খোকন আহম্মেদ হীরা, বরিশাল ॥ দক্ষিণাঞ্চলের প্রবেশদ্বার বিভাগীয় সদর বরিশালে দীর্ঘ প্রতিক্ষিত একটি বিশ্বমানের আবাসিক হোটেল অতিসম্প্রতি চালু হয়েছে। বরিশাল নগরীর এ হোটেলটি তিন তারকামানের। সে আঙ্গিকে অতিথিদের জন্য সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা হয়েছে। অনানুষ্ঠানিকভাবে ‘হোটল গ্রান্ড পার্ক’ নামের এ আবাসিক হোটেলটি চালু করা হলেও আগামী কয়েকদিনের মধ্যে এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের লক্ষ্যে কাজ করছে কর্তৃপক্ষ। ফলে বরিশালে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ভেনুসহ বিশ্বমানের যে কোন ধরনের খেলাধুলার বড় অন্তরায়টির এবার দূর হতে যাচ্ছে। নগরীর পাশ দিয়ে বহমান কীর্তনখোলা নদীর তীরে বাঁধ রোডের কাছে হোটেল গ্রান্ড পার্কের স্থানটি নির্বাচন করার পেছনেও রয়েছে সে ধরনের দৃষ্টিভঙ্গি। বরিশাল স্টেডিয়ামের কাছে বঙ্গবন্ধু উদ্যানের দক্ষিণ পাশে এ হোটেলটির জানালা দিয়ে অদূরে কীর্তনখোলা নদীর কিছু অংশ আর পেছনের অংশে রাজা বাহাদুর সড়কের পাশের লেকটিও দৃশ্যমান। হোটেল লাগোয়া বিশাল মাপের বঙ্গবন্ধু উদ্যান এ হোটেলের অতিথিদের জন্য বাড়তি পাওনা। প্রকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর বরিশাল নগরীতে এ হোটেলটি নির্মাণসহ এর সামনের লেনটিকেও প্রকৃতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে তৈরি করা হয়েছে। হোটেলের অভ্যর্থনা লাউঞ্জসহ বিভিন্ন সভাকক্ষ ও সম্মেলন কক্ষের দেয়ালেও স্থান পেয়েছে রূপসী বাংলার কবি জীবনানন্দ দাশসহ বরিশালের একাধিক কবির কবিতার নানা ছন্দ। হোটেলটির দেয়ালে দৃশ্যমান জীবনানন্দ দাশের ‘আবার আসিব ফিরে’ কবিতার লাইনগুলো আগত অতিথিদের বাংলার প্রকৃতির সঙ্গে একাকার করে দেয়।
বেসরকারী এনসিসি ব্যাংকের আর্থিক সহায়তায় নগরীর বাঁধ রোডের কাছে প্রায় ৫০ শতক জমির ওপর সদ্য গড়ে ওঠা হোটেল গ্রান্ড পার্কে সুইমিং পুল ও জিমসহ ছোট ও মাঝারি মাপের কনফারেন্স রুম, ব্যাংকোয়েট হল ও একাধিক মিটিং রুম রয়েছে। হোটেলটিতে সর্বমোট ৮৬টি কক্ষে অতিথিদের আবাসন সুবিধা সৃষ্টি করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে ৪৭টি কক্ষ চালু করে অতিথিদের থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। ‘প্রিমিয়ার সিঙ্গেল, প্রিমিয়ার ডিলাক্স কাপেল, সুপিরিয়র টুইন ও পার্ক সুইট নামের এসব কক্ষের ভাড়া ভ্যাটসহ ৩ হাজার ৯শ টাকা থেকে শুরু করে ৬ হাজার টাকা পর্যন্ত নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে এর মধ্যে অতিথিদের সৌজন্যে বুফে প্রাতরাসের ব্যবস্থাও রাখছে হোটেল কর্তৃপক্ষ। পুরো হোটেলে অতিথিদের জন্য রয়েছে বিনামূল্যে ওয়াইফাই ব্যবহারের সুবিধা।
এছাড়া হোটেল গ্রান্ড পার্কে শতাধিক আসনবিশিষ্ট একটি খাবার রেস্টুরেন্টসহ কফি সপ নির্মাণ করা হয়েছে। খাবার রেস্টুরেন্টের পশ্চিম অংশে খোলাস্থানে লেকের ধারে একটি কফি সপ তৈরি করা হয়েছে। যেখানে বসে যে কোন অতিথি একদিকে লেক, অপরদিকে বিশাল বঙ্গবন্ধু উদ্যানের খোলা হাওয়ায় বসে চা বা কফিসহ যে কোন স্নাকস গ্রহণ করতে পারবেন। রেস্টুরেন্টটিতে অতিথিদের জন্য বাংলাদেশী, ভারতীয়, চাইনিজ ও ইউরোপীয় যে কোন পরিবেশনের মতো শেফ ও খানসামা রয়েছেন। পুুরো হেটেলটির ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব পালন করছে দেশের খ্যাতনামা সেবামূলক প্রতিষ্ঠান ‘ডেল্টা হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট সার্ভিসেস লিমিটেড’। প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা অংশীদার আব্দুল আজিজ জানান, তারা হোটেল গ্রান্ড পার্কে বিশ্বমানের সেবা প্রদানের জন্য অঙ্গীকারাবদ্ধ। সেলক্ষ্যে প্রতিটি কর্মীকে প্রশিক্ষণ প্রদান করে তৈরি করা হয়েছে। তিনি আরও জানান, এ হোটেলটি সমগ্র দক্ষিণাঞ্চলে আগত দেশী-বিদেশী পর্যটকদের বিশ্বমানের আবাসন সুবিধা প্রদানের লক্ষ্যে প্রস্তুত করা হয়েছে।
ঢাকা, বাংলাদেশ শুক্রবার ১০ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১
