওপর পড়ে যায়। হবিগঞ্জ ॥ সোমবার জেলা শহর হবিগঞ্জসহ বিভিন্ন উপজেলাগুলোতেও থেমে থেমে কয়েক দফা ভূকম্পন হয়েছে। ভোর ৫টা ৫ মিনিটের দিকে প্রচ- ঝাঁকুনি দিয়ে ভূকম্পন শুরু হলে বাসাবাড়ি ও ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানে ঘুমন্ত নারী-পুরুষ জেগে উঠে। এ সময় ভোরের খানিকটা অন্ধকারে সকলেই হতচকিত হয়ে পড়েন। কিশোরগঞ্জ ॥ কিশোরগঞ্জে ভূকম্পনে পাঁচতলা বালিকা শিশু পরিবার (সদন) ভবনের ছয়টি পিলার ফেটে গেছে। সোমবার ভোরে কম্পনের ফলে দেশের অন্যান্য স্থানের মতো এ ভবনের পিলারের নিম্নাংশে ফাটল দেখা দেয়। এ সময় ওই ভবনের শতাধিক শিশু শিক্ষার্থী আতঙ্কিত হয়ে পড়ে। বগুড়া ॥ ভোরে ফজরের আজান শুরু হতে কিছুক্ষণ বাকি। মুসুল্লিরা কেবল প্রস্তুতি নিচ্ছেন। এর মধ্যেই প্রচ- ঝাঁকুনি। সমস্বরে কলেমা তৈয়র পাঠ শুরু হলো। বাসাবাড়িতে মুহূর্তেই লোকজন জেগে যে যার মতো করে দ্রুত রাস্তায় নামল। নগরজুড়ে তখন একটাই ধ্বনি লা ইলাহা ইল্লাললাহু...। বাগেরহাট ॥ সোমবার ভোররাতের ভূমিকম্পে বাগেরহাটসহ উপকূলীয় দক্ষিণাঞ্চলে তীব্র আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এ অঞ্চলের প্রায় প্রতিটি দালান, বাড়ি, ঘর তীব্র ঝাঁকুনিতে দুলতে থাকে। অনেকের ঘরের টিভিসহ আসবাবপত্র পড়ে ভেঙ্গে যায়। শীতের মধ্যেও ওই ভোররাতে অধিকাংশ পরিবারের লোকজনের ঘুম ভেঙ্গে যায়। নীলফামারী ॥ ঘুম ভেঙে গেল সকল বয়সের মানুষের। সব কিছু থরথর করে কেঁপে চলেছে। খাট, সিলিং ফ্যান প্রচ- দুলছিল। বুঝতে বাকি রইল না। চারদিকে চিৎকার আর আতঙ্ক। তাদের চিৎকার-চেঁচামেচিতে ভীতিকর পরিবেশ সৃষ্টি হয়। প্রায় ১০ সেকেন্ড ধরে কম্পন রেশ ছিল। সোমবার ভোরের কম্পন বাসিন্দাদের মনে করিয়ে দেয় গত বছরের নেপালের ঘন ঘন ভূমিকম্পের আতঙ্কের স্মৃতি। তাই আর দেরি নয়, কনকনে ঠা-ায় ঘরবাড়ি ছেড়ে সব লোকজন রাস্তা নেমে আসেন। তখনও ফজরের আজান হয়নি। কিন্তু ভূমিকম্পের প্রচ- ঝাঁকুনিতে কেউ কেউ আজান কেউ বা শঙ্খ বাজিয়ে তোলে। ভূমিকম্পন শেষ হলেও ঘণ্টাখানেক কেউ সড়ক ছেড়ে বাড়িঘরে প্রবেশের সাহস পায়নি। রংপুর ॥ দু’দফার প্রচ- ঝাঁকুনিতে ভয়ঙ্কর এক আতঙ্কে ভূমিকম্প ভূমিকম্প চিৎকার করে জেগে ওঠে রংপুর অঞ্চলের মানুষ। ভূকম্প জোন বলে পরিচিত রংপুর অঞ্চল মারাত্মক ঝুঁকির মধ্যে থাকলেও সোমবার ভোর জেগে ওঠার আগেই ৭ দশমিক ৮ রিখটার স্কেলের আকস্মিক এ ঝাঁকুনিতে বড় ধরনের বিপর্যয়ের আশঙ্কা থাকলেও কোন ধরনের বিপর্যয় ঘটেনি এবার। অথচ এর আগে এর চেয়ে ঝাঁকুনিতেই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে রংপুরের অনেক পুরনো ভবন। নারায়ণগঞ্জ ॥ নারায়ণগঞ্জে সোমবার ভোর ৫টা-৫ মিনিটের সময় মাত্রারিক্ত ভূমিকম্পনের আতঙ্কে অনেকেই ঘুম থেকে জেগে ওঠে বাড়িঘর ছেড়ে রাস্তায় ও খোলা আকাশের নিচে নেমে আসে। ভূমিকম্পের এবারের ঝাঁকুনি ছিল খুব বেশি। ভূমিকম্প অনেক বেশি মাত্রায় অনুভূত হয়েছে বলে অনেকেই বলছেন। ভূমিকম্পের সময় নারায়ণগঞ্জের পুকুরসহ নদীর পানিতে ঢেউয়ের সৃষ্টি হয়। ঘরের ফ্যান ও আসবাবপত্রও কেঁপে ওঠে। ফরিদপুর ॥ সোমবার ভোরে মাঝারি আকারের ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। এর ফলে জনমনে ব্যাপক আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। ঘুমের মধ্যে ভূমিকম্প হওয়ায় আতঙ্কিত জনগণ হতবিহবল হয়ে পড়েন। কেউ কেউ নেমে আসে রাস্তায়। তবে এ ব্যাপারে তাৎক্ষণিকভাবে ক্ষয়ক্ষতির কোন খবর পাওয়া যায়নি। শহরের ঝিলটুলী মহল্লার কার্তিক রায় বলেন, ভূমিকম্প শুরু হলে বাড়ি ঘর দুলতে শুরু করে।
×