নিজস্ব সংবাদদাতা, আমতলী (বরগুনা), ৩ জানুয়ারি ॥ আমতলী উপজেলার গাজীপুর বন্দরের সরকারী অকৃষি খাস জমি বিত্তবানের পেটে চলে গেছে। অবৈধ জায়গা দখল করে স্থায়ী ইমারত নির্মাণ চলছে। তহসিলদার বাধা দিলেও তাকে লাঞ্ছিত করছে দখলবাজরা। আইন প্রয়োগকারী সংস্থা নীরব ভূমিকা পালন করছে।
জানা গেছে, আমতলীর গাজীপুর বন্দর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বাজার। এখানে সপ্তাহে দু’দিন হাট বসে। বন্দরের অকৃষি জমি রয়েছে ৮ একর। এ তথ্য উপজেলা ভূমি অফিসের। এ জমির কিছু অংশ আধা শতাংশ করে পরিবার প্রতি ভূমি অফিস একসনা বন্দোবস্ত দিয়েছে। সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, বন্দোবস্তকারীরা অনেকেই বিত্তবান। অনেক পরিবার বেনামে-স্বনামে ভূমিহীন সেজে এ জমি লিজ নিয়েছে। অনেক পরিবার পজেসন বিক্রি করে দিয়েছে। সরকারী বিধি অনুসারে একসনা বন্দোবস্তত জমিতে পাকা ইমারত নির্মাণ করতে পারে না। গাজীপুর ২৪ নং মৌজার ১নং খাস খতিয়ানের বসবাসরত গাজীপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মিল্টন কুমার ঠাকুর তার বাসভবনের সম্প্রসারনে নামে পাকা ইমারত নির্মাণ শুরু করে। একাজ বন্ধের জন্য চুনাখালী ইউনিয়ন ভুমি অফিসের তহসিলদার মোঃ আবুল খায়ের নোটিশ দেন। ওই শিক্ষক সেই কাজ বন্ধ না করে নির্মাণ কাজ চালিয়ে যায়। কাজ বন্ধ না করায় তহসিলদার আবুল খায়ের ও খলিলুর রহমান সরাসরি বাধা দিলে তাদের লাঞ্ছিত করে। এ ঘটনা তহসিলদার আবুল খায়ের গাজীপুর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জকে লিখিতভাবে জানিয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেকে জানান, প্রভাবশালীরা আধা শতাংশ জমির লিজ নিয়ে দখল করে আছে ৪-৫ শতাংশ। বন্দরের গরুরহাট সংলগ্ন জায়গা দখল করে বর্তমান ইউপি সদস্য নেয়ামত উলাহ একটি টিনশেট ঘর নির্মাণ করে ২ শতাংশ জমি তোফাজ্জেল মৃধার কাছে ২ লাখ ৫০ হাজার টাকায় বিক্রি করেছে। ক্রেতা তোফাজ্জেল হোসেন ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেন। অভিযোগ রয়েছে এভাবে দু’শতাধিক পরিবারে জমি দখল করে স্থাপনা নির্মাণ করে অবৈধভাবে বসবাস করে আসছে। অবৈধ দখল উচ্ছেদের জন্য গাজীপুর বন্দরের আম্বিয়া বেগম বরগুনা জেলা প্রশাসক ও আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে আবেদন করেছে।
অভিযুক্ত মিল্টন কুমার ঠাকুর বিল্ডিং নির্মাণ করার সত্যতা স্বীকার করে বলেন আমি ইউএনও স্যারের কাছে এ মাসের ২১ ডিসেম্বর কাঁচা রান্না ঘর তৈরি করার আবেদন করেছি। নির্বাহী অফিসার রান্না ঘর তৈরি করার অনুমতি দিয়েছেন কিনা ? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি কোন সদুত্তর দিতে পারেননি। চুনাখালী ভূমি অফিসের তহসিলদার মোঃ খলিলুর রহমান জানান আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে কাজ বন্ধ করে দেই। এতে তারা ক্ষিপ্ত হয়ে আমাদের লাঞ্ছিত করেছে। তহসিলদার খায়ের জানান এ বিষয় মোবাইল ফোনে উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে জানানো হয়েছে। আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ মিজানুর রহমান জানান এ বিষয়টি আমার জানা নেই। জেনে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।